বিচারের মুখোমুখি হচ্ছে সৌদি আরব

394261 14: A fiery blasts rocks the World Trade Center after being hit by two planes September 11, 2001 in New York City. (Photo by Spencer Platt/Getty Images)

ত্রিশাল প্রতিদিন ডেস্ক: ২০১১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ার হামলার ঘটনায় নিজেদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করে করা সৌদি আরবের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন এক মার্কিন বিচারক। বুধবার ওই বিচারক জানান, তিনি অভিযোগ থেকে সৌদি আরবকে নিষ্কৃতি দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ পাননি। ক্ষতিপূরণ হিসেবে তাই সৌদি আরবকে হতাহতদের পরিবারকে কোটি কোটি ডলার দিতে হবে বলে রায় জানান তিনি। এই আদেশের ফলে সৌদি আরবকে টুইন টাওয়ার হামলা সংক্রান্ত বেশকিছু মামলায় বিচারের মুখোমুখি হতেই হচ্ছে সৌদি আরবকে।

২০১৬ সালেরই র ৯/১১ বার্ষিকীর দিনেই জাস্টিস এগেইনস্ট স্পন্সরস অব টেররিজম অ্যাক্ট নামে এ সংক্রান্ত একটি বিল মার্কিন সিনেটে মৌখিক অনুমোদন পায়। সুযোগ তৈরি হয়, এ ঘটনায় সৌদি সংশ্লিষ্টতার বিপরীতে স্বজন হারানো ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিন পরিবারগুলো কিংবা ঘটনায় আহত হওয়া মার্কিন নাগরিকদের। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বিলে ভেটো দিলেও মার্কিন পার্লামেন্টের দুই কক্ষেই সেই ভেটোর বিপরীতে রায় আসে। ফলে স্বজন হারানো ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিন পরিবারগুলোর পক্ষে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে মামলার সুযোগ সৃষ্টি হয়। হামলার নেপথ্যে সৌদি আরবের সংশ্লিষ্টতা ছিল, এমন অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে ২৫টি মামলা হয়েছে। হতাহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা এসব মামলায় ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। এমনই এক মামলার বিচারকার্য পরিচালনা করতে গিয়ে মার্কিন জেলা জজ জর্জ ড্যানিয়েলস বলেছেন, সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ খারিজের জন্য পর্যাপ্ত প্রমাণ ছিল না তার কাছে।

২০১৬ সালের সেই জাস্টিস অ্যাগেইন্সট স্পন্সর অব টেরোরিজ অ্যাক্ট (জাসটা) আইন অনুযায়ী সৌদি আরবের বিরুদ্ধে বিচারকার্য পরিচালনা হচ্ছিল। সৌদি আরব বরাবরই হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করে আসছে। তবে বুধবারের ঘোষণার পর সৌদি আরবের আইনজীবীরা কোনও মন্তব্য করেননি। নিউইয়র্কে সৌদি শেয়ার বাজারের একটি অনুষ্ঠানেও প্রশ্ন করা হয়েছিলো এই রায়ে যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি বিনিয়োগে কোনও প্রভাব পড়বে কি না। ক্যাপিটাল মার্কেট কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ এলকও এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। ড্যানিয়েলের এই রায়, হামরায় নিহতদের পরিবার ও আহত ২৫ হাজার মানুষের দাবির পক্ষেই গিয়েছে। তবে বিচারক রায়ে আরও বলেন, সৌদি আরবের ন্যাশনাল কমার্শিয়াল ব্যাংক, আল রাজি ব্যাংক ও সৌদি বিনলাদিন গ্রুপ এই হামলায় অর্থ জোগান দিয়েছে এমন দাবি সত্য নয়।

২০১৬ সালের জুনে সিআইএ প্রধান জন ব্রেনান বলেন, নাইন ইলেভেনের হামলা সংক্রান্ত ২০০২ সালের কংগ্রেসের গোপন প্রতিবেদন সৌদি আরবের সম্পৃক্ততার প্রমাণ নয়। সৌদি মালিকানাধীন টেলিভিশন আল আরাবিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্রেনান বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি ২৮ পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদনটিকে ৯/১১ হামলায় সৌদি আরবের যোগসাজশের প্রমাণ হিসেবে জনগণের গ্রহণ করা উচিত হবে না।’ তবে সমালোচকরা মনে করেন, সিআইএ প্রধান জন ব্রেনান-এর এমন বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে সৌদি আরবের ব্যাপক লবিংয়ের ফলাফল। এই লবিংয়ে সাবেক দুই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ এবং বারাক ওবামাও প্রভাবিত ছিলেন বলে মনে করা হয়।

সৌদি আরব দাবি করে, কোনও বাদী প্রমাণ করতে পারেনি যে ওই হামলার সঙ্গে সৌদি আরব জড়িত ছিল। তবে বাদীপক্ষের আইনজীবী জেমস ক্রেন্ডলার বলেছেন, মামলা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হওয়াতে তিনি খুশি।-বাংলা ট্রিবিউন।