আরিফ রববানী,ময়মনসিংহঃ ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার বাসকড়ি গ্রামের একই পরিবারের দুই প্রতিবন্ধী ভাইয়ের পাশে দাড়ালো জেলা প্রশাসক এনামুল হক । পাশাপাশি সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিদেরও এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি। ওই সময় তিনি বলেন, এই দুই প্রতিবন্ধী ভাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সার্বিক সহযোগিতা করবে জেলা প্রশাসন। তাদের নাম মারুফ (২৫)ও রাকিব (২০)।
ত্রিশাল উপজেলার বইলর ইউনিয়নের বাসকড়ি গ্রামে বসবাস করে ভ্যান চালক ওয়াজেদ আলীর পরিবার।পরিবারটির উপার্জনের অবলম্বন দুই ভাই মারুফ ও রাকিব শারীরিক প্রতিবন্ধী। স্ব-শরীরে চলাফেরা করা তাদের যেখানে সম্ভব নয়,সেখানে সংসারের চাহিদা পুরণে উপার্জন করতে অপারগ হওয়ায় এ পরিবারের দুর্ভোগের শেষ নেই। জেলা প্রশাসক বিষয়টি অবগত হয়ে তাদের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে সহযোগিতার বাড়ান।
প্রতিবন্ধী দুই ভাইয়ের নিকটাত্মীয় একজন বলেন, রক্তে সমস্যার কারণে বড় ছেলে মারুফ (২৫) ১২বছর বয়স থেকে ও ছোট ছেলে রাকিব (২০) ৯ বছর বয়স থেকে শারীরিক ভাবে দুর্বল হওয়া শুরু করে শারীরিক প্রতিবন্ধীর রুপ নেয়। চলাফেরা করতে পারেনা। সময়ের সঙ্গে, সমাজের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করতে করতে এরা এখন ভীষণ ক্লান্ত। বয়স বাইরা যাওয়ায় এখন কারোরই নিজের ওপর ভরসা নাই। অভাবের কারণে এরা অহন নিজের জীবনের প্রতি ভালোবাসা হারায়া ফেলছে। তাদের পারিবারিক অবস্থা অস্বচ্ছল হওয়ায় প্রতিবন্ধী দুই ভাইকে নিয়ে পরিবারটি দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। জেলা প্রশাসক এনামুল হক এর মাধ্যমে হহুল চেয়ার পেয়ে তাদের মাঝে আনন্দের সীমা নেই।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক), পুলক কান্তি চক্রবর্তী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো: সফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) নজরুল ইসলাম সহ প্রতিবন্ধী দুই ভাইয়ের নিকটাত্মীয়রা।
জন্মের একজন ১২বছর বয়স থেকে ও আরেকজন ৯বছর বয়স থেকে বিছানায় পড়ে থাকা শারীরিক প্রতিবন্ধী দুই মারুফ ও রাকিব তাদের পরিবারের করুণ চিত্র নিয়ে সোমবার সকালে বলতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হন।
এদিকে জেলা প্রশাসকের মানবতায় হুইল চেয়ারে বসতে পেরে হাসি ফুটেছে প্রতিবন্ধী মারুফ ও রাকিব এর মুখে। হুইল চেয়ারটি পাওয়ার পর তাতে বসে বাড়ির আশপাশ ঘুরে দেখতে পারবেন এই আনন্দে আবেগে আপ্লূত হন।
মারুফ ও রাকিব এর বাবা ভ্যান চালক ওয়াজেদ আলী সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন,
এই দুই প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে আমি অনেক কষ্টে আছি আমি। আমাদের এই দুর্ভোগে পাশে দাড়িয়ে মানবতার পরিচয় দেওয়ায় জেলা প্রশাসক স্যারের প্রতি আমি ধনবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। এদের চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমি আমার সমস্ত উপার্জন ব্যয় করেছি। বর্তমানে শুধু ঘরের ভিটেটা আছে। বর্তমানে আমি অসুস্থ। অসুস্থ শরীর নিয়ে ভ্যান চালনোর পাশাপাশি দিনমজুর কাজ করে যা আয় হয়, তা দিয়ে কোনোমতে সংসার চালাই। শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলে দু’টির সু-চিকিৎসা করাতে পারলে হয়তো ভালো হতে পারতো।