ময়মনসিংহে বাঁধ ভেঙ্গে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত


মো: রাসেল হোসেন, ময়মনসিংহপাহাড়ী ঢল ও বন্যায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। বুধবার দুপুরে ময়মনসিংহ সদরের জেলখানার চর এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিম তীরে প্রবল স্রোতের তোড়ের আকস্মিক বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়ে গেছে বিনপাড়া ও কোনাপাড়াসহ প্রায় দুই কিলোমিটার জুড়ে বেশ কয়েকটি গ্রাম।

বাঁধের প্রায় ৩০ মিটার অংশ ভেঙে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করায় তলিয়ে যাচ্ছে সদর উপজেলার চর জেলাখানা, চর গোবিন্দপুর, দূর্গাপুর, বারেরচর, চরসিরতা ও চরহাসাদিয়াসহ জনবসতিপূর্ণ বিস্তীর্ণ এলাকার কয়েক’শ ঘরবাড়ি, আমন ধানের বীজতলা ও কয়েকটি মাছের খামার। দ্রুত বাঁধ মেরামত করা না হলে জলাবদ্ধতা স্থায়ী রূপ নিবে বলে ধারণা স্থানীয় বাসিন্দাদের। এদিকে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক একেএম গালিভ খাঁন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম।

বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বিভিন্ন স্থানে গর্ত থেকে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারণা জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিম তীরে প্রায় ২৩ কিলোমিটার জুড়ে ২০০১ সালে নির্মাণ করা হয় বাঁধটি। এরপর বড় ধরনের বন্যা বা পানির চাপ না থাকায় ওই বাঁধে আর সংস্কার করা হয়নি। প্রতিবছরই ডেঞ্জার পয়েন্টগুলো কিছু না কিছু কাজ করা হয়। এবার পাহাড়ী ঢল ও বন্যার পানির চাপ বেশি থাকায় বাঁধের পাড়ে লাগানো গাছের শিকর দিয়ে অথবা ইদুরের গর্তে পানি ঢুকে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, বাঁধের ভাঙ্গণ ঠেকাতে আজ বৃহস্পতিবার থেকে বালির বস্তা ফেলা হবে। তবে সময় যত যাচ্ছে ভাঙ্গণ এলাকা ততই বিস্তৃত হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, বাঁধটি নির্মাণের পর আর সংস্কার করা হয়নি। প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে বাঁধের কোথাও না কোথাও ভাঙ্গণ দেখা দেয়। এবার বড় ধরনের বন্যার কারণে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং স্রোতের কারণে বাঁধটিতে ভাঙ্গণ দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা জানান, বাঁধ ভেঙ্গে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করায় বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৬ ঘন্টায় প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে গেছে। ফলে সদর উপজেলার চর জেলাখানা, চর গোবিন্দপুর, দূর্গাপুর, বারেরচর, চরসিরতা ও চরহাসাদিয়া গ্রামে পানি প্রবেশ করছে। তলিয়ে গেছে দুইশ ঘরবাড়ি ও বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি ও বীজতলা। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো মহাবিপাকে পড়েছে গবাদিপশু নিয়ে। নষ্ট হয়ে গেছে আসবাবপত্রও। আকস্মিক পানি ঢুকে পড়ায় আতংঙ্কের মধ্যে রয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। ইতিমধ্যেই বসতভিটা ছেড়ে খোলা আকাশের নীচে অসংখ্য পরিবার।ময়মনসিংহ প্রতিদিন