ষ্টাফ রিপোর্টারঃ ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ১২নং ভাবখালী ইউনিয়নে ভাবখালী কচুয়ার পাড় দাখিল মাদ্রাসার নামে ৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ। কথা ছিলো মাদ্রসার বাউন্ডারি নির্মাণ ও বারান্দায় সংস্কার কাজ করা হবে। ২০২১-২২অর্থ বছরে প্রকল্পটি জেলা পরিষদ থেকে বরাদ্ধ দেওয়া হলেও কাজ কবে শুরু হলো কেউ জানে না,বাস্তবেও কোন বাউন্ডারী নেই,তবে হঠাৎ মাদ্রাসা ভবনে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সাইনবোর্ড/ মোড়ক লাগানো দেখে এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওই মাদ্রাসার অভিভাবকগণ ও স্থানীয় রাজনৈতিক,সামাজিক, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা।
ভাবখালী ইউনিয়নের কচুয়ার পাড় দাখিল মাদ্রাসার বাউন্ডারি নির্মাণের জন্য রাজস্ব শাখা হতে প্রকল্পের অধিনে ৪ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। গত প্রায় ৩ মাস আগে এর টেন্ডারের সিডিউল মোতাবেক আজিজুর রহমান নামে একজন ঠিকাদার এই কাজ পায়।তবে এ পর্যন্ত প্রায় আড়াই মাস অতিবাহিত হলেও প্রকল্পের কোন দৃশ্যমান কাজ হয়নি। গত ২৯শে জুন এই প্রকল্পের বাস্তবায়নের একটি উন্মোচিত মোড়ক মাদ্রাসার পুরাতন একটি ভবনে লাগানো দেখে অভিভাবক ও স্থানীয় গণ্যমান্যরা অবাক হন। পরে স্থানীয় লোকজন বিক্ষোভে মেতে উঠলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে লাগানো ফলকটি মোস্তাক নামক একজন মিস্ত্রি দিয়ে তুলে ফেলেন সুপার। স্থানীয়দের মতে- মাদ্রাসায় কোন কাজ হয়নি, বাস্তবায়নের এই ফলকটি লাগানো যদি সঠিক হতো,দুর্ণীতির ইচ্ছা না থাকলে ফলকটি গত তারিখে প্রচারের পর হঠাৎ কেন খুলে ফেলা হলো, আমরা এর সঠিক তদন্ত চাই।
স্থানীয় আমিনুল ইসলাম, এ প্রতিনিধিকে জানান, প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করা হয়েছে কিনা জানিনা। তাহলে কিভাবে বাস্তবায়নের ফলক লাগানো হলো জানতে চান তিনি।
ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জুয়েল মিয়া তার বক্তব্যে কাজ না করে কিভাবে বাস্তবায়ন দেখনো হলো,এই বিষয়টির তদন্ত দাবী করে।
স্থানীয় আতিকুল ইসলাম,পাষাণ আলী,সাইফুল ইসলামসহ কয়েকজন জানান- মাদ্রসায় মাঠের একটা গাছ কেটে সকলের অগোচরে দপ্তরী সিরাজুল ইসলাম কে সাথে নিয়ে নিজ ঘরের ফার্ণিচার তৈরী করে সুপার আতাহার আলী।পরবর্তীতে সাধারন সভায় স্বীকার করে করে আংশিক কিছু কাঠ ফিরিয়ে দিয়েছেন বাকীগুলো এখনো ফিরিয়ে দেয় নি বলে জানান তারা।
রফিকুল ইসলাম জানায়- প্রতিবছর সুপার সরকারের বরাদ্ধকৃত পাঠ্য বই কেজি ধরে বিক্রি করে।সুপারের দুর্ণীতি আর অনিয়মে মাদ্রাসা এখন অচলাবস্থা। বাউন্ডারি নির্মাণের বরাদ্দ সুপার ও প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা আত্মসাৎ করার পায়তারায় কাজ না করেই বাস্তবায়ন দেখাতে চেয়েছিলেন বলেও দাবী করেন তিনিসহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গরা।
মাদ্রসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইউছুফ আব্দুল্লাহ আল মামুন সেলিম জানান-মাদ্রাসার বাউন্ডারি নির্মাণের জন্য জেলা পরিষদ ৪লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। সে কাজের টেন্ডার হয়েছে প্রায় ৩মাস পুর্বে,তবে জায়গা নিয়ে সমস্যা থাকায় কাজ ধরতে পারেনি ঠিকাদার,যেহেতু কাজ করা হয়নি তাহলে এখানে দুর্ণীতির প্রশ্ন আসেনা,তবে এলাকার সবাই মিলে জায়গা সংক্রান্ত সমস্যা নিরসন করে দিলে কাজ ধরা হবে। বাস্তবায়নের ফলক সম্পর্কে তিনি অবগত নয় বলে জানান। তবে দাতা আমিনুল ইসলাম জানায়-মাদ্রাসার জায়গায় মাদ্রাসার বাউন্ডারি হবে তাতে কারো কোন ধরনের আপত্তি নেই। তাদের দাবী মাদ্রসার জায়গা নিয়ে কোন সমস্যা নেই।
প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলক উম্মোচন সম্পর্কে জানতে চাইলে মাদ্রাসা সুপার আতাহার আলী জানান- সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ার আমাকে লাগাতে বলেছিলো বলে লাগানো হয়েছিলো,পরে এটা নিয়ে এলাকার কিছু লোক বিক্ষোভ করলে আবারো ইঞ্জিনিয়ারের পরামর্শে খুলে ফেলা হয়েছে। পরে মুঠোফোনে ইঞ্জিনিয়ারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি অবশ্য প্রথমে সুপারকে দায়ী করেন, পরে আরেক প্রশ্ন করলে রং নাম্বার বলে কল কেটে দেন।