কামরুজ্জামান মিনহাজঃ ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার সুযোগ্য অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাইন উদ্দিন ।ভালুকা থাকাকালীন অবস্থায়ও তার মানবিকতার কথা লোকমুখে আর সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানতে পাড়লেও এখন তার বাস্তবতা নিজ চোখে দেখার সুযোগ হয়েছে। পুলিশের পোশাকের বাহিরে একজন সাদা মনের মানবিক এই অফিসার সর্বদাই হয়ত খুঁজে বেড়ায় সমাজের অসহায় অবহেলিত মানুষগুলোকে।
আবারো তেমনি এক মানবিকতার পরিচয় দিলেন (ওসি) মাইন উদ্দিন। অসহায়ত্ব আর দরিদ্রতার ছোবলে আক্রান্ত হয়ে মৃত প্রায় ক্ষত-বিক্ষত দেহাবশেষ বাচিয়ে রাখার তাগিদে ক্ষুধা নিবারন কিংবা সংসারের হাল ধরার দায়িত্ব থেকে পিছু না হটা এক পথশিশু পাশে দাড়ালেন তিনি। এক পায়ে ভর করে বিশ্ব জয়ের পথে নয় বরং পিতার অবর্তমানে মা-বোনের দায়িত্ব নিয়ে পৃথিবীতে বেচে থাকার যে আকুতি তাতে হয়তো পাষাণের মন না কাঁদেও ভাবিয়েছিল উপস্থিত সবাইকে। একটি পা সড়ক দূর্ঘটনায় বিচ্ছিন্ন হলেও বাকি আরেকটা পা দিয়ে পরিবারের জন্য সমাজের দু-পা ওয়ালা মানুষের কাছে সাহায্যের দূর্বল হাত বাড়িয়ে তাকিয়ে থাকে সবল মুখগুলোর দিকে।
শনিবার (৩১জুলাই) ভাগ্য বিড়ম্বনায় সাহায্যের আশায় ভয়ে-ভয়ে শক্ত ভারী কাঠের ক্রেচারে ভর করে থানার গোলঘরে উপস্থিত হয় ছেলেটি। সেখানে বেশ কয়েকজন সাংবাদিকদের সাথে বসে ছিলেন ওসি মাইন উদ্দিন । শিশুটিকে দেখে আঁতকে উঠেন ওসি । কাছে ডেকে নিয়ে জানতে চাইলেন কিভাবে কি হয়েছিল, পরিবারে কে কে আছেন?
উত্তরে জানায় ,সড়ক দূর্ঘটনায় পা হারাবার পর পিতার মৃত্যু । বিশ্ব সংসারে বেঁচে থাকার অবলম্বন মা আর বড় তিন বোনকে নিয়ে তার অস্বচ্ছল সংসারের করুন কাহিনী। কাঠের ক্রেচার আর ক্ষত চিহ্নগুলো অনেক ভারী তার জীবন চলার পথে। ওসি মাইন উদ্দিন কিংকর্তব্যবিমুর খানিকক্ষন নিশ্চুপ থেকে পকেট টাকা বের করে দিয়ে বললেন -“এটা দিয়ে তো তোর অনেক কষ্ট হয় ” আমি তোর জন্যে হালকা দেখে এ্যালোমিনিয়ামের একটা ক্রেচার আনিয়ে রাখবো তুই আগামীকাল এসে নিয়ে যাবি। এভাবেই সমাজের অবহেলিত মানুষের জন্য নিরবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে থাকেন ত্রিশালের মানবিকতায় বিরল ওসি মাইন উদ্দিন। হয়ত আপনাদের মনে হতে পারে কেন বারবার উনার মানবিকতা নিয়ে লেখি? উত্তর আপনারা যা ভাবছেন তা হয়তো না। আমরা চাই এভাবে সবাই এগিয়ে আসুক সমাজের অবহেলিতদের পাশে। আরো উৎসাহী হক ভালকিছুর দিকে। অস্থায়ি এই জীবনে রেখে যাক কিছু স্থায়ি ভাল কাজ আর ভালবাসা।