লাইফস্টাইল ডেস্ক: শিশিরের স্নিগ্দতা নিয়ে পরম মমতার আচ্ছাদনে শীতের আবির্ভাব । শীত যেমন আমাদের দেয় পরম মমতার পরশ তেমনি প্রকৃতিতে আসে এক অপরূপ পরিবর্তন। আর শীতকালেই মানুষের শরীরে বিভিন্ন ব্যথার অবির্ভাব হয় । হাঁটু ব্যথা, গাঁটের ব্যথা,হাত ফুলে যাওয়া,শরীরের পিঠ, কাঁধ, হাঁটু, মাথা ব্যথা আমাদের চলার গতিকে থমকে দেয় ।আমরা অনেকেই এমন ব্যথায় প্যারাসিটামল বা ব্যথা নাশক জাতীয় ওষুধ সেবন করে থাকি যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতে, তাপমাত্রা কমে আসলে জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধির রক্তনালীগুলো সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে তার সঙ্গে রক্তের তাপমাত্রাও কমে যায়।যার ফলে জয়েন্টগুলো শক্ত হয়ে ফুলে ওঠে। তখনই ব্যথা তিব্রতা বাড়ে। তাছাড়াও এ সময় গায়ে অনেক গরম পোশাক পড়া থাকে ফলে শরীরে রক্ত সঞ্চালনের গতি কম থাকে। রক্ত চলাচল কম হলেই শরীরে বেশি ব্যথা হয়। এখন ২৫ বছর বয়সেও গাঁটে ব্যথা হয়। এবছর যেহেতু করোনার প্রাদূর্ভাব প্রায় সকলেই ঘরে বসে কাজ করছেন, সে কারণে ব্যথার প্রকোপও বেশি হবে।
গাঁটের ব্যথা এখন যে কোনও মানুষের হতেই পারে। এখন অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, এবং পরিবেশ দূষণে অল্প বয়সেই শরীরে দেখা দিচ্ছে ক্যালসিয়ামের অভাব। ঘাটতি হচ্ছে ভিটামিন ডি-এর। তাই প্রথমেই ওষুধ না খেয়ে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে ও ঘরোয়া উপায়ে সুস্থ থাকার রইল কিছু টোটকা।
মেথি ভেজানো পানি খান
মেথিতে রয়েছে নানা ঔষধী গুন যা শরীরের যে কোনও ব্যথার উপশম করে থাকে। রাতের বেলা এক গ্লাস পানিতে মেথি ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন সকালে ছেঁকে নিয়ে সেই পানি খান তাতে শরীরও ভালো থাকবে, ব্যথাও কমবে।
হলুদ-আদার মিশ্রণ
এক গ্লাস পানিকে গরম করে হলুদ আর আদা ফুটিয়ে নিন। পানি ফুটে আধ কাপ হলে ছেঁকে নিয়ে মধু মিশিয়ে খান। দিনে দুবার খেলেই কমবে ব্যথা। আর শীতের মাস খেতে পারলে সুস্থ থাকবেন।
রসুনের গুন
রসুনের মধ্যে রয়েছে সালফার যা ব্যথানাশক হিসাবে কাজ করে। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে এবং পেশী ও গাঁটের ব্যথা ও ফোলা ভাব কমাতে এটি বেশ উপকারী। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক কোয়া কাঁচা রসুন চিবিয়ে খাওয়া ভালো আবার আক্রান্ত স্থানে রসুন-তেল গরম করে নিয়মিত মালিশ করতে পারেন।
গরম সেঁক
একবার ঠান্ডা পানিতে, একবার গরম পানিতে পা ডোবান। এরকম ১৫ মিনিট করুন বা হট ওয়াটার ব্যাগ থাকলে ৩০ মিনিট সেঁক দিন। এইভাবে সেঁক দিলে গাঁটের ব্যথার অনেকটাই সমস্যা কমে।
কফি পান
কফি পানে ব্যায়ামজনিত ব্যথা দূর করে। নিয়মিত ২০০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন পান করলে মাথাব্যথা, মাইগ্রেইনের ব্যথা কমে, তবে তা দীর্ঘসময়ের জন্যে নয়।
গাজরের জুস/তিলের বীজ
গাজরে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। তাই গাজরের জুসের সাথে পাতিলেবুর রস দিয়ে খান। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেলে উপকার পাবেন।
তিলের বীজ ব্যথা সারাতে ভালো কাজ করে। তিলে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম থাকায় মাথা ব্যথা ও মাংস পেশীর ব্যথা অনায়াসে দূর করতে সাহায্য করে।
অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ও আদা/মরিচের গুঁড়া ও নারিকেল তেলের মিশ্রণ
অ্যাপেল সিডার ভিনেগার হালকা গরম পানি সঙ্গে আদার রস ও সামান্য মধু মিশিয়ে খান। সারা বছর খেলে ব্যথা কমবেই।
লাল মরিচে মিলবে এই ক্যাপসাইসিন। আধ-কাপ নারকেল তেলে দু’চামচ মরিচের গুঁড়া মিশিয়ে ব্যথার জায়গায় ২০ মিনিট ধরে মালিশ করুন। এর পর হালকা গরম পানি দিয়ে জায়গাটা ভাল করে পরিষ্কার করে ফেলুন। দিনে ৩-৪ বার মালিশ করলে গাঁটের ব্যথা অনেকটাই কমবে ।
পুদিনা পাতার রস
পুদিনা’ পাতায়’ আছে’ মেনথল’ নামে’ একটি’ উপাদান , যা ধনুষ্টংকার’ রোগ প্রতিরোধে’ কার্যকরী’ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া, এর তেল’ পায়ের’ কজ্বি’ ও গোড়ালীতে’মালিশে’ ব্যথা’ উপশম’ হয়। এমনকি’ মাথা’ ব্যথায়’ পুদিনা ‘পাতা’ কপালে ‘ঘষলে’ও ব্যথা’ উপশম’ হয়।