তামিম রায়হান:: করোনাভাইরাসের এই ঝুঁকিপূর্ণ সময়ে আজ এবং কাল ছুটির দিনসহ অন্যান্য সময়ে কাতারে বসবাসরত প্রবাসী কর্মীরা যেন নিজেদের জায়গায় অবস্থান করেন এবং অপ্রয়োজনে বাইরে বের না হন, সে ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছে কাতার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও শ্রম মন্ত্রণালয়। ছুটির দিনে ঘোরাঘুরি ও আড্ডাপ্রিয় প্রবাসী বাংলাদেশি হিসেবে এ ব্যাপারে আমাদের বিশেষভাবে সচেতন থাকা উচিত।
কাতারে গতকাল যে ২৩৮ জনের শরীরে ভাইরাস পাওয়া গেছে, তাদের প্রায় সবাই বিদেশি কর্মী। ফলে বিদেশিদের চলাফেরা এবং ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে কাতারি নাগরিকদের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা থাকা খুব স্বাভাবিক। আমরা যারা এ দেশে বিদেশি হিসেবে থাকছি, আমাদের উচিত এই দেশের স্বার্থ ও নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এখানকার কর্তৃপক্ষ যেসব নির্দেশনা দেয়, তা মেনে চলা।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি যাদেরকে ইরান থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল, তাদের মধ্যে ১২১ জনের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যায়নি। ফলে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর আজ তারা নিজেদের ঘরে ফিরেছেন। যাদের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে, তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
আজ থেকে কাতারের সর্বত্র মসজিদগুলোতে আজানের ৫ মিনিট পরই ইকামাত দেওয়া হবে এবং জামাত শুরু হবে, নামাজ শেষ হওয়ার ১৫ মিনিটের ভেতর মসজিদ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আপাতত কাতারের স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও ২২ মার্চ থেকে দূরশিক্ষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হবে। কাতারের জাতীয় লাইব্রেরিসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ও পার্ক আপাতত বন্ধ থাকবে। ফলে সেগুলোতে গিয়ে ভিড় জমানো উচিত নয়।
করোনাভাইরাসের এমন অস্থির সময়ের চেয়েও কঠিন সময় পার করেছে কাতার। ২০১৭ সালে যখন পূর্বঘোষণা ছাড়াই কাতারের সঙ্গে সব ধরণের সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল সৌদিআরব, আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিশর। সেই বিপদের দুর্দিনেও কাতারের বাজারে কোনো পণ্য সংকট হয়নি। সুতরাং এখনও বাজারে পণ্য সংকট নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। যারা বাজারগুলোতে ভিড় করছেন, তারা অযথা অনিশ্চয়তায় ভুগছেন।
করোনাভাইরাস নিয়ে কাতারে যারা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে গুজব বা ভুয়া খবর ছড়াবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করছে কাতার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে এই অপরাধে আটক করা হয়েছে। তাই এ ব্যাপারে বিশেষ সাবধানতা কাম্য।
এদিকে, উপসাগরীয় অঞ্চলের আরেকটি দেশ কুয়েতে ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ মার্চ পর্যন্ত যারা প্রবেশ করেছেন, তাদের সবাইকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার আহ্বান জানানো হয়েছে। যেসব প্রবাসী কর্মী এই আহ্বান অগ্রাহ্য করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাচ্ছেন না, তাদেরকে চিরতরে কুয়েত থেকে বহিষ্কারের ব্যাপারে ভাবছে কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কুয়েত প্রবাসী বাংলাদেশিদের উচিত, এ ব্যাপারে অবহেলা না করে নিজেদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো।