মোঃ জিয়াউল হক, শেরপুর প্রতিনিধিঃ শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ে সাংবাদিক প্রবেশ নিষিদ্ধ করলো মকরুল বাহিনীর সদস্যরা। জানা গেছে, এ বাহিনীর প্রধান বন কর্মকর্তা মকরুল ইসলাম আকন্দ ২০১৯ সালে উপজেলার রাংটিয়া রেঞ্জের তাওয়াকোচা ফরেষ্ট বিট অফিসে বিট কর্মকর্তা হিসেব যোগদান করেন।
তিনি এখানে যোগদানের পরেই তার আত্মীয়-স্বজনসহ সামাজিক বনের অংশিদারদের নিয়ে গড়ে তুলেন একটি বিশাল বাহিনী।এ বাহিনীতে রয়েছে ২জন ভাড়াটিয়া সাংবাদিকও। এ বিশাল বাহিনীটি পরিচালনা করেন বন কর্মকর্তা মকরুল ইসলাম আকন্দের ভায়রা বাকাকুড়া গ্রামের মুসা সরদার। এবাহিনীর সক্রিয় সদস্যরা হলেন সাইফুল ইসলাম, বাবু, আলমগীরসহ আরো অনেকেই।শুরু থেকেই এ বাহিনীর সদস্যরা গারো পাহাড়ের শালগজারিসহ সামাজিক বনের বৃক্ষ নিধন, পাহাড় কেটে পাথর ও বালু লুটপাট চালিয়ে আসছে।
স্থানীয়রা জানান এ বাহিনীর বৃক্ষ নিধন, পাহাড় কেটে পাথর ও বালু লুটপাটের কারনে গারো পাহাড় ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়ে। সৌন্দর্য হারাতে বসেছে গারো পাহাড়। যে সৌন্দর্যকে ঘিরে ১৯৯৩ সালে গারো পাহাড়ে গড়ে উঠেছে একটি পিকনিক স্পট। মৌজার নামানুসারে এর নাম রাখা হয় গজনী অবকাশ বিনোদন কেন্দ্র। কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকেই সারা দেশ থেকে ভ্রমন পিপাসুদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠে কেন্দ্রটি। এখান থেকে প্রতিবছর সরকারের ঘরে আসে বিপুল পরিমানের রাজস্ব। কিন্তু মকরুল বাহিনীর কালো থাবায় হুমকির মুখে পড়ে পর্যটন কেন্দ্রটি।
এসব লুটপাটের বিষয় নিয়ে সম্প্রতি মানবকন্ঠ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে উপজেলা প্রশাসনসহ বন বিভাগ নড়েচড়ে বসে। বন্ধ করে দেয়া হয় পাহাড় কেটে পাথর ও বালু লুটপাট। পাহাড় কেটে পাথর ও বালু লুটপাটের বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় সাংবাদিকদের উপর খেপে উঠেন মকরুল বাহিনীর সদস্যরা।
অভিযোগে প্রকাশ, পত্রিকায় লেখালেখির পর পাহাড় কেটে পাথর ও বালু লুটপাট বন্ধ হলেও বৃক্ষ নিধন বন্ধ হয়নি। আর বৃক্ষ নিধন অব্যাহত রাখতে গারো পাহাড়ের সাংবাদিক প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন মকরুল ইসলাম আকন্দ। তিনি ইতিমধ্যেই তার বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন গারো পাহাড় এলাকায় কোন সাংবাদিক প্রবেশ করা মাত্রই যেন পিটিয়ে হাত পা ভেঙ্গে দেয়া হয়।
গত মার্চ গ্লোবাল টেলিভিশনের শেরপুর জেলা প্রতিনিধি আবু হেলাল, ও মানবকন্ঠের ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রতিনিধি জিয়াউল হক গুরুচরনদুধনই এলাকায় পাঁচারের উদ্দেশ্যে স্তপ করে রাখা চোরাই কাঠের ছবি তোলতে গেলে মকরুল ইসলাম আকন্দের নির্দেশেই ওই বাহিনীর সদস্যরা ২ সাংবাদিককে চরমভাবে লাঞ্ছিত করে। পরে সাংবাদিক জিয়াউল হক বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করে। এ ঘটনার পর থেকে মকরুল ইসলাম তার বাহিনীকে নির্দেশ দেন গারো পাহাড়ে সাংবাদিক প্রবেশ করলেই তাকে পিটিয়ে হাড়গোড় ভেঙ্গে দেয়ার। বর্তমানে সাংবাদিকরা সংবাদ সংগ্রহ করতে গারো পাহাড়ে প্রবেশ করতে পারছেন না। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারুক আল মাসুদ অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।