স্মৃতিতে অমলিন মরহুম শামসুল হুদা মাস্টার

ত্রিশাল প্রতিদিন ডেস্ক:: মানুষ কাকে ভুলতে পারে না, আপনজনকেই ভোলা যায় না। প্রতিনিয়ত জীবনের কর্মে নিত্য আয়োজনে হানা দেন সেই মানুষগুলোই যারা ছিলেন পাথেয়। তেমন পাথেয় হন আমাদের অভিবাবক, পিতা-মাতা এবং শিক্ষকরা। বাবা-মায়ের পড়েই আমরা শিক্ষকদের স্থান দিয়ে আসছি বরাবর। একজন আদর্শ শিক্ষক কখনো মনের গহীন থেকে মুছে যান না।

একজন আদর্শ শিক্ষককে এক বাক্যে সংজ্ঞায়িত করা খুবই কঠিন। তবে সাধারণভাবে আদর্শ শিক্ষক হলো উনিই যাকে তার শিক্ষার্থীরা চিরকাল স্মরণ করে। একজন আদর্শ শিক্ষকের স্নেহ, আদর, শাসন ছাত্র-ছাত্রীদেরকে একজন আদর্শ মানুষ হতে অনুপ্রাণিত করে। কারণ শিক্ষার আলোই হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী আলো। বাস্তবতার সম্মিলন ঘটিয়ে প্রকৃত জ্ঞান প্রদান করাই হচ্ছে আদর্শ শিক্ষকের কাজ।

ত্রিশাল নজরুল একাডেমীর শরীরচর্চা শিক্ষক মরহুম শামসুল হুদা ছিলেন তেমনি একজন আদর্শ শিক্ষক। তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ আলাদা প্রকৃতির একজন মানুষ। তিনি যতটা না একজন শিক্ষক ছিলেন, তার চেয়ে বেশি ছিলেন একজন পিতা। সচরাচর যা হয়, আমরা বেড়ে ওঠার সময়ে আমাদের বাবা-মায়েরা শিক্ষা বিষয়ে ততটা সচেতন ছিলেন না। সেই সচেতন অভিবাবক হয়ে এসেছিলেন শামসুল হুদা স্যার। পিতার স্নেহ, শিক্ষকের শাসন, আর একজন আদর্শ মানুষের শিক্ষা দিয়ে আমাদের বড় করেছেন তিনি।

স্নেহ ভালোবাসার পাশাপাশি শাসনের ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন কঠোর। সবাই তাকে ভীষণ ভয় পেত। স্কুল কামাই একদম মেনে নিতেন না। শতশত শিক্ষার্থীকে আলোর দিশা দেখানোর পাশাপাশি তিনি তার তিন ছেলে ও ছয় মেয়েকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন।

ত্রিশাল পৌরশহরের দরিরামপুর গ্রামের স্বনামধন্য পরিবার ছাবেদ আলী মন্ডল এর দ্বিতীয় ছেলে সামসুল হুদা মাস্টার ৫৭ বছর বয়সে কিডনি জনিত সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে ১৪ নভেম্বর ১৯৯৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

স্যার চলে গেছেন আজ ২৭ বছর। কিন্তু ত্রিশালের মানুষের মনে তিনি এখনো অমলিন হয়ে আছেন। ওপারে ভালো থাকবেন স্যার। আদর্শ পিতা হয়ে আমাদের মনে রইবেন আপনি। রাব্বির হাম-হুমা কামা রাব্বিয়ানী সগীরা। তথ্যসূত্র: প্রাণের ত্রিশাল।