টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতা এবং ঠিকাদারের অনিয়ম ও নিম্নমানের কাজের কারণে নাগরপুর উপজেলার ভাদ্রা-দপ্তিয়র সড়কের ধুনাইলে সংস্কার কাজের এক মাসের মধ্যেই ৫০০ মিটার রাস্তা দেবে গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী। তারা ঝুঁকি নিয়ে ওই সড়ক দিয়ে চলাচল করছেন। যে কোনো সময় পুরো রাস্তা ধসে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে গত মঙ্গলবার নাগরপুর এলজিইডির প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের শাস্তির দাবিতে মিছিল, সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
নাগরপুর উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, গত অর্থবছরে উপজেলার ভাদ্রা-দপ্তিয়র সড়কের ধুনাইলে ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫০০ মিটার রাস্তার সংস্কার কাজ করা হয়। এ কাজ বাস্তবায়ন করে মেসার্স খান ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। রাস্তা সংস্কারের কাজ গত অর্থবছরে শেষ করার কথা থাকলেও তা শেষ হয় এ বছরের আগস্টের প্রথম সপ্তাহে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এ রাস্তা নির্মাণে পর্যাপ্ত বরাদ্দ থাকলেও ঠিকাদার নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করেন। ফলে রাস্তার এমন বিপর্যয় ঘটে।
ভাদ্রা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইমন খান রুবেল বলেন, এই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী হাজারো মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল রাস্তার এ অংশ মেরামত করা। স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকর্তাদের গাফলতি, দায়িত্বহীনতা ও নজরদারির অভাবে ঠিকাদার নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করেছেন। ফলে এক মাসের ব্যবধানেই রাস্তাটি দেবে গেছে।
দপ্তিয়র ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নিতুজ্জামান তনির বলেন, রাস্তা সংস্কারের শুরু থেকেই অনিয়ম ও দুর্নীতি শুরু হয়। নিম্নমানের সামগ্রী ও গাইড ওয়াল নির্মাণের সময় পুরনো গাছের গুঁড়ি রেখেই কাজ করা হয়। উপজেলা প্রকৌশলী ও ঠিকাদের দুর্নীতির বিষয় নিয়ে আমরা সে সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দিয়েও কোনো ফল পাইনি।
ধুনাইল গ্রামের ফরিদুজ্জামান আনসারী বলেন, রাস্তাটি নির্মাণের সময় ঠিকাদারকে অনেকবার বলা হয়েছে ভালো মানের ইট ব্যবহার করতে, কিন্তু তারা অনেকটা বাতিল ইট ব্যবহার করেছেন। এ ছাড়া বিটুমিনও ছিল অনেক নিম্নমানের। রাস্তার দু’পাশের পাড়গুলোও ঠিকভাবে বাঁধা হয়নি। ভালোভাবে মাটি ভরাট না করে গাইড ওয়াল করা হয়েছে। ফলে গাইড ওয়ালের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরে রাস্তাটি দেবে গেছে।
ঠিকাদার আসাদুজ্জামান কিসলু বলেন, নিম্নমানের কোনো সামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি। নির্বাহী প্রকৌশলী ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পরিদর্শন করেছেন। আমি ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাটি পুননির্মাণ করে দেব।
টাঙ্গাইল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম আজম বলেন, নতুন মাটি ভরাট করে কাজ করা হয়েছে। মাটি লুজ থাকার কারণে দেয়াল দেবে গেছে। ঠিকাদারের কাজ শেষ হয়নি, টাকাও পরিশোধ করা হয়নি। আগামী দু-একদিনের মধ্যেই ওই ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার পিচ উঠিয়ে মেরামত করা হবে।