ত্রিশাল প্রতিদিন ডেস্ক:: ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালে ওসির বিরুদ্ধে মঠবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুসকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) এ ঘটনার পর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তবে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেন ওসি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ‘গত বৃহস্পতিবার (২১ জুন) সন্ধ্যার পর মঠবাড়িয়া ইউনিয়নের পোড়াবাড়ি বাজারে অভিযান চালিয়ে কারেন্ট জাল বিক্রির অভিযোগ আবুল কাশেম নামের এক দোকানদারকে আটক করে পুলিশ। ত্রিশাল থানার এসআই মাসুদুর রহমান ও এনামুলের নেতৃত্বে পুলিশ এই অভিযান চালায়। পরে কাশেমকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য আমার ছেলে কামরুজ্জামানসহ (মঠবাড়িয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি) আরও কয়েকজন পুলিশের কাছে সুপারিশ করে। পরে পুলিশ টাকা দাবি করলে এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর পোড়াবাড়ি বাজার কমিটির সদস্যদের নিয়ে আমি নিজেও কাশেমকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য সুপারিশ করি।’
তিনি জানান, ‘এই ঘটনা মধ্যেই এসআই মাসুদ মোবাইল ফোনে ওসি জাকিউর রহমানকে জানান যে আমার ছেলে কামরুজ্জামান ও তার সহযোগীরা পুলিশের ওপর হামলা করে আসামি ছিনিয়ে নিয়েছে। এই খবর পেয়ে ত্রিশাল থানা থেকে ফোর্স নিয়ে রাত ১০টার দিকে ওসি জাকিউর রহমান এসে গাড়ি থেকে নেমেই জনসন্মুখে আমাকে গালি দিয়ে চর থাপ্পর মারতে মারতে মাটিতে ফেলে দেন। এসময় এসআই মাসুদ ও এনামুলসহ ৫-৬ জন পুলিশ সদস্য হামলা চালিয়ে আমাকে লাঠিপেটা, কিল-ঘুষি, বুকে পা দিয়ে লাথি মেরে নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে তাদেরও লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করা হয়।’
তিনি আরও জানান, ‘পুলিশের নির্যাতনের সময় আমার জামা কাপড় ছিঁড়ে যায়। শুধু লুঙ্গি পরা অবস্থায় আমাকে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। গাড়িতে তুলে নিয়ে পুলিশের পায়ের নিচে শুইয়ে বুট দিয়ে নির্যাতন করে। পরে সাবেক এমপি আব্দুল মতিন সরকারসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা থানায় আসার পর রাতেই আমাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। তিনি পুলিশের অমনাবিক নির্যাতনের ঘটনায় দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিচার দাবি করেছেন।’
নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করে ওসি জাকিউর রহমান জানান, ‘গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর পুলিশ মাদকবিরোধী অভিযান চালাতে গেলে চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দসের ছেলে কামরুজ্জামান ও তার সহযোগীরা পুলিশের কাজে বাধা দেয়। তার উপস্থিতিতে পুলিশের সঙ্গে চেয়ারম্যান ও অন্যান্য লোকজনের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পরে চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুসকে থানায় আনা হয়। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা থানায় এসে ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে চেয়ারম্যানকে নিয়ে গেছে।’
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অর্থোপেডিকস সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাইফুল ইসলাম জানান, আব্দুল কুদ্দুস গত মঙ্গলবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তার বাম পায়ের গোড়ালির নিচের হাড়ে ফাটল আছে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। সুত্র:সময় নিউজ।