সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, কাল শুক্রবার থেকে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বিধিনিষেধ শুরু। এই বিধিনিষেধ ‘সবচেয়ে কঠোরতম বিধিনিষেধ’ হবে এমনটাই জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ।
আজ বৃহস্পতিবার প্রতিমন্ত্রী বলেন, তাঁরা কাল থেকে কঠোরতম বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন করবেন। এ জন্য তিনি সবার সহযোগিতা চান। করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এর বিকল্প নেই। যেভাবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, সেভাবেই এই বিধিনিষেধ হবে। কোনো পরিবর্তন নেই। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ঘোষণা অনুযায়ী, কাল শুক্রবার সকাল ০৬টা থেকে আগামী ৫ই আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ থাকবে।
বিধিনিষেধের ১৪ দিন সব ধরনের শিল্পকারখানাও বন্ধ থাকবে। তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের পক্ষ থেকে শিল্পকলকারখানা খোলা রাখার দাবি থাকলেও বিষয়টি এখন পর্যন্ত সরকার আমলে নেয়নি।
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, ঈদের পরের ১৪ দিন (২৩ জুলাই-৫ আগস্ট) আগের বিধিনিষেধের মতো সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস, সড়ক, রেল ও নৌপথে গণপরিবহন, অভ্যন্তরীণ উড়োজাহাজসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। তখন সরকারি কর্মচারীরা নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করবেন এবং দাপ্তরিক কাজগুলো ভার্চ্যুয়ালি সম্পন্ন করবেন। এ ছাড়া শপিং মল, মার্কেটসহ সব দোকানপাট, শিল্পকারখানা, সব পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
তবে আইনশৃঙ্খলা ও জরুরি পরিষেবা যেমন, কৃষিপণ্য-উপকরণ, খাদ্যশস্য-খাদ্যদ্রব্য পরিবহন বা বিক্রি, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, করোনার টিকাদান, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন, ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তাব্যবস্থা, ডাকসেবা, ব্যাংক, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ অন্যান্য জরুরি বা অত্যাবশ্যকীয় পণ্য-সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মচারী ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র প্রদর্শন সাপেক্ষে যাতায়াত করতে পারবে।
কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে। টিকা কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে টিকা গ্রহণের জন্য যাতায়াত করা যাবে। খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খাবার বিক্রি (অনলাইনে কেনা বা খাবার নিয়ে যাওয়া) করতে পারবে।
আর ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সেবা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে। বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় খোলার বিষয়ে অর্থ বিভাগ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতসমূহের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবেন।
এ ছাড়া কোরবানির পশুর চামড়া পরিবহন, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কঠোর বিধিনিষেধের আওতার বাইরে থাকবে। খাদ্য ও খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াজাতকরণ মিল–কারখানা এবং ওষুধ, অক্সিজেন ও কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য উৎপাদনকারী শিল্পও এই বিধিনিষেধের আওতার বাইরে থাকবে। বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে এবারও বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দেওয়ার জন্য মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী।তথ্যসূত্র-প্রথম আলো