স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহ সিভিল সার্জন অফিসের ক্যাশিয়ার এমরান মেহেদী হাসান আরিফের বিরুদ্ধে প্রাইভেট ক্লিনিক,অনলাইনে নিবন্ধন আবেদন, নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের নবায়ন আবেদনসহ নানা বিষয়ে প্রক্রিয়া ও বাস্তবায়নের নামে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী বরাবরে একটি অভিযোগ জমা হয়েছে। সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ তার এসব অনিয়ম দুর্নীতি ও অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে সত্যতা পেয়েছে । ক্যাশিয়ার এমরান মেহেদি হাসানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চলতি বছরের মার্চ মাসে পরিচালক (স্বাস্থ) ঢাকা বিভাগের ৩ জন কর্মকর্তা তদন্ত করে অনিয়ম পেয়ে বর্তমান কর্মস্থল থেকে বদলির সুপারিশ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (ক্লিনিক ও হাসপাতাল) বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করেছে, যার স্বারক নং- ৬২০।
সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ অনেক বেসরকারি ক্লিনিক চালাতে হলে, এমরান মেহেদী হাসানকে টাকা দিতে হয়। অনলাইনে প্রাইভেট ক্লিনিক নিবন্ধন আবেদন করতেও তাকে টাকা দিতে হয়। এখান থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। অনেককে ভয় ভীতি দেখিয়েছেন। অবৈধ ক্লিনিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনায় লিস্ট করেন। তার ইশারায় চলে অনেক কিছু। বৈধ হয়েও অবৈধ আবার অবৈধ বৈধ তিনিই সব করেন । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুকদের মুখের কথা এসব। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ঢাকা সূত্রে জানা গেছে, অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ ও বেপরোয়া অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ফিরিস্তি তুলে ধরে অভিযোগ করা হয়েছে। দুদক প্রধান কার্যালয় তদন্ত করছে তার নামে। যার স্বারক নং-০০.০১.০০০০.৫০৩.২৬.১৪১.২১-২৯০৬৮ । ময়মনসিংহ সিভিল সার্জন অফিসসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ঘুষের টাকা নথির সঙ্গে গাঁথা থাকে । সিভিল সার্জন অফিসের সিন্ডিকেটে ভাগ-বাটোয়ারার নিয়ন্ত্রকও তিনি।
ক্যাশিয়ার এমরান মেহেদী হাসান মিডিয়ার সামনে নিজেকে আড়াল করতে জাকির হোসেন ও পিএ সুলতানকে দোষারোপ করেন। অজুহাত দেখিয়ে বিভিন্ন বিভাগকে ম্যানেজ করে পুরো বিষয়টি ধামাচাপা চেয়ার চেষ্টা করে থাকেন। এক মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে দাপট দেখিয়ে ঐদুইজনকে তিনি কোনঠাসা করে রাখেন বলেও অভিযোগ।
এছাড়ও তার অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে কৌশলে প্রাইভেট ক্লিনিক সুরক্ষা আবার টাকা দিলে বৈধ দেখিয়ে নির্দিধায় পরিচালিত করতে পারেন । তার সম্পদের তদন্ত করলেই সত্যটা বেরিয়ে আসবে এমনটাই দাবি সংশ্লিষ্টদের। সাম্প্রতিক অভিযানে ময়মনসিংহ নগরীর চরপাড়ায় আবেদন করা নতুন ক্লিনিকগুলোতে অভিযান পরিচালিত হয়নি। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ৭দিনের মধ্যে অবৈধ ক্লিনিক বন্ধের নির্দেশও উপেক্ষিত। থাকার পরও সবই হচ্ছে ক্যাশিয়ার এমরান মেহেদী হাসানের ছত্রছায়ায়।
এসব প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মিত মাসোহারা গ্রহন, অভিযানকালে দালালদের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা নিয়ে অভিযান বন্ধ রাখা, টাকা দিয়ে অবৈধ হয়েও বৈধ হয়ে প্রাইভেট ক্লিনিট পরিচালিত হয় ময়মনসিংহ জেলা, উপজেলা এবং নগর এলাকার প্রাইভেট ক্লিনিক হাসপাতালে। যে কারণে ভুল চিকিৎসা,ভুয়া ডাক্তার,ভুয়া নার্স, সহকারি ও টেকনিশিয়ান দিয়েও পরিচালিত হচ্ছে এসব অবৈধ ক্লিনিকের চিকিৎসা কার্যক্রম। সাধারণ মানুষ সুচিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, এমরান মেহেদি হাসান ময়মনসিংহের একজন যুবলীগ নেতা ও একজন মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে উপরোক্ত কর্মকান্ড পরিচালিত করছেন, কোন কিছুর বা কাউকে তোয়াক্কা করে না।
তার অবৈধ আয়ের একটি বড় অংশ তার ভাই, স্বজনদের নামে- বেনামে জমা করেছেন বলেও শোনা যায় । ক্যাশিয়ার এমরান মেহেদী হাসান আরিফের মোবাইল নাম্বারে বার বার তার বক্তব্য নিতে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। ময়মনসিংহ জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার নজরুল ইসলাম জানান, আমি দুর্নীতির সাথে জড়িত না।