ত্রিশাল প্রতিদিন ডেস্কঃ চীন থেকে উৎপত্তি মরণব্যাধি করোনা ভাইরাস বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৫০০’র মতো মানুষ মারা গেছে। এছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।চীনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে এ পর্যন্ত ফিলিপিন্স ও হংকংয়ে দুই চীনা নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে নতুন এ ভাইরাসে, যাকে বলা হচ্ছে নভেল করোনাভাইরাস।চীনের মূল ভূখণ্ডে এ পর্যন্ত যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে একজন জাপানি ও একজন মার্কিন নাগরিক রয়েছেন, বাকিরা সবাই চীনা নাগরিক। সোমবার নতুন ২৪৭৮ জনের মধ্যে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় চীনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৬৩৮ জনে।
চীনের বাইরে অন্তত ২৫টি দেশে আড়াইশর বেশি মানুষের দেহে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে তথ্য দিয়েছে সিএনএন।সিঙ্গাপুরের এর আগে দেশটিতে করোনাভাইরাসের মোট ৪৫ জন রোগী শনাক্ত হয়েছিল। তার মধ্যেও একজন বাংলাদেশি ছিলেন।এখন রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৪৭ জন আক্রান্ত তাতে বাংলাদেশির সংখ্যা দুজন ।
এভাবেই ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস বাংলাদেশে এ ভাইরাসের তেমন কোন আক্রান্তের খবর ছিলনা ।কিন্তু ইদানিং এর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবরে সবার মাঝাে করোনাভাইরাসের আতংক বিরাজ করছে । মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার যশলদিয়া গ্রামে আকস্মিক জ্বরে আক্রান্ত্র হয়ে ১৮ ঘন্টার ব্যবধানে চাচী ও ভাতিজার মৃত্যুর ঘটনায় করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) দিবাগত রাত দুইটার দিকে ওই গ্রামে শামীমা বেগম (৩৪) মারা যান। তিনি গ্রামের মীর জুয়েলের স্ত্রী। এর আগেই গ্রামে একই পরিবারের মীর জুয়েলের ভাই মীর সোহেলের ছেলে আব্দুর রহমান (৩) মারা যায়। এরা দুইজনই আকস্মিক জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে পরিবার নিশ্চিত করেছে।
মীর জুয়েল ও মীর সোহেলের ভাই মীর শিবলী জানান, রোববার রাতে আকস্মিক জ্বরে আক্রান্ত হন তার ভাবী শামীমা বেগম। ধীরে ধীরে তার শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। একই সঙ্গে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাল লাল ছোপ দেখা দেয়। এরপর ঘন্টা খানেকের ব্যবধানে তিনি মারা যান।
এর আগে তার ভাই মীর সোহেলের ছেলে আব্দুর রহমান আকস্মিক জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রবিবার সকাল ৮ টার দিকে মারা গেছে। আব্দুর রহমান জ্বরে আক্রান্ত হলে মুহুর্তে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাল লাল ছোপের চিহ্ন ফুটে উঠে। ধীরে ধীরে শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। ঘন্টা খানেকের ব্যবধানে মৃত্যুকোলে ঢলে পড়ে সে।
এদিকে, যশলদিয়া গ্রামে চাচী ও ভাতিজার মৃত্যুর খবর জানাজানি হলে চীনে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গ্রাম জুড়ে ওই ভাইরাস আতঙ্কে নারী-পুরুষ ও শিশুরা বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না।
বিষয়টি নিয়ে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কাবিরুল ইসলাম খান বলেন, ঘটনার পরপরই লৌহজং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. কামরুল ইসলাম প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ করে জানান, তাদের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। করোনাভাইরাসের কোনো লক্ষণ তাদের মধ্যে ছিল না। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে কাজ শুরু করেছে মেডিকেল টিম। প্রয়োজনে নমুনা সংগ্রহ করে আইসিআরডিতে পাঠানো হবে। তবে এই মূহুর্তে মৃত্যুর সঠিক কারন বলা যাচ্ছে না।
এদিকে, জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করে লৌহজং উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শামীম আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, সিভিল সার্জন অফিস ও উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মেডিকেল টিম পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে অবগত করা হয়েছে। তাদের করোনাভাইরাসজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে কিনা এ বিষয়ে তদন্ত করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসবেন কিনা এখনো তা সিদ্ধান্ত নেয়নি। এ মুহূর্তে তাদের মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাচ্ছে না। তদন্ত ও রিপোর্ট দেখার পর বলা যাবে কি কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে।