ডিবি হেফাজতে অমানুষিক নির্যাতনের স্বিকার সাংবাদিক রফিক

সাইকুল আবেদীন, ময়মনসিংহ: খায়রুল আলম রফিক এক জন সৎ ও সাহসী সাংবাদিক। কখনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করেন নি ।তাই বারবার নির্যাতনের স্বিকার হয়েছেন। গত (২৯-১১-২০১৮) ইং তারিখের  অনুমানিক রাত সাড়ে দশটার সময় ডিবি পুলিশের এসআই আকরাম হোসেন ও তার টিম ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিপরীতে নিউ মেডিকেয়ারের সামনে থেকে সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিককে আটক করে এবং এবং গাড়িতে তুলার পর তার চোখ বেদে নিয়ে যায়।
সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিকের অভিযোগ, এস আই আকরাম হোসেন ও এ এসআই জুয়েল সহ ৭/৮ জনে’র একটি’ টিম’ সাদা’ পোশাকে  ধরে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে’ অমানুষিক’ নির্যাতন’ করে এবং ক্রসফায়ারে’র চেষ্টা’ করে’।গত ২২-১২-২০২০ তারিখে  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নজনের মেসেঞ্জারে চোখ বাধা নির্যাতনের ছবি ছড়িয়ে দেন। এমন অভিযোগ করেছেন নির্যাতিত সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক । এমন ঘটনার ন্যায় বিচার চেয়ে ময়মনসিংহের বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন।পরবর্তীতে আদালতের অদেশে পুলিশ সুপারের নির্দেশে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মামলা গ্রহন করেন। যার নং- ৮২ তারিখ ২৫/০১/২০২১।

ছাত্রলীগে’র নেতা সাগর চৌধুরী বলেন, সাংবাদিক’ খায়রুল’ আলম’ রফিক’ একটি’ মিটিং করে’ নিউ’ মেডিকেয়ারে’র সামনে’ আমরা’ অবস্থান কালীন এসআই আকরাম হোসেন আমাদের সামনে থেকে তাকে ধরে নিয়ে যায়। ময়মনসিংহ শহরের (১৪নং ওয়ার্ড) আওয়ামীলীগে’র সভাপতি আলহাজ্ব’ শাহ’ জালাল’ হৃদয়’ বলেন, সাংবাদিক রফিক সহ আমরা কয়েকজন ওয়ার্ড কাউন্সিল’র দুলালে’র অফিসে একটা মিটিং এ ছিলাম। মিটিং শেষে বের হয়ে আমার অফিসে’র সামনে আসার পরক্ষনেই তাকে ধরে নিয়ে যায়।

পরে বিভিন্ন মাধ্যমে’ জানতে’ পারি’ এস আই আকরাম হোসেন ইদ্রিস খানের মামলায় তাকে আটক করেন। সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক কে তিন দিন ডিবি হেফাজতে আটকে রাখে। প্রথমে ক্রসফায়ারে’র চেষ্টা পর ডিবি কার্যালয়ে শারীরিক নির্যাতন করে,চোখ বাধা অবস্থায় ছবি তুলেন এবং বিবস্ত্র’ করে ভিডিও ধারন’ করে এই দুই পুলিশ’ কর্মকর্তা’ সহ আরো অনেকে’ই। আটকে’র সময়’ এসআই মো: আলাউদ্দিনও ছিলেন’।

এদিকে বিজ্ঞ আদালত মামলার বাদীকে সিভিল সার্জন কর্তৃক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে একটি প্রতিবেদন ২৪ ঘন্টার মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন । গত ২৫ জানুয়ারী মামলা হলেও এখনো পর্যন্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফারুক হোসেন আসামিদের কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহারের কোনো পত্র কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করেনি এবং আসামিদের গ্রেপ্তারের কোন চেষ্টাও করেনি। তাই সঠিক তদন্ত তার কাছে পাওয়া টা কঠিন বলে মনে করেন মানবাধিকার কর্মী নুর খান।

একটি গোপন সূত্রে জানা গেছে, আসামিদের রক্ষা করতে তদন্তকারী কর্মকর্তা ফারুক হোসেন বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন। আসামিসহ তাদের অনুসারীদের সাথে গোপনে যোগাযোগ করছেন। এবিষয়ে ড. মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী খান জানান, সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিকের সাথে আমার ভুল বোঝাবুঝি ছিল। আব্দুল কাইয়ুম নামের একজন ব্যক্তি আমার ছবির সাথে অন্য নারীদের ছবি যুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রফিক নামে প্রকাশ করেছে। আমি যখন বুঝতে পারি রফিক এগুলোর সাথে জড়িত নয় তখন মামলা আপসনামা দিয়ে দেই।

পরবর্তীতে কাইয়ুমের নামে একটি আইসিটি মামলা দায়ের করি। সাংবাদিক রফিক এসআই আকরাম কর্তৃক নির্যাতিত হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কখনো বলিনি তাকে নির্যাতন করতে। এটা হয়তো প্রতিহিংসা বশত করেছে, এটা দুঃখজনক। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক ফারুক হোসেন জানান, আসামিদের সাথে যোগাযোগ নেই তবে বাদীর সাথে আমার দুই কথা হয়েছে।

মামলার বাদী খায়রুল আলম রফিক জানান, আমার মামলা তদন্তধীন আছে এ নিয়ে কোন কথা বলতে চাই না, আশা করি তদন্তকারী কর্মকর্তা সাহেব সততার সাথে তদন্তের কাজ সম্পূর্ণ করে বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন জমা দিবেন। তিনি আরও বলেন, জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্র সচিব বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করেছি এবং আমাকে হয়রানি না করতে উচ্চ আদালতে আমার আইনজীবি সাহেবের মাধ্যমে একটি রীড দাখিল করেছি।