চীনের জাহাজবিধ্বংসী ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (এএসবিএম)বেকায়দায় ভারত!

দি দং ফেং-২১ ডি

আসিফ হাসান::সাম্প্রতিক সময়ে ভারত তাদের অস্ত্রভাণ্ডার বেশ সমৃদ্ধ করছে। রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ দূরপাল্লার অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়াও ফ্রান্স থেকে জঙ্গি বিমান কেনার চুক্তি করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইলের সাথে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করছে। নিজেরাও নানা অস্ত্র তৈরি করছে। ফলে তারা প্রতিরক্ষার দিক থেকে বেশ এগিয়ে গেছে। মনে করা হচ্ছিল, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তারা খুব এগিয়ে গেছে।

কিন্তু হঠাৎ করেই সে হিসাব যেন উল্টে গেছে। খবরটি সরাসরি পাকিস্তানের সাথে সম্পৃক্ত নয়। চীন ভয়াবহ একটি অস্ত্র হাতে পেয়েছে। পাকিস্তানকে এখনো দেয়নি, দেবে কি না তাও কিছু বলেনি। কিন্তু তবুও ভারতের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানের হাতে অস্ত্রটি আসবে এবং ভারতের প্রায় সব অস্ত্রই তাতে অকার্যকর হয়ে যাবে।

 ঘটনাটি হলো, দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন নৌবাহিনীর বিমানবাহী রণতরীগুলোর শক্তি প্রদর্শনকে মোকাবেলা করার জন্য বেইজিং একটি ভয়াবহ ‘রণতরী ঘাতক’ অস্ত্র : দি দং ফেং-২১ ডি জাহাজবিধ্বংসী ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (এএসবিএম) উদ্ভাবন করেছে। এটি নিখুঁতভাবে এক হাজার ৫০০ কিলোমিটার দূর থেকে টার্গেটে আঘাত হানতে পারে। এর উন্নত সংস্করণ দং ফেং-২৬ ৩০০ থেকে চার হাজার কিলোমিটার দূরে বিমানবাহী রণতরীতে আঘাত হানতে পারে।তবে সম্প্রতি চীনের জুহাই বিমান প্রদর্শনীতে চীনের শীর্ষস্থানীয় রকেট প্রস্তুতকারী চায়না অ্যাকাডেমি অব লাঞ্চ ভেহিক্যাল টেকনোলজি নতুন এম-২০বি এএসবিএম বিক্রি করার প্রস্তাব দিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদেরকে। ‘রণতরী ঘাতক’ এএসবিএমের নতুন সংস্করণ রফতানির জন্যই প্রস্তুত করা হতে পারে। এর পাল্লা ২৮০ কিলোমিটার হওয়ায় এর রফতানিতেও বাধ্যবাধকতা থাকছে না। আর চীন এই ক্ষেপণাস্ত্র রফতানি করা শুরু করলে পাকিস্তানই হতে পারে এর প্রধান ক্রেতা।

চীন ইতোমধ্যেই পাকিস্তানের জন্য রণতরী ও সাবমেরিন নির্মাণ করেছে। পাকিস্তানের অস্ত্রভাণ্ডারে স্বল্প পাল্লার এএসবিএম যোগ করতে পারে চীন। এটি পাকিস্তানের ওপর ভারতের স্পষ্ট নৌ-সুবিধা ভণ্ডুল করে দিতে পারে।এ ক্ষেপণাস্ত্র অত্যন্ত কার্যকরভাবে বিমানবাহী রণতরীতে হামলা চালাতে পারে। এক পরীক্ষায় দেখা গেছে, ১০টি আক্রমণের মধ্যে ৯টিই লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে।

চীনা সামরিক বাহিনীর দরকার ১,৫০০ কিলোমিটার পাল্লার ডিএল-২১ডি। কারণ তাকে ওয়েস্টার্ন প্যাসিফিক যুদ্ধক্ষেত্রে মার্কিন নৌবাহিনীর বিমানবাহী রণতরী মোকাবেলায় দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করতে হতে পারে। আর পাকিস্তান নৌবাহিনীর প্রয়োজন তার গোদর বন্দরকে ভারতীয় রণতরী থেকে নিরাপদ রাখা। এ জন্য ৩০০ কিলোমিটার কম পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রই যথেষ্ট।

এম-২০বি ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তান উপকূলকে খুব কম ব্যয়ে ও কার্যকরভাবে সুরক্ষিত রাখতে পারে। এএসবিএমের দাম প্রতিটির মাত্র ১০০ কোটি রুপি। অন্য দিকে ফ্রিগেট ও ডেস্ট্রয়ারের দাম পাঁচ হাজার কোটি রুপি, বিমানবাহী রণতরীর দাম ৩০ হাজার কোটি রুপি।
অর্থাৎ ভারত বিপুল ব্যয় করে যে সামগ্রী ক্রয় করছে, তার মোকাবেলা করার জন্য পাকিস্তান অনেক সস্তা তবে বেশি কার্যকর উপায় অবলম্বন করতে পারছে।

ভারতীয় নৌবাহিনীর থিংক ট্যাংক ন্যাশনাল মেরিটাইম ফাউন্ডেশনের পরিচালক ভাইস অ্যাডমিরাল (অব:) প্রদীপ চৌহান বলেন, এসব ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানি অস্ত্রভাণ্ডারে প্রবেশ করলে ভারতের অভিযানে জটিলতা সৃষ্টি করবে। তবে ভারতীয় নৌবাহিনীর মুখপাত্র বলেন, এএসবিএমের হুমকি মোকাবেলার জন্য ভারত প্রস্তুত।

পাকিস্তানকে অনেক আগে থেকেই ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করে আসছে চীন। পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রের জন্য বেইজিং দিয়েছে এম-১১ ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এই ক্ষেপণাস্ত্রের কারণেই শক্তিশালী হয়েছে পাকিস্তান। এখন নতুন চীনা ক্ষেপণাস্ত্র হাতে পেলে ভারতের প্রায় সব আক্রমণই ভণ্ডুল করে দিতে পারবে পাকিস্তান।