ষ্টাফ রিপোর্টারঃ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন পূরণে দারিদ্র্যকে বাঁধা হতে দেয়নি রিকশা চালকের ছেলে মেধাবী শিক্ষার্থী তারাকান্দা উপজেলার কাকনী ইউনিয়নের আকাশের। স্বপ্ন পূরণে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন মানবিক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজাবে রহমত।
ইউএনও মিজাবে রহমত এর সহযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্সপ্রাপ্ত পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেধাবী শিক্ষার্থী আকাশ মিয়া। সে তারাকান্দা উপজেলার কাকনী ইউনিয়নের বাশতলা গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তার বাবার নাম আব্দুল বারেক। বাবা রিকশা চালিয়ে কোন রকম সংসার চালায় । বর্তমানে তিনি শারিরীকভাবে কাজ করতে অনেকটাই অক্ষম। অভাব অনটনের সংসারে কষ্ট করে নিজের স্কুল-কলেজের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে চান্স পেয়েছেন আকাশ।তবে অর্থাভাবে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার স্বপ্ন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এমন দুঃখ-দুদর্শার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন থেকে পিছু হটার উপক্রম মেধাবী এই শিক্ষার্থীর।
দরিদ্র পরিবারের দারিদ্র্যকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিনন্দনসহ আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজাবে রহমত। এ সময় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট ফজলুল হক, উপজেলা কৃষি অফিসার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, উপসহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে মেধাবী শিক্ষার্থী জানান, দরিদ্র পিতা-মাতার অভাব অনটনের সংসারে অনেক কষ্ট করে আমাকে লেখাপড়া করতে হয়েছে। স্কুল জীবন থেকেই স্বপ্ন ছিল বিশ্ববিদ্যালয় পড়বো। স্বপ্ন পূরণের সেই সুযোগ পেয়েছি। তবে এ দুঃসময়ে ইউএনও স্যার পাশে এসে না দাঁড়ালে, সহযোগিতার হাত না বাড়ালে হয়তো আমার দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যেতো। আমি ইউএনও মিজাবে রহমত স্যার এর নিকট চিরকৃতজ্ঞ। ভবিষ্যতে আমি প্রশাসন ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা হয়ে পরিবারের হালধরার পাশাপাশি দেশের জন্য কাজ করতে চাই। তবে এখনো অনেকটা পথ যেতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন অনেকের সহযোগিতা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজাবে রহমত বলেন, অর্থাভাবে একটি মেধাবী ছেলের সুন্দর ভবিষ্যত এবং স্বপ্ন কখনো নষ্ট হতে পারে না। আমরা যারা সমাজের দায়িত্বশীল জায়গায় রয়েছি সমাজের প্রতি আমাদের অনেক দায়িত্ব এবং কর্তব্য রয়েছে। সেই দায়িত্ববোধ থেকে গরিব মেধাবী শিক্ষার্থী আকাশকে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার সুযোগ করে দিতে তার পাশে দাঁড়িয়েছি। সে দেশের স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ পেয়েছে। এটা জেনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসাবে নিজেকে ধন্য মনে করছি। তবে লক্ষে পৌছানোর জন্য তার অনেক সহযোগিতার প্রয়োজন। এ বিষয়ে আমি স্থানীয় অনেককেই তার পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজাবে রহমত বলেন, তার যে আর্থিক অবস্থা ভাল নেই এটা কোন বাধা না, মনোবলটাই আসল। তার উচ্চ শিক্ষা চালিয়ে যেতে সব রকম সহযোগিতা করা হবে।
তাছাড়া মাননীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি মহোদয়ও তার জন্য সকল প্রকার সহযোগিতা দেয়ারও প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।