ত্রিশাল প্রতিদিন ডেস্ক:: সাউথ কোরিয়া, এক সম্ভবনাময় শ্রমবাজার। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বেতনের যে কয়টা দেশ আছে তাদের মধ্যে সাউথ কোরিয়া প্রথম ৫ এ অবস্থান করছে। বোয়েসেলের মাধ্যমে সাউথ কোরিয়াতে বৈধভাবে শ্রমিক প্রেরণের বয়স প্রায় এক যুগ হতে চললো তবুও সফলতার মুখ এখনও দেখতে পারছেনা বলে মনে করছে অনেকেই। শ্রমিক প্রেরণে বোয়েসেল বার বার হোচট খাচ্ছে। করোনা মহামারীতে সঠিক সতর্কতা অবলম্বন করতে না পারায় দুই দুইবার ভিসা নিষেধাঙ্গার কবলে পড়তে হয়েছে বাংলাদেশকে। সকল প্রতিকূলতা ঠেলে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে আবারও কর্মি প্রেরণ শুরু হলেও বোয়েসেলের বিরুদ্ধে নানা প্রশ্ন উঠছে। বিশেষ করে সাউথ কোরিয়া গমনের আগে ৭ দিনের হোটেল কোয়ারেন্টিন নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই।
সাউথ কোরিয়া গমনের আগে সকল প্রকার ভিসাধারীদের (ইপিএস জেনারেল এবং রি-এন্ট্রি ভিসাধারী ব্যাতিত) বোয়েসেলের তত্বাবধানে ৭ দিন হোটেলে কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আর এজন্য যাত্রীর কাছ থেকে জনপ্রতি নেয়া হচ্ছে ২৫ হাজার টাকা। কোয়ারেন্টিনের এই ৭ দিনে দুইবার করোনা টেস্ট করা হবে, আর এর জন্য নেয়া হচ্ছে আরও অতিরিক্ত ৪ হাজার টাকা! হোটেলের পরিবেশ ও খাবারের মান নিয়েও অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও করোনা টেস্টের জন্য অতিরিক্ত ৪ হাজার টাকা নেয়া বাতিল করার দাবী জানিয়েছেন অনেকেই।
সাউথ কোরিয়ায় অনেক ব্যবসায়ী, স্টুডেন্ট ও চাকুরিজীবি আছেন যারা স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে কোরিয়া থেকে বাংলাদেশে গিয়ে সেখান থেকে আবার কোরিয়া ফিয়ে আসার আগে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কিভাবে কোয়ারেন্টিন করতে হবে, তাদের জন্য বিশেষ কোন প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে কিনা, তারা যদি হোটেলের একই রুমে কোয়ারেন্টিন করে তাহলে তাদেরকে কত টাকা পরিশোধ করতে হবে এসবের কিছুই উল্ল্যেখ করা হয়নি বোয়েসেলের প্রকাশ করা বিজ্ঞপ্তিতে।
তবে, সবচেয়ে বড় এবং মূল্যবান প্রশ্ন উঠেছে ট্রানজিট নিয়ে সাউথ কোরিয়া প্রবেশ করা যাত্রীদের নিয়ে। বোয়েসেলের অধিনে প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ করে হোটেলে ৭ দিন কোয়ারেন্টিন করিয়ে বাংলাদেশের বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইটে উঠিয়ে দেয়া হলো কোন যাত্রীকে। তার ফ্লাইটটি কোন একটা দেশে ট্রানজিট নিয়ে সাউথ কোরিয়া প্রবেশ করবে। কোন কোন দেশে ১৯ ঘন্টা, কোন দেশে ২৮ ঘন্টাও ট্রানজিট রয়েছে। এমতাবস্থায় সেই যাত্রী যখন কাতার/মালয়েশীয়া/থাইল্যান্ড অথবা সিঙ্গাপুরে লম্বা সময় ট্রানজীটে থাকবে তখন সে শত শত মানুষের সংস্পর্শে আসবে এবং সেখান থেকেও সে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। সেই ক্ষেত্রে ঢাকায় বোয়েসেলের অধিনে ৭ দিনের হোটেল কোরারেন্টিনের কোন মুল্য থাকছেনা। এটাকে অযথা টাকা ও সময় খরচ বলে মনে করছেন ভূক্তভোগী যাত্রীরা।
এমতাবস্থায়, করোনা প্যান্ডামিক স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ-সাউথ কোরিয়া সরাসরি ফ্লাইট চালু করার দাবী জানিয়েছে অনেক যাত্রী। যদি ফ্লাইট চালু করা যায় তাহলে যাত্রীদের দূর্ভোগ অনেকটাই লাঘব হবে বলে মনে করছে অনেকেই। যদি এটা করা সম্ভব না হয় তাহলে দুই ডোজ ভ্যাক্সিনের টিকাপ্রাপ্ত কোরিয়া থেকে বাংলাদেশে এসে আবার কোরিয়া ফিরে যাওয়া যাত্রীদের ৭ দিনের হোটেল কোয়ারেন্টিন ব্যাবস্থা বাতিল করে বিমানবন্দরে ইনস্ট্যান্ট পিসিআর টেস্টের মাধ্যমে ইমিগ্রেশন পাস করার ব্যাবস্থা করার দাবী জানিয়েছে সাউথ কোরিয়াগামী অনেক যাত্রী।