স্বাস্থ্য কথাঃ গরমের আরাম হিসাবে আমরা ঠান্ডাকে মানি। এই গরমে আমাদের শরীরের ক্লান্তি আর পিপাসা মেটাতে আমরা সাধারণত ঠান্ডা পানি পান করে থাকি। আর আমরা যে ঠান্ডা পানি পান করি তা মূলত ফ্রিজের ব্যবহারে পেয়ে থাকি। কিন্তু আমরা গরমে বাইরে থেকে এসেই ফ্রিজের ভেতর রাখা ঠান্ডা পানি বের করে ঢক ঢক করে পান করে ফেলি। অথচ এর কুফল সম্পর্কে আমরা জানি না।এখন গ্রীষ্মকাল সূর্যের তাপ যথেষ্ট। পানির পানের চাহিদা অন্য মৌসুমের চেয়ে বেশী। প্রচন্ড গরমে একটু ঠান্ডা পানি পান করাটাকে স্বস্তি ও তৃপ্তিদায়ক মনে করে থাকে আমরা। অনেকেরই মনে করেন, গরমের দিনে ঠান্ডা পানি পান করে গরম থেকে মুক্ত হওয়া যায়। শরীরও ঠান্ডা হয়। অথচ বিষয়টা হয় উল্টো। তবে ঠান্ডা পানি শরীরের উপকার নয়, বরং অপকারই করে।
আমরা বা আপনারা এমনটা কখনই চাই না যেমনটা ঠান্ডা পানি পান করার পর আমাদের অজান্তেই শরীরকে প্রভাবিত করে। ১৯৮৮ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, ঠান্ডা পানি পান করায় জন্য মিউকাস আরও ঘন হয়ে যায় এবং শ্বাসনালির মধ্য দিয়ে যেতে আরও বেশি অসুবিধা হয়। যদি সর্দি বা ফ্লুতে চিকিৎসা করার সময় ঠান্ডা পানি পান করা হয়, তাহলে শরীরের ভেতরের প্রবাহকে আরও খারাপ করে তোলে। যা আসলে যেকোনো মানুষের স্বাস্থ্যের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করতে পারে।
গবেষণায় আরো বলা হয়েছে যে, ঠান্ডা পানি পান করার কারণে পেটের পেশিকে সংকুচিত করে , ফলে খাওয়ার পরে খাবার হজম করা কঠিন হয়ে যায়।আর ঠান্ডা হবার পর শরীরে ভেতরে অতি শীতলতায় সৃষ্টি হয় নানা বিপত্তি। যেমন:মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়ে,খাদ্যনালি সংকুচিত করে,হার্টের সমস্যা,জ্বর হতে পারে,পানির চাহিদা পূরণ হয় না,টনসিল ফুলে যাওয়া,হজমের সমস্যা হয় ,ব্যায়ামের পরে ঠান্ডা পানি ক্ষতিকর,দাঁতের ক্ষতি হয়,গর্ভপাতের সম্ভাবনা।
সাধারণ পানিতে স্বাভাবিক অবস্থায় বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদানে পূর্ণ থাকে; যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। কিন্তু ঠান্ডা পানিতে এসব খনিজ উপাদানের কার্যকারিতা কমে যায়। ফলে পানি থেকে শরীরের যে খনিজের চাহিদা পূরণ হয়, সেটা অপূর্ণই থেকে যায়।তাই এই গরমে ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা পানি পান না করে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি পান করা উত্তম। শরীরে শীতলতার জন্য ঠান্ডা পানি নয়, স্বাভাবিক পানি পান করে হজমে সহায়তা, রক্তসঞ্চালনে সামগ্রিকভাবে আপনার শরীরকে বিষক্রিয়া থেকে দ্রুত মুক্তি দিতে পারে।
খাদ্য, পথ্য ও আকুপ্রেসার বিশেষজ্ঞ।