ময়মনসিংহে পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শকের বিরুদ্ধে শিক্ষিকার অভিযোগ

বিশেষ প্রতিনিধি : ময়মনসিংহে পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক (নি:) প্রদীপ কুমার গোস্বামীর বিরুদ্ধে শিক্ষিকা ও বিজিবিতে কর্মরত এক দম্পতিকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে । প্রদীপ কুমার গোস্বামী একটি মামলার বাদীর যোগসাজশে জোড়পূর্বক দম্পতিকে মামলায় জড়িত করতে আকরাম হোসেন চৌধুরী নামের এক আসামিকে বেধড়ক মারধর করে তাদেরকে মামলায় জড়িত মর্মে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দও করেছে । মামলার বাদীসহ বিবাদীদের যোগসাজশে অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে দম্পতিসহ তাদের পরিবারের লোকজনকে প্রকাশ্যে আক্রমন করে মারধর এমনকি খুন জখমেরও হুমকি দেয়া হয় । এসময় পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক (নি:) প্রদীপ কুমার গোস্বামী আশেপাশে ছিল বলে অভিযোগ ।

এমন অভিযোগ এনে পুলিশের মহা – পুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন, ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার অলহরি বাদামিয়ার বাসিন্দা ১৮১ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফেরোজা বেগম সুমি (৩৫)। তিনি পুলিশ পরিদর্শক ও বিবাদীদের হুমকি ধমকির কারণে বাড়ি থেকে বের হয়ে কর্মস্থলে বা কোন স্থানে যেতে না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলেও অভিযোগ করেন আইজিপি বরাবর ।

আফেরোজা বেগমের লিখিত অভিযোগে প্রকাশ, ত্রিশাল থানার মামলা নং-১০ , তাং- ০৭/০৯/২০১৮ ধারা ৩০২/৩৪ পেনাল কোডের আসামী বা স্বামী না থাকা স্বত্বেও উক্ত ঘটনায় মো. আক্রাম হোসেন চৌধুরীকে , পিতা মৃত আলাল উদ্দিন চৌধুরী সাং অলহরি বাদামিয়া ত্রিশাল ২৭/৪/২১ তারিখে পিবিআই ময়মনসিংহ এর পুলিশ পরিদর্শক (নি:) প্রদীপ কুমার গোস্বামী গ্রেফতার করে এবং মামলার বাদী ছফির উদ্দিনের যোগসাজশে আমাকে (আফরোজা বেগম) আমার স্বামী বিজিবিতে কর্মরত আব্দুর কাদের জিলানীসহ পিতা. মো: আক্তার উদ্দিন মুন্সী আমাকে ঐ মামলার ঘটনায় জড়িত করার জন্য আকরাম হোসেনকে বেধড়ক মারধর করে ।

আমি ও আমার স্বামী মামলায় জড়িত মর্মে আক্রামের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করলেও পরবর্তীতে আক্রাম তার দেয়া জবানবন্দি বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে প্রত্যাহার করে নেয়ার পরও মামলার বাদীসহ মামলার ঘটনায় সম্পৃক্ত আপরাপর আসামিরা আমাদের রাস্তাঘাটে ও প্রায় সময় বাড়ি সংলগ্ন এসে বিভিন্নভাবে অন্যায় অত্যাচার ও হয়রানিসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে । এমনকি মামলার ঘটনার বিষয়ে আমি ও আমার স্বামী স্বীকার না করলে যে কোন সময় আমাকে ও আমার স্বামীকেসহ পরিবারের কোন সদস্যদের একা কোন স্থানে পাইলে খুন গুমসহ বড় ধরনের ক্ষতি সাধন করবে মর্মে প্রকাশ্যে হুমকি ধমকি অব্যাহতপূর্বক গত ১ অক্টোবর শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর বেলা অনুমান আড়াইটার সময় মামলার বাদী ছফির উদ্দিনসহ বিবাদী (১) জসিম উদ্দিন(৩০), পিতা আবু বক্কর সিদ্দিক (২) খোকন মেম্বার (৩) কামরুল ইসলাম (৪) বাবুল মিয়া (৫) কবির ওরফে কবির জেলে (৬) আশরাফুল ইসলাম আশু (২৮)সহ আরো ২৫/২৬ জন বিবাদী দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে আমাকে ও আমার স্বামী আব্দুল কাদের জিলানী এবং ভাসুর মো: নওশের আলীকে ত্রিশাল থানাধীন অলহরি বাদামিয়া পেতরার ঘাট সাকিনস্থ জনৈক সোহরাব আলীর দোকানের সামনে পেয়ে একযোগে আক্রমণ করে এবং আমাদের মারধর করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে বেদনা দায়ক নিলা ফুলা জখম করার পাশাপাশি খুন গুম করার হুমকি ধমকি দিয়ে চলে যায় ।

এসময় পিবিআই এর পুলিশ পরিদর্শক প্রদীপ কুমার গোস্বামী ঘটনার আশে পাশে থাকার পরও বিবাদীরা এহন কর্মকান্ড করে এবং বিবাদীদের হুমকি ধমকির কারণে আমরা বাড়ি থেকে বের হয়ে কর্মস্থলে বা কোন স্থানে যেতে না পেয়ে মানবেতর জবিন যাপন করছেন ।
প্রতিকার চেয়ে সার্বিক নিরাপত্তা এবং মামলার ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করতে আইজিপি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর আর্জি জানান আফরোজা বেগম সুমি ।

ময়মনসিংহ পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক প্রদীপ কুমার গোস্বামী জানান, একদম মিথ্যা কথা, আমি তাদেরকে কোন হয়রানি করিনি,তারা মামলা থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন। ১৬৪ ধারার জবানবন্দি প্রত্যাহারের কোনো কাগজপত্র বিষয়ে আমি অবগত নই। তিনি বলেন, আমাকে হয়রানি করতে এমন অভিযোগ দায়ের করেছেন।