উপকূলীয় দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে ভেসে আসা একটি মনুষ্যবিহীন জাহাজ

বাংলাদেশের উপকূলীয় দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে ভেসে আসা একটি মনুষ্যবিহীন জাহাজ নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য । স্থানীয়দের অনেকেই এটিকে ‘ভূতুড়ে জাহাজ’ বলছে। সাইক্লোন সিত্রাংয়ের প্রভাবে উত্তাল সমুদ্রে ভেসে ‘পরিত্যাক্ত’ এই জাহাজটি সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভেসে এসেছে বলে ধারণা করছে কোস্ট গার্ড। তবে এটি কেন পরিত্যক্ত করা হয়েছে এ প্রশ্নের উত্তর তারাও খুঁজছে।উৎসুক কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জাহাজের দড়ি বেয়ে উপরে উঠে কোন মানুষকে দেখতে পাননি। তবে ভেতরে কয়েকটি কক্ষ তালাবদ্ধ অবস্থায় পেয়েছেন।

জাহাজটি’র গায়ে এর নাম লেখা রয়েছে এম আর ৩৩২২। এর সূত্র ধরে জানা যায় এটি সিঙ্গাপুরে’র পতাকাবাহী একটি বার্জ। মেরিনা টোয়েজ প্রাইভেট লিমিটেডে’র মালিকানা’য় নিবন্ধনকৃত এ জাহাজটি ১১০.৬ মিটার দীর্ঘ এবং ৩০ মিটার চওড়া একটি মালবাহী বার্জ। বার্জ হলো মালবাহী একটি নৌযান যেটিকে অন্য কোন নৌযান বা টাগবোট দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। বার্জে’র সাধারণত নিজস্ব ইঞ্জিন থাকে না।

চট্টগ্রাম বন্দরে আগত জাহাজগুলো’র যে তালিকা বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রকাশ করে তা থেকে দেখা যায় এই নৌযানটি এবছরেই একাধিকবার বাংলাদেশে এসেছে। এবছরের ৮ই সেপ্টেম্বরে’র একটি তালিকাতেও জাহাজটি’র কথা উল্লেখ রয়েছে, যেখানে বলা হয় বার্জটি মালয়েশিয়া’র একটি বন্দর থেকে নয় হাজার টনের বেশি পাথর বহন করে এনেছে। জাহাজটি’র নিবন্ধনের তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, ২০০৮ সালে তৈরি করা এই বার্জটি ১০ হাজার টন মালামাল বহনে সক্ষম।

চট্টগ্রাম বন্দরের তালিকা থেকে গত জুন মাসেও বার্জটিকে কক্সবাজারে’র কুতুবদিয়ায় নোঙর করে থাকতে দেখা যায়। এর বাইরে জাহাজটি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেনি জার লজিস্টিকস।

সেন্ট মার্টিন দ্বীপের কোস্ট গার্ড স্টেশন কমান্ডা’র লেফটেন্যান্ট রাগিব তানজুম বলছেন, প্রতিকূল আবহাওয়া’র কারণে তারা নিজেরা জাহাজটিতে উঠে পর্যবেক্ষণ করতে পারেননি। তবে তারা এটুকু নিশ্চিত হতে পেরেছেন যে এতে কোন মানুষ ছিল না।

স্থানীয়দে’র মধ্যে যারা জাহাজটিতে উঠেছেন তারা কোস্ট গার্ডকে জানিয়েছেন যে জাহাজটি’র কার্গো রাখার স্থানটিতে কিছু বালি অথবা পাথরে’র বস্তা রয়েছে। মি. তানজুমও বলছেন, এধরণের বার্জ অনেকক্ষেত্রে ভিন্ন কোন নৌযান দিয়ে টানা হয়। তবে এটি তুলনামূলক বেশ বড় আকারে’র বার্জ। কোন নাবিক ছাড়া জাহাজটি যেভাবে ভেসে এসেছে তাতে বার্জটিকে সচেতনভাবেই পরিত্যক্ত করা হয়েছে বলেই প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে কোস্ট গার্ড। প্রতিকূল আবহাওয়া বা অন্য কোন কারিগরি গোলযোগের কারণে বার্জটি পরিত্যক্ত করে থাকতে পারেন নাবিকরা অথবা আবহাওয়ার কারণে বার্জটি টাগবোট থেকে ছুটে গিয়ে থাকতে পারে।