ময়মনসিংহে চিকিৎসকের বিচার ও গ্রেফতার দাবিতে মানববন্ধন 

আরিফ রববানী,ময়মনসিংহ: ভুল চিকিৎসায় কমিউনিটি বেজড মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মাহজাবিন হকের ৩৩% দৃষ্টি হারানোর বিচার গ্রেফতার দাবি করে অভিযুক্ত চক্ষু চিকিৎসক ডা. দীপক কুমার নাগের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহে মানববন্ধন কর্মসুচী পালন করেছে হাজারো জনতা।

বুধবার (১৯ অক্টোবার) দুপুরে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের অফিসের সামনে থেকে পাটগোদাম ব্রীজের মোড় পর্যন্ত ১২টি স্পটে মানববন্ধন কর্মসুচীতে বিভিন্ন পেশাজীবির মানুষসহ ছাত্র-জনতা অংশ নেন।

মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি শংকর সাহা, নারী উদ্যোক্তা সেলিমা রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক  আবু সাঈদ দীন ইসলাম ফকরুল, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য লুতফুল নেচ্ছা লাকী,গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ শাহা,  ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন এর প্যানেল মেয়র ৩ শামীমা রহিম,  কাউন্সিলর রোকেয়া হোসেন, শ্রমিক নেতা রাকিবুল ইসলাম শাহীন, ময়মনসিংহ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহসভাপতি অধ্যক্ষ মিনার, শহিদুল ইসলাম, যুব মহিলা লীগের যুগ্ন আহবায়ক স্বপ্না খন্দকার, বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদ ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ময়মনসিংহ মহানগর যুবলীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইমতিয়াজ আহমদ বুলবুল,  ছাত্রলীগের মহানগর সভাপতি নওশেল আহমেদ অনি,গৌরীপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি নাজিমুল ইসলাম শুভ সহ আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন পেশাশ্রেণীর ব্যক্তিবর্গরা। বক্তারা ভুল চিকিৎসার জন্য দায়ের করা মামলা অভিযুক্ত চক্ষু চিকিৎসক ডা. দীপক কুমার নাগের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করেন।

 অভিযোগ রয়েছে দেশের খ্যাতিমান চিকিৎসক দীপক কুমার নাগের ভুল চিকিৎসায় ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি  ব্যবসায়ী নেতা আমিনুল হক শামীম(সিআইপি) এর মেয়ে মাহজাবীন হক মাশার চোখের ৩৩ ভাগ রেটিনা চিরতরে নষ্ট হয়ে গেছে। এব্যাপারে গত  ১০ আগস্ট ময়মনসিংহের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ঢাকার সোবানবাগ এলাকার দীন মো. চক্ষু হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের চক্ষু বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. দীপক নাগকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। এর আগে চিকিৎসক দীপক কুমার নাগের বিচার দাবিতে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সন্মেলন করা হয়।১৯ শে অক্টোবর  আবারও তার শাস্তির দাবীতে হাজার হাজার নারী পুরুষ অংশ গ্রহন করে মানববন্ধন করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভ করা ও সোসাল মিডিয়ায় ব্যপক প্রচার করা হয়।

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কোতোয়ালি মডেল থানাকে এফআইআরভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন।ভুক্তভোগী মাহজাবীন হক মাশা ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি ও সিআইপি মো. আমিনুল হক শামীমের বড় মেয়ে। মাশার স্বামী এসএসএফের উচ্চপদস্থ একজন কর্মকর্তা।

বাদীর অভিযোগ, গত জুন মাসে মাহজাবীন হক মাশার চোখের সমস্যা হওয়ায় দীন মো. চক্ষু হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে চক্ষু বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. দীপক নাগের চিকিৎসা নেন। এ সময় তিনি মাশার চোখে লেজার প্রতিস্থাপন করেন। কিন্তু লেজার লাগানোর পর চোখে অন্ধকার দেখা শুরু করে মাশা। এই অবস্থায় মাশাকে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জানান লেজার স্থাপনের কারণে মাশার চোখের ৩৩ ভাগ রেটিনা চিরতরে নষ্ট হয়ে গেছে।

মাশা জানায়, পরে তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডের বামরুংগ্রাদ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ভুল চিকিৎসার কারণে মাশার চোখের রেটিনার ৩৩ ভাগ নষ্ট হয়ে গেছে।

বাদী সামিউল হক সাফা বলেন, চোখে অতিরিক্ত লেজার লাগানোর কারণে আমার বোনের এত বড় ক্ষতি হয়েছে। আমি এই ঘটনার উপযুক্ত বিচার দাবি করছি। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের কোনো ঘটনা কারো সঙ্গেই আর না ঘটে, একজন সচেতন মানুষ হিসেবে এটাই আমার প্রত‍্যাশা।