আজ ত্রিশাল মুক্ত দিবস

ছবি: ত্রিশাল মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ।

এস,এম ফজলে রশীদ:: আজ ৯ ডিসেম্বর ত্রিশাল মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা প্রাণপণ যুদ্ধ করে ত্রিশালকে পাক হানাদার মুক্ত করেন। এ যুদ্ধের নেতৃত্ব দেন আফছার ব্যাটালিয়ানের এফ, জে ১১ নম্বর সেক্টরের যুদ্ধকালীন কোম্পানী কমান্ডার আঃ বারী মাষ্টার।

মুক্তিযোদ্ধা আবেদ আলী মেকার কর্তৃক দেয়া তথ্য পর্যালোচনা করে ৮ ডিসেম্বর রাত ১২ টার সময় বেদখলকৃত ত্রিশাল থানা আক্রমণের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। অতঃপর ত্রিশাল থানার দক্ষিণ দিকে মাত্র কয়েক’শ গজ দুরে সুতিয়া নদীর কুল ঘেঁষা জঙ্গলে মুক্তিযোদ্ধারা সশস্ত্র অবস্থান নেয়। সারারাত প্রচন্ড গুলাগুলিতে ত্রিশাল শহর প্রকম্পিত হয়ে উঠে। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে রাজাকাররা ভোরের দিকে ত্রিশাল থানার দখল ছেড়ে পিছু হটতে বাধ্য হয়। এ যুদ্ধে আত্মঘাতি বুলেটে শহীদ হন মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন।

যুদ্ধ চলার সময় কোম্পানি কমান্ডার ফয়েজ উদ্দিনের নেতৃত্বে আরেকটি মুক্তিযোদ্ধা গ্রুপ আঃ বারী মাষ্টারের কোম্পানীতে এসে যোগ দিলে পুরো রণক্ষেত্র মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রনে চলে আসে। এসময় মুক্তিযোদ্ধারা ধাওয়া করে ৪ জন রাজাকারকে হাতে নাতে ধরে ফেলে এবং রাজাকারদের নিকট থেকে ২৬ টি রাইফেল উদ্ধার করেন। থানা দখলের সংবাদ পেয়ে জনতা আনন্দ উল্লাসে ত্রিশাল শহরের কবি নজরুল একাডেমী মাঠে সমবেত হতে থাকে।

৯ ডিসেম্বর সকাল ৮ টার দিকে ভারতের জঙ্গি বিমান থানার বিভিন্ন অঞ্চলে সেলিং করতে থাকে। সকাল ৯ টার সময় জনতার ব্যাপক আনন্দ উল্লাস ও অশ্রুজল হাসির মধ্য দিয়ে ত্রিশাল কবি নজরুল একাডেমী মাঠে তৎকালীন আওয়ামীলীগের সভাপতি মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জৈমত আলী মাষ্টার,সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুল আলম,জেলা আ’লীগের সাবেক যুগ্ন আহবায়ক আলহাজ্ব নবী নেওয়াজ সরকারের বাবা মাহতাব উদ্দিন সরকার,বর্তমান মেয়র এবিএম আনিছুজ্জামানের বাবা প্রাক্তন চেয়ারম্যান আবুল হোসেন সরকার ও ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক সাবেক এমপি বর্তমান উপজেলার চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল মতিন সরকারসহ নাম না জানা অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ পাকিস্তানী পতাকা পুড়িয়ে ত্রিশালের মুক্ত আকাশে পাকহানাদারমুক্ত স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করা মাত্রই ত্রিশালের আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হয়ে উঠে স্বাধীনতার সেই চিরচেনা সুর, জয় বাংলা-বাংলার জয়।

ত্রিশালমুক্ত দিবস পালন উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তন্মধ্যে শহীদদের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পন, মুক্তদিবসের র‌্যালি, মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, আলোচনাসভা ইত্যাদি।