শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুর জেলার পৌর শহরের সজবরখিলা (রংমহল সংলগ্ন) এলাকার জৈনক শিমু আক্তার পাখি’র বাসায় স্বর্ণালংকার ও নতুন কাপড়সহ প্রায় ৩লক্ষাধিক টাকা চুরির মামলায় গ্রেফতারী ওয়ারেন্ট প্রাপ্ত আসামী মোছা. শেফালী পারভীন কর্তৃক উক্ত মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন ভাবে হুমকি প্রদানের অভিযোগ করছে মামলার বাদী। হুমকি প্রদানকারী শেফালী পারভীন জেলার শ্রীবরদী উপজেলার কুড়িকাহনিয়া গ্রামের মৃত জাহাবাজ আলীর মেয়ে।
বাদী কর্তৃক আদালতে দায়ের করা মামলার সুত্রে জানা গেছে, নতুন কাপড় কেনা বেচার সুত্র ধরে বাদী ও বিবাদীর মধ্যে পরিচয় হয়। এই পরিচয়ের সুত্র ধরে ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের ১২ তারিখের বিকেল ৪ ঘটিকার সময় বাদীর বাড়ীতে নতুন কাপড় কিনতে যায় বিবাদী শেফালী পারভীন। ঘরে প্রবেশ করে দেখতে পায় শিমু আক্তার পাখি তার ছোট শিশু সন্তানকে নিয়ে গভীর ঘুমে আছন্ন। এই সুযোগে বহু ঘটনার নায়িকা শেফালী পারভীন পাখির বাসা থেকে ১০ আনি ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন, ১ ভরি ওজনের একটি নেকলেচ সহ আনুমানিক ৩৫ হাজার টাকার নতুন কাপড় বস্তায় ভরে দ্রুত বাসা থেকে বের হয়ে যায়। এভাবে শেফালীকে বাসা থেকে দ্রুত বের হতে দেখে পাখির মা। পরে পাখির মাতা দ্রুত ঘরে গিয়ে দেখতে পায় যে, পাখি তার সন্তান নিয়ে ঘুমাচ্ছে। এমতাবস্থায় পাখির মায়ের ডাকে পাখির ঘুম ভেঙ্গে গেলে শেফালীর চলে যাওয়ার বিষয়টি জানতে পারে পাখি। পাখি’র সন্দেহ হওয়ায় সে তার স্বর্ণালংকার ও কাপড়ের খোঁজ নিয়ে তার দুটি গহনা আর নতুন কাপড় দেখতে না পেয়ে দ্রুত পৌর শহরের চাপাতলীতে শেফালীর ভাড়া বাসায় যান। সেখানে তাকে না পেয়ে কুড়িকাহনিয়ায় তার বাবার বাড়ীতেও খোঁজ নিয়ে তাকে না পেয়ে অবশেষে শেরপুর সিআর আমলী আদালতে শেফালীর বিরুদ্ধে একটি চুরির অভিযোগ দায়ের করেন পাখি। যাহার মামলা নং-১৩৯০/২২। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে ওসি শেরপুরকে উক্ত অভিযোগটি এফআইআর এর নির্দেশ প্রদান করেন। পরবর্তীতে শেফালী আদালতে হাজির না হলে আদালত কর্তৃক তার বিরুদ্ধে গত ২১/৩/২০২৩ইং তারিখে গ্রেফতারী ওয়ারেন্টে জারি করেন। চুরির ঘটনার পর থেকেই শেফালী আত্মগোপনে চলে যাওয়ার পাশাপাশি চুরির মামলার বাদী পাখিকে মামলা তুলে নিতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে আসছে।
এই শেফালী পারভীনের বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে বেড়িয়ে আসে তার পারিবারিক জীবনে অনেক অজানা কাহিনী। প্রতারণা আর ব্ল্যাকমেইলিং হচ্ছে তার প্রধান পেশা। এ পর্যন্ত সে ৫ স্বামীর সংসার করেছে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করে জরিমানা আদায়েরও ঘটনা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। শুধু তাই নয়, শেরপুর আদালতের এক পেশকারকেও ফাঁসিয়ে তাকে বিবাহ করতে বাধ্য করে। পরবর্তীতে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দফারফা করে শেফালী। এখানেই শেষ নয়।
সে শেরপুর সদরের ধোপারচর এলাকার জৈনক রিপনের কাছ থেকে ৩শত টাকার হ্যান্ডনোটের মাধ্যমে গত ৩/৯/২০২২ তারিখে ৬লক্ষ ২০ হাজার টাকা গ্রহন করে ২৩/৯/২০২২ তারিখে ফেরত দেয়ার অঙ্গিকার পত্রে স্বাক্ষর করে। অথচ উক্ত তারিখে গ্রহনকৃত টাকা ফেরত না দিলে রিপন আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। যাহার নম্বর-১৩৩৪/২২। এ মামলায় শেফালী ২ বার গ্রেপ্তার হয়। পরবর্তীতে রিপনের পাওনা টাকা পরিশোধ না করে পরিকল্পিত ভাবে পার্শ্ববর্তী জামালপুর জেলা আদালতে গিয়ে গত ৪/৪/২০২৩ইং তারিখে রিপন সহ ৫জনকে আসামী করে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করে শেফালী পারভীন। এ মামলা দায়েরের পর রিপনের অবস্থা হয়েছে, “ছাইরে দে মা, কাঁন্দে বাঁচি’র মতো”।
শিমু আক্তার পাখি জানান, “আমি একজন নারি হয়ে আরেকজন নারিকে চিনতে পারিনি। শেফালীর টার্গেট হচ্ছে সমাজের অর্থবান ও বিত্তবান যুবক। সে বিভিন্ন যুবককে ব্ল্যাকমেইলিং এর শিকার বানাচ্ছে। সে পারেনা এমন কোন কাজ নেই। তার বিরুদ্ধে আদালত কর্তৃক প্রায় ৪মাস গত হচ্ছে ওয়ারেন্ট হয়েছে। পুলিশ তাকে ধরতে পারছেনা। অথচ তার মোবাইল ২৪ ঘন্টায় খোলা থাকে। একজন চোর হয়ে আমাকে মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছে। এ ব্যাপারে আমি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ ব্যাপারে বিবাদী শেফালী পারভীনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।