![SP MYMENSING](https://trishalprotidin.com/wp-content/uploads/2023/05/SP-MYMENSING.jpg)
আরিফ রববানী,ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহে ঈদের দিনে পৃথকভাবে খুন হওয়া নিহত অসহায় দুই পরিবারের সদস্যদেরকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন পুলিশ সুপার মাছুম আহমেদ ভূঞা।
মঙ্গলবার (২ মে) দুপুরে তাঁর কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে খুন হওয়া দুই পরিবারের সদস্যদেরকে এই আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা বলেন, ঈদের দিন ভোরে ময়মনসিংহ নগরীর ডি এন চক্রবর্তী রোডে অটো চালক হাবিবুর রহমান এবং গোহাইলকান্দি পশ্চিম পাড়া রিক্সা চালক সাদেক মিয়াকে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীরা ছুরিকাঘাতে হত্যা করে লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। এই দুই খুনের ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় পৃথক মামলা হয়েছে।
তাৎক্ষণিক কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দের নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ ফারুক হোসেন, এসআই নিরুপম নাগ, এসআই শাহ মিনহাজ উদ্দিন, এএসআই সুজন চন্দ্র সাহার নেতৃত্বে পুলিশ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তিনজনকে ঘটনার ৮ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, অনন্ত কুমার দে, মামুন ও কাজী মোঃ মাহিন বাদশা। এদের মাঝে অনন্ত ময়মনসিংহের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজ ও মামুন কমার্স কলেজের ছাত্র। অনন্তের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী মডেল থানার মামলা নং- ২০ তাং- ০৯-১২-২০২০, ধারা- ১৯৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯ এ ধারার অস্ত্র মামলা চলমান রয়েছে।
অন্য দুই আসামীর বিরুদ্ধেও স্থানীয়ভাবে বিরুপ তথ্য পাওয়া যায় এবং তারা নেশাগ্রস্ত। তারা উভয় হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।গ্রেফতারকৃতরা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে রিক্সা ভাড়া করে কৌশলে কাঙ্খিত স্থানে নিয়ে একই ছুরি দিয়ে অটোচালক ও রিক্সাচালক দুইজনকে হত্যা করে তাদের সাথে থাকা টাকা পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা বলেন, এ দুটি হত্যা মামলার তদন্তকালে উপার্জনক্ষম এই দুই ব্যক্তির মৃত্যুতে পরিবার দুটির আর্থিক দুরাবস্থা ও মানবেতর অবস্থা পুলিশের চোখে পড়ে। যা আমাদের হৃদয়ে মারাত্মকভাবে নাড়া দেয়। এ প্রেক্ষিতে আমি (পুলিশ সুপার) এবং কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি ব্যক্তিগতভাবে একান্ত মানবিক চিন্তা চেতনায় পরিবার দুটির অসহায়ত্বের বিবেচনায় তাদেরকে আর্থিক সহায়তার চিন্তা করি। ঐ দুই পরিবারের সদস্যদের ডেকে এনে পৃথক ভাবে ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।
তিনি আরো বলেন, যৎসামান্য এই অর্থ পরিবার দুুটির নামে পৃথকভাবে এফডিআর করে দেওয়া হবে। যা ইতিমধ্যেই ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। পুলিশ সুপার আরো বলেন, এ ধরনের মানবিক কাজে আমরা সব সময় কাজ করছি। এই পরিবার দুটোকে কিছুটা হলেও সহায়তা করতে পেরেছি।
এছাড়া পুনাক ময়মনসিংহের পক্ষ থেকে পরিবার দুটোর সদস্যদেরকে সেলাই প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেয়া হবে। একইসাথে সরকারের সমাজকল্যাণ বিভাগের সাথে কথা বলে অসহায় এই দুই পরিবারের সদস্যদের জন্য আরো কিছু করার চেষ্টা করবো।
এ সময় রিক্সা চালক নিহত সাদেক মিয়া ১০ বছরের শিশু কন্যা সাদিয়া আক্তার লিজা পুলিশ সুপারের কাছে দাবি করেন আমাদের চাওয়া শুধু হত্যার বিচার। আমি আমার পিতার হত্যাকারীদের দ্রুত এবং সঠিক বিচার চাই।
শিশু কন্যার আবেগীয় দাবির প্রতি সমর্থন করে পুলিশ সুপার বলেন, হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের দ্রুততম সময়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরো তদন্ত চলছে। আসামীদের যাতে কঠোর বিচার হয়, পুলিশ সেই লক্ষ্যে কাজ করছে।
পুলিশ সুপারের আর্থিক সহায়তা নিতে নিহত রিক্সা চালক সাদেক মিয়ার স্ত্রী লাভলী আক্তার দুই শিশু সন্তানসহ এবং অটো চালক হাবিবুর রহমানের দুই স্ত্রীর মাঝে ফজিলা খাতুন তার একমাত্র ছেলে সন্তান নিয়ে উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাঃ রায়হানুল ইসলাম, কোতোয়ালি সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহিনুল ইসলাম ফকির, কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ উপস্থিত ছিলেন।