ত্রিশালে জট হয়ে  জন্ম নেয়া ফাতেমা ও জান্নাত আর নেই

ফকরুদ্দীন আহমেদ: সৃষ্টিকর্তার নিদর্শন কোন সময় কি দেখাবেন? কেউ জানেনা। কার কোন অবস্থায় জন্ম হবে,  মৃত্যু হবে আর কাকে কি ভাবে রাখবেন? কোথায় রাখবেন? কতক্ষণ রাখবেন? কত পরিমান খাওয়াবেন সব কুদরতি খেলা তাঁরই হাতে।

সাম্প্রতিক সময়ে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার বৈলর পৃর্ব  চরপাড়া আলামিনের স্ত্রী গার্মেন্স কর্মী ফরিদার খাতুনের গর্ভ হতে অপারেশন এর মাধ্যমে ময়মনসিংহর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপারেশান এর মাধ্যমে জট লাগানো দুই  যমজ শিশু কন্যার জন্ম হয়।  একজনের নাম রাখা হয় জান্নাতুল ফেরদৌস আরেক জনের নাম রাখা হয় ফাতেমা আক্তার ।  জন্মের পরেই ডাক্তারের পরামর্শ ছিল ঢাকায় নিয়ে যেতে ভালো ভাবে পরিক্ষা করে চিকিৎসা করতে।পারিবারিক ভাবে অর্থনৈতিক দূর্বল থাকায় বিপাকে পরেও জট লাগানো যমজ শিশু দুটিকে নিয়ে তারা বাড়িতে চলে আসে। কয়েকদিন বাড়িতে  বসবাস করতে থাকা অবস্থায় বিষয়টি কানাঘুষা শুরু হলে স্থানীয় সংবাদ কর্মীদের কানে আসে। সংবাদ কর্মীরা সনেজমিন এসে শিশুটিকে ক্যামেরা বন্দি করে তার মাতা-পিতার সাথে কথা বলেন। কথার ভাষাটা এমন ছিল অর্থের জন্য শিশু দুটি নিয়ে বিপাকে আছে বলে অভাবের সংসার টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা জন্য ঢাকা নিতে পাচ্ছেন না জট লাগানো যমজ শিশু দুটি।

এরপর সংবাদ কর্মীরা নিউজের মাধ্যমে প্রকাশ প্রকাশ করলে নেট দুনিয়া সহ পত্র পত্রিকায় ভাইরাল হয়। পরে ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সংবাদ পেয়ে ছুটে যায় শিশু দুটির বাড়িতে সেখানে গিয়ে উন্নত চিকিৎসার আশ্বাস দেন এবং জরুরি ব্যবস্থা করে পাঠিয়ে দেন  ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে জট বাচ্চা দুটোকে ভর্তি করানো হয়।  পরিক্ষা নিরিক্ষার পরে চিকিৎসা যখন চলছিল হঠাৎ জান্নাতের অবস্থা খারাপ হতে চলছিল ডাক্তার  আই সিওতে ভর্তি কথা লিখলেও সিটের অভাবে সেখানে ভর্তি করতে পারছিলনা  বলে জানিয়ে ছিলেন বাচ্চার দুটোর পিতা আলামিন।

 এরপর আর কোন যোগাযোগ ছিল না হঠাৎ বৃহস্পতিবার দুপুরের পর সংবাদ আসলো বাচ্চা দুটো আর জীবিত নেই। নিশ্চিত হওয়ার জন্য মুটোফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলে আলামিন কল রিসিভ করেন নি পরে রাত প্রায় ১১টা দৈনিক সবুজ সময় ত্রিশাল প্রতিনিধিকে জানায়, তাদের বাচ্চা আর বেঁচে নেই। পরে পুরো ঘটনা জানতে চাইলে তিনি জানান, তারা বৃহস্পতিবার সকালে নিজেদের ইচ্ছায় হাসপাতাল থেকে ছুটি নিয়ে যখন বাচ্চা দুটো নিয়ে বাড়িতে ফিড়ছিলেন তখন রাস্তার মাঝেই মারা যায়। পরে বাড়িতে এনে রাত ১০টা তাদের পারিবারিক  কররোস্থানে একই কবরে সমাহিত করা হয়।

এখানে শিশু দুটি মায়ের গর্ভে ছিলেন জট হয়ে , জন্ম নিলেন জট হয়ে, মৃত্যুবরণ করলেন একসাথে শেষ ঠিকানা কবরেও একসাথে শুয়ে গেলেন একসাথে। দুনিয়ার জমিনে মাত্র ২৪দিন বেঁচে ছিলেন।