ময়মনসিংহ-৭ আসনে মেয়র আনিছ কেন যোগ্যতায় দাবিদার ?

আরিফ রববানী, ময়মনসিংহ: আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫২ ময়মনসিংহ -৭ ত্রিশাল আসনে  আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে   ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামী যুব লীগের সাবেক সভাপতি,সাবেক ছাত্রনেতা ত্রিশাল পৌরসভার তিনবারের নির্বাচিত জনপ্রিয় মেয়র আলহাজ্ব এবিএম আনিসুজ্জামান (আনিছ) কেন যোগ্যতায় দাবিদার।

সম্প্রতি তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে ডিবিসি নিউজ ইলেকশন এক্সপ্রেসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে  তিনি দলের মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়ে ময়মনসিংহ-৭ ত্রিশাল আসনের নিজের প্রার্থীতা ঘোষণা করেন।ত্রিশালের জনপ্রিয় এই রাজনৈতিক নেতা মনোনয়ন চাইবেন এমন সংবাদে উপজেলাব্যাপী ভোটারদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে।

 মেয়র আনিছ ১৯৯৮ সালের ৫ মে ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ত্রিশাল পৌরসভায় নাগরিক সেবার শপথ নিয়ে ২০১১ সালে মেয়র নির্বাচিত হন। অত্যন্ত সৌভাগ্যবান এই জনপ্রতিনিধি ৬ মাসের মাথায় অক্লান্ত প্রচেষ্টায় পৌরসভাকে ‘ক’ শ্রেণিতে উন্নীত করেন। তার কর্মগুণে আজ তিনি জায়গা করে নিয়েছেন পৌরবাসীর অন্তরে। রাজনৈতিক জীবনে মেয়র আলহাজ্ব এ বি এম আনিছুজ্জামান (আনিছ) ১৯৮৬ সালে ত্রিশাল উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়কের (১) দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্রাবস্থায় স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন। ১৯৮৩ সালে ছাত্রদের সংগঠিত করে ইউএনও অফিস ভাঙচুর করেন এবং কাঁধে পড়ে মামলার বোঝা। ১৯৮৫, ৮৬, ৮৭ , ৯০ সালে ধারাবাহিকভাবে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অগ্রনায়কের ভূমিকায় ছিলেন রাজপথে।

উদ্দীপ্ত যুবক ১৯৯৪ সালে ত্রিশাল উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯৪-২০১৫ সাল পর্যন্ত দুইবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তার দক্ষ নেতৃত্বে ত্রিশাল উপজেলায় যুবলীগ একটি শক্তিশালী সংগঠনে রূপ নেয়। ২০০১, ২০০৩, ২০০৫ সালে জোট সরকারবিরোধী আন্দোলনে ত্রিশাল উপজেলা যুবলীগ ছিল অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকায়। ফলশ্রুতিতে একের পর এক মামলার শিকার হন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মানিত সদস্য এ বি এম আনিছুজ্জামান (আনিছ) গৌরীপুর সরকারি কলেজ থেকে বিএসসি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন।

৫৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে পৌর শহরে নাগরিক সেবা প্রদানে সর্বদাই ব্যস্ত থাকেন  পৌর মেয়র আনিছ। ৩৪ জন চুক্তিভিত্তিক পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োজিত আছে পৌরশহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে। পৌরসভায় রাস্তা, গলিকে নিরাপত্তার নজরদারিতে রাখতে বসানো হয়েছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাতে নিয়োজিত আছে নিরাপত্তা প্রহরী।

ওয়ার্ডভিত্তিক বিভিন্ন সমস্যার দ্রুত সমাধানে সাধারণ নাগরিকদের নিয়ে ওয়ার্ড পর্যায়ে গঠন করা হয়েছে নাগরিক কমিটি যার তদারকিতে আছেন জনগণের সেবক মেয়র নিজেই। ৩৪ কিমি বিদ্যুতায়নে সড়ক বাতিগুলো পৌরশহরের প্রতিটি সড়ক, উপসড়ক, গলিকে আলোকিত করে সারারাত।

২০১১ সাল থেকে পর পর তিনবার নির্বাচিত এ জনপ্রতিনিধি ত্রিশাল পৌরসভার জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। অত্যধিক কর্মস্পৃহায় দাপিয়ে বেরিয়েছেন দপ্তর থেকে দপ্তরে, তুলে ধরেছেন জনগণের দুর্ভোগ। ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছেন ৫২টি রাস্তা যার মধ্যে ৪০টি পাকা, ২০টি কাঁচা। ২০১১ সালের আগে ছিল না কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা। তার অক্লান্ত পরিশ্রমে সমগ্র পৌরসভায় সম্পন্ন হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকার আর সিসি ড্রেন এবং ৮ কিমি ফুটপাত। পাল্টে গেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় সংযুক্ত সড়কটির চেহারা। ২.১৫ কিমি দীর্ঘ এ সড়কটি প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬ মিটার প্রস্থে নির্মিত, দুপাশে শোভাবর্ধন বৃক্ষে সুসজ্জিত যা ৬নং ত্রিশাল ইউনিয়নের পশ্চিমাংশ মানুষকে দিচ্ছে বাড়তি সুবিধা। ২ কিমি দীর্ঘ কাকচর সড়কটিও একই আদলে নির্মিত। বাড়তি সুবিধা হিসাবে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ সড়কটি কমিয়ে দিয়েছে উপজেলার কানিহারী ইউনিয়নের যোগাযোগের দূরত্বও। তাছাড়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড ত্রিশাল নামাপাড়া সড়কটিও ফুলবাড়িয়া উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগে এনেছে সহজ মাত্রা। শতভাগ স্যানিটেশনের আওতায় ত্রিশাল পৌরসভা ইতোমধ্যে পৌঁছেছে। পানীয়জলের সরবরাহ বাড়াতে ২টি গভীর নলকূপ থেকে হয়েছে ৪টি এবং ১ হাজার ২০০ হোল্ডিং এ দেয়া হচ্ছে এ সুবিধা। ৬০০ বাড়িতে দেয়া হয়েছে তারা টিউবয়েল। পৌরসভার এসব উন্নয়নে উপজেলাব্যাপী তার জনপ্রিয়তা আরো বৃদ্ধি পাওয়ায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাকে এমপি হিসাবে পেতে  সর্বস্তরের জনগণ তাকে জোড়ালো সমর্থন দিয়ো যাচ্ছেন।

মেয়র আলহাজ্ব এবিএম আনিসুজ্জামান আনিছ বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার সুযোগ্য উত্তরাধিকার গনতন্ত্রের মানসকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন, স্মাট বাংলাদেশ বিনির্মান ও বাস্তবায়নের লক্ষে এবং ত্রিশালের সর্বস্তরের জনগণকে একটি আধুনিক, উন্নত ত্রিশাল উপহার দিতে আমার এই প্রার্থীতা ঘোষণা।

তিনি আরও বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ত্রিশাল উপজেলার এই আসনে যাকেই মনোনয়ন দেওয়া হোক না কেন আমি এবং আমরা সকলেই একত্রিত হয়ে মানুষের দোরগোড়ায় গিয়ে ভোট সংগ্রহ করে সেই প্রার্থীকে বিজয়ী করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ত্রিশাল আসনটি উপহার দিবো ইনশাল্লাহ।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বিগত তিনবার একাধারে পৌরসভার নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে জনগণের ভালবাসায় বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছি।জনগণের আমার উপর আস্থা রয়েছে। আমিও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উপর আস্থাশীল। সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পেলে নির্বাচন করবো বলে ময়মনসিংহ-৭ত্রিশাল আসনের নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে জনসংযোগ করেছি। পৌর নির্বাচনেও মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে  চেয়েছিলাম। তবে দলের নেতাকর্মীদের ভালোবাসা, সমর্থন এবং ত্রিশাল পৌরসভার আপাময় মানুষের সমর্থন ছিলো আমার প্রতি। তাই সাধারন ভোটার ও মানুষের জোড়ালো দাবীর প্রেক্ষিতে আমি নির্বাচন করতে বাধ্য হয়েছিলাম,ভোটাররাও আমাকেই সমর্থন দিয়েছে। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে এই আসনের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আমাকে সাংগঠনিক সফর এবং জনসংযোগের জন্য তারা নিজেরাই ১২টি ইউনিয়নেই কর্মসূচি নির্ধারণ করে আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে যাচ্ছেন। তাদের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে আমি নিয়মিত বিভিন্ন ইউনিয়নে  জনসংযোগ  করে যাচ্ছি। উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের তৃনমুল পর্যায়ের ত্যাগী, পরিক্ষিত, দুর্দিনের কর্মী ও নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় অব্যাহত থাকবে। ত্রিশালের জনসাধারণের সেবা করার জন্য এবং একটি উন্নত মডেল ত্রিশাল গড়ে তুলতেই আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে মনোনয়ন প্রত্যাশী।

এ সময় তিনি  জানান, ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামীলীগকে আরও গতিশীল করার জন্য পর্যায়ক্রমে উপজেলার সবটি ইউনিয়নেই সাংগঠনিক সফর করবেন তিনি ।