ত্রিশাল প্রতিদিন ডেস্কঃঃ বৃহত্তর ময়মনসিংহের ত্রিশালে পৌর নির্বাচনের হাওয়ায় শীত কালেও গরম বাতাস বইছে। ভোটযুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলো নামার প্রস্তুতি যেমন তেমন না হলেও আওয়ামি লীগের মধ্যে বেশ তোড়জোড়। দলীয় প্রার্থী মনোনয়নে হিসাব-নিকাশ শুরু করেছেন প্রধান দল আওয়ামী লীগ।দলীয় প্রার্থী অনেক কিন্তু একক প্রার্থী নিয়ে ভোটযুদ্ধে নামার প্রস্তুতি তাদের। তবে মনোনয়ন দেবার পর রাজনৈতিক প্রক্ষাপট পরিবর্তন হবে বলে ধারণা করছে সাবেক রাজনৈতিকবিদরা। তার প্রমাণ আগেও কয়েক বার মিলেছে। তবে দলের অভ্যন্তরে বিদ্রোহ দমাতে কতটা সফল হবে শাসক দল আওয়ামী লীগ তা বলা কঠিন। জেলা আ.লীগের নেতারা বলছেন বিদ্রোহ কমাতে প্রয়োজনে দলের অভ্যন্তরে ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন করা হবে।
আ.লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন – ময়মনসিংহ জেলা আ.লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও বিআরডিবির চেয়ারম্যান “নবী নেওয়াজ সরকার”, উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক “আবুল কালাম”, আ.লীগ নেতা “মো. রুকন উদ্দিন খোকন”, উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম আহবায়ক “আশরাফুল ইসলাম মন্ডল”, সাবেক যুবলীগ নেতা “মো. কামাল হোসেন” ও ত্রিশাল উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি “হাসান মাহমুদ”। সকলেই দলীয় মনোনয়ন পেতে হায়কমান্ডে লবিং করে যাচ্ছেন ।
তবে বি এন পি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী দুজন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে কিন্তু মাঠে দেখা যাচ্ছে না। । এরা হলেন পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক “রুবায়েত হোসেন শামীম”, সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র “আমিনুল ইসলাম (খোকন )”। একাধিক ঘনিষ্টসুত্র থেকে জানা যায়, গত ০২ বার বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রাপ্ত প্রার্থী “আমিনুল ইসলাম ( আমিন) ” এবার নির্বাচনে থাকছেন না । এ ব্যাপারে তার সাথে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি।
“ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা” বিএনপির আহ্বায়ক ও ত্রিশাল উপজেলা বিএনপির সভাপতি “ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন” বলেন, পৌর বিএনপির সহসভাপতি ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র “আমিনুল ইসলাম খোকন” শুধু মনোনয়নের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছে। তিনি আরো বলেন, দলীয় সিদ্ধান্তের পরই প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।
এবার আসা যাক স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কথায় । স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে দুজনের নাম শুনা যাচ্ছে তা মধ্যে এক জন বর্তমান মেয়র ও সাবেক উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এবিএম আনিছুজ্জামান আনিছ ও অন্য জন হলেন ত্রিশাল বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি এম এ এস আলম( বাবলু)। তার মধ্যে বর্তমান মেয়র জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন অন্য সব প্রার্থীর চেয়ে বলে জানিয়েছন পৌর এলাকার ভোটারগণ।
তবে দলীয় প্রার্থীদের ভীরে পৌর ভোটারদের চাপে এবারও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন বলে ইতিমধ্যে মেয়র আনিছুজ্জামান আনিছ প্রচারনায় মাঠে নেমেছেন। প্রায় প্রতিদিনই তিনি পৌরসভায় পাড়া মহল্লায় মতবিনিময় করছেন ।
পর পর দুই বার দীর্ঘ ১০ বছর পৌর মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন পরিশ্রমী এই মেয়র। পৌর সভার উন্নয়নের পাশাপাশী পৌরবাসীর আস্থা অর্জন করেছেন তিনি । নাগরিক জীবনের মানোন্নয়ন, আর্থ-সামাজিক উন্নতি ও অগ্রগতি সাধন এবং সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়ন ঘটিয়ে ময়মনসিংহ জেলার শ্রেষ্ঠ মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন ত্রিশাল পৌরসভার জননন্দিত এই মেয়র।গত নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে চেয়ে ছিলেন। কিন্তু পৌরবাসীদের চাপে তুপের মুখে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন এবং নির্বাচনে বিপুল ভোটে ২য় মেয়াদে জয়লাভ করে মেয়র হয়েছিলেন জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা মেয়র আনিছুজ্জামান আনিছ।
দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র হিসাবে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে নাগরিকদের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করেন। দুইশত কোটি টাকার অধিক ব্যয়ে ড্রেনেজ ব্যবস্থা, সড়ক বাতি স্থাপন, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন সম্পাদন করেন । তার মধ্যে পৌর এলাকার অলিগলির রাস্তা থেকে শুরু করে বড় বাজেটের অনেক রাস্তা সংস্কার ও নির্মাণ করেছেন। তার মধ্যে পৌর বাজারের রাস্তা গুলোর যে উন্নয়ন তা এক দুঃসাহসীক অভিযানের মত সম্পাদন করে উন্নয়নে বিপ্লব ঘটিয়েছে। বিবেকমান মানুষ হিসেবে পৌরবাসীর কাছে বিশেষ ভাবে পরিচিত এই পরিশ্রমী মেয়র । করোনা ভাইরাসের কড়াল গ্রাসের সময় তার ভূমিকা সত্যই প্রশংসীয়। সরকারি অর্থের সাথে নিজের অর্থও ব্যয় করে নাগরিক সেবায় তার অবদান মানবিকতাকে এ নতুন মাত্র দিয়েছে। দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষই বলছেন, মেয়র আনিছুজ্জামানের আমলে ত্রিশাল পৌরসভার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তবে মেয়র আনিছুজ্জামান আনিছ বলেন, এখনও বেশকিছু কাজ বাকী রয়েছে । পৌরবাসী আমাকে আবার চাইলে বাকি কাজ গুলো সম্পন্ন করে একটি পূর্নাঙ্গ সফল পৌরনগর করে দিয়ে যাব ।
বাকি উন্নয়ন গুলোর মধ্যে রয়েছে বৃদ্ধাশ্রম, সুতিয়া নদী সংষ্কার করে চারপাশে পর্যটন ও উন্মুক্ত বিনোদন কেন্দ্র , পৌর এলাকার খালগুলি সংস্কার, শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি, শিশুদের জন্য শিশুপার্ক, শেখ রাসেল পার্ক, বর্জ্য থেকে গ্যাস উৎপাদন, আধুনিক বাস টার্মিনাল , আধুনিক স্টেডিয়াম নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে তার ।
উপজেলা আওয়ামীলীগের অভিভাবক পর্যায়ের এই নেতা এবারও দলীয় প্রতীকের বাইরে থেকে নির্বাচন করবে বলে পৌরবাসির মুখে মুখে। মেয়রের অসমাপ্ত উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হলে ত্রিশাল পৌরসভা পূর্ণাঙ্গ শহরে পরিণত হবে বলে ভোটাররা জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন- দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলেও দলের প্রভাব এখানে পরবেনা কারণ স্থানীয় সরকার নির্বাচন এলাকা উন্নয়নে যার অবদান যেমন তার আমলনামা ভোটারদের হাতে কোন বিতর্কিতের স্থান এই গুরুত্ব পূর্ণ পদে রাখা হবে না। এটি একটি পবিত্র দ্বায়িত্ব যার তার হতে পারে না।