মো:নাজমুল ইসলাম,স্টাফ রিপোর্টার:ময়মনসিংহের শিল্প নগরী খ্যাত ভালুকায় স্থানীয় বেকার যুবক-যুবতিদের চাকরিতে অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবিতে জেগে উঠেছে ভালুকার যুবসমাজ। বিগত দেড় দশকে ময়মনসিংহের প্রবেশদ্ধার ভালুকা উপজেলার আমুল পরিবর্তন হয়েছে প্রত্যেকটি ইউনিয়নে গড়ে উঠেছে কয়েক হাজার শিল্প-কারখানা।
বিশেষ করে হবিরবাড়ী, ভরাডোবা,মেদুয়ারী, মল্লিকবাড়ি,উথুরা, ডাকাতিয়া ইউনিয়ন শত শত নামিদামি শিল্পকারখানা গড়ে উঠায় কর্মসংস্থান হয়েছে লাখো বেকার শিক্ষিত তরুন তরুনীদের।জীবন-জীবিকার পরিবর্তন হয়েছে এলাকার মানুষের।
তবে শিল্পকারখানা হলেও এই এলাকায় বেকারত্বের সংখ্যা অন্য এলাকার থেকে অনেক বেশি। কারন এসব কারখানায় শ্রমিক ছাড়া কোন পদেই স্থানীয় কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয় না।কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকও নেয় না স্থানীয়দের থেকে। শিল্পনগরী হওয়াতে অবহেলিত ভালুকা উপজেলার যেমন উন্নয়ন হয়েছে তেমনি সবুজ শ্যামল এলাকার বাতাস দূষিত হচ্ছে,হাজার হাজার একর ফসলি জমি হারিয়েছে কৃষক, খাল বিল ও ঐতিয্যবাহী খিরু নদীর পানিতে ফ্যাক্টরির রাসায়নিক কেমিক্যালে দূষিত হচ্ছে পানি, দূর্গন্ধে বিষাক্ত কেমিক্যালে খাল বিলের মাছ মরে যায়, কৃষকের হাজারো একর জমিতে দূষিত পঁচা পানির জন্য কোন ফসল হচ্ছে না!
ভুক্তভোগী কৃষকের ক্ষতিপূরনের টাকাও ঠিক মতো পাচ্ছে না, বড় বড় মটর দিয়ে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের কারনে এখন আর সাধারণ নলকূপে পানি সহজে পাওয়া যায় না।এলাকায় কয়েক লাখ লোক বাহির থেকে এসে চাকুরি করে বসবাস করায় অপরাধের পরিমান বেড়ে গেছে কয়েক গুন। মাদক থেকে শুরু করে ছিনতাই, ধর্ষন,অপহরন,জবরদখল,খুনসহ সব ধরনের অপকর্মের পরিমান দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। এসবের বাহিরেও অসংখ্য সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
কিছু স্বার্থানেস্বী মহলের কারনে তারাই সুবিধা পেয়ে যাচ্ছে সবসময় কিন্তু সাধারণ ভোক্তোভুগি জনগনের বিপদআপদের শেষ নেই। স্থানীয় মিল ফ্যাক্টরিগুলো কিছু প্রভাবশালী মহলের জন্য যোগ্যতা থাকার পরও কারখানাগুলোতে চাকরি হয় না স্থানীয়দের। এমনকি স্থানীয় সাংসদ, উপজেলা চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধিরা সুপারিশ করলেও চাকরিতে নেয়া হয় না।
তাহলে তরুন বেকার ছেলে মেয়েটি বাবা মায়ের বোজা হয়েই থেকে যাচ্ছে। অনেকে অন্য জেলায় প্রাইভেট চাকরি করতে যায়না কারন হিসাবে ভালুকায় শত শত কলকারখানা থাকতে তাদের বেকারত্বের অভিশাপ কেন অভিযোগ যুবকদের। ভালুকায় হাজার হাজার শিক্ষিত তরুন- তরুনীর ভাগ্যে স্থানীয় কারখানাগুলোতে চাকুরি পাওয়া যেন সোনার হরিণ হয়ে দাড়িয়েছে।
গত দুইদিন ধরে ভালুকার যুবকরা একত্রে সোসাল মিডিয়ায় প্রতিবাদের ঝড় তুলেছে শিল্প কারখানাগুলোতে চাকরিতে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া না হলে তারা তাদের অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ। তাদের দাবি চাকরিতে ভালুকার যুবক যুবতীরা সুবিধা না পেলে আন্দোলনেও যাওয়া কথা জানান।
শিল্পনগরী হওয়াতে এলাকার উন্নতি হচ্ছে, সেই সাথে ক্ষতিও,শিল্পায়ন হলে এসব হবেই,সবাই একত্র হয়ে ন্যায্য অধিকার আদায়ের চেষ্টা করলে অন্তত বহু যুবক বেকারত্বের অভিশাপ থেকে রক্ষা পাবে বলে মনে করেন ভালুকার সচেতন মহল।