শেরপুরে একাধিক দলিল জালিয়াতির গোপন তথ্য ফাঁস

মোঃজিয়াউল হক, শেরপুর প্রতিনিধি : চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেটের ড্রাইভার আব্দুল বাতেন কর্তৃক একাধিক দলিল জালিয়াতির গোপন তথ্য ফাঁস হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আব্দুল বাতেন শেরপুরে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেটের ড্রাইভার হওয়ার সুবাধে পেশী শক্তি ও অবৈধ ক্ষমতা খাটিয়ে একাধিক ভুয়া দলিল সম্পাদন করে ১একর ৫৩ শতাংশ জমি ভোগ দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে অনুসন্ধান, জেলা রেজিস্টার অফিস, শেরপুর এবং জেলা প্রশাসন কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, জেলা প্রশাসক বরাবর ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের হলদীগ্রাম এলাকার জৈনক আমিনুল ইসলাম আমিন ও আজিজুর রহমান গত ১৩/৬/২০২৩ইং তারিখে একই এলাকার মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে এবং চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেটের ড্রাইভার আব্দুল বাতেন কর্তৃক ভুয়া দুটি দলিল সম্পাদনের বিরুদ্ধে পৃথক পৃথক দুটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক মহোদয় ৭/১/১৯৬৪ইং সালের ৬৪ নং দলিল এবং ২০/২/১৯৬২ইং সালের ১৪৭৪ নং দলিল দুটি সঠিক কিনা যাচায়ান্তে জেলা রেজিস্টার শেরপুরকে ৭কর্মদিবসে সরেজমিন তদন্তপূর্বক মতামত সহ প্রতিবেদন দাখিল করতে আদেশ প্রদান করেন।

 উক্ত আদেশ প্রাপ্তির পর জেলা রেজিস্টার বরাবর আব্দুল বাতেন কর্তৃক দাখিলকৃত ৭/১/১৯৬৪ইং সালের ৬৪নং দলিলের সহিমহুরি নকল, যাহা অফিস কর্তৃক প্রদানের তারিখ দেখানো হয় ১১/৯/২০১১ইং এবং ২০/২/১৯৬২ইং সালের ১৪৭৪নং দলিলের সহিমহুরি নকল, যাহা অফিস কর্তৃক প্রদানের তারিখ দেখানো হয় ১০/৪/২০০৭ইং।  উক্ত নকলের সহিমহুরি দুটি যাচাই করে উক্ত তারিখে প্রদানকৃত সহিমহুরি নকল দুটির তালাশ নকল দরখাস্তের রেজিস্টার যাচায়ান্তে দেখা যায় যে, উক্ত তারিখদ্বয়ে ১৪৭৪ ও ৬৪নং দলিলের কোন নকল সরবরাহ করা হয়নি।

সেইসাথে উল্লেখ করা হয় যে, দলিল দুটি সম্পাদনের তারিখদ্বয়ে থামবহি যাচায়ান্তে দেখা যায় যে, ১৪৭৪নং দলিল এর দাতা আব্দুল কুদ্দুছ এবং নবাব আলী। বিপরীতে আব্দুল বাতেন উক্ত দাতার স্থানে  দুর্ভীদ কোচ ও রাজমহন কোচ এবং ৬৪ নং দলিলে প্রকৃত দাতা আফছর আলীর স্থলে বিয়াবর হাজং দেখিয়েছে। সুক্ষ পরিক্ষা নিরীক্ষা ও যাচায়ান্তে  গত ১৪/৯/২০২৩ইং তারিখে জেলা রেজিস্টার কৃষিবিদ মোঃ নুর নেওয়াজ জেলা প্রশাসক বরাবর প্রদত্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন যে,চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেটের ড্রাইভার আব্দুল বাতেন কর্তৃক সরবরাহকৃত ৬৪ ও ১৪৭৪নং দলিল দুটির বিরুদ্ধে জৈনক আমিনুল ইসলাম আমিন ও আজিজুর রহমানের আনিত অভিযোগ দুটি সঠিক। যাহার স্মারক নং-৫২৯,তারিখ-১৪/৬/২০২৩ইং।

জেলা রেজিস্টার কর্তৃক জেলা প্রশাসক বরাবর উক্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর জেলা প্রশাসক মহোদয় হলদীগ্রাম এলাকার বাসিন্দা মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে আব্দুল বাতেনের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রাথমিক ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এবং তার কর্তৃক রুজুকৃত হয়রানিমুলক মামলায় সরকারি স্বার্থ জড়িত থাকায় তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ঝিনাইগাতীকে আদেশ প্রদান করেন।