ভোগাই ও চেল্লাখালী নদী ভেঙে ১২টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত

আজ শনিবার (০৫ই অক্টবর) সকাল থেকে নালিতাবাড়ী উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, কোথাও পাহাড়ি ঢলের পানি বাড়ছে, আবার কোথাও পানি কমতে শুরু করেছে। এ ছাড়া অনেক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করায় প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন গ্রাম। পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এবং পানির তোড়ে সড়ক ভেঙে যাওয়ায় নালিতাবাড়ীর সঙ্গে শেরপুরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে ৷ পানিতে সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় পৌর শহর থেকে বিভিন্ন ইউনিয়নের যোগাযোগও বন্ধ রয়েছে।

সরেজমিন উপজেলার পোড়াগাঁও, নন্নী, বাঘবেড় ও নয়াবিল ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন সড়ক পাহাড়ি ঢলের তোড়ে ভেঙে গেছে। ঢলের পানিতে উপজেলার অনেক কাঁচা রাস্তা ও বাড়িঘর ভেঙে গেছে। বেশ কিছু রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে আছে। ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর বাঁধ ভেঙে ও উপচে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির পানিতে এলাকার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পোড়াগাঁও, নয়াবিল, রামচন্দ্রকুড়া, বাঘবেড়, নন্নী, কলসপাড়, যোগানিয়া, নয়াবিল, মরিচপুরান, রাজনগর ইউনিয়নসহ পৌরসভার গড়কান্দা ও নিচপাড়া এলাকা প্লাবিত হয়। এসব এলাকার বিভিন্ন স্থানে নদীর বাঁধ ভেঙে ও পাড় উপচে প্রবল বেগে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এতে ১২টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। জলাবদ্ধতায় ৩৫ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।

এদিকে উপজেলার সব সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন। এতে আজ সকাল থেকে সেনাবাহিনীর ৬০ জন সদস্য ছয়টি স্পিডবোটের মাধ্যমে পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসছেন। এ ছাড়া বিজিবি ও স্বেচ্ছাসেবীরা উদ্ধার ও ত্রাণকার্য পরিচালনায় সহায়তা করছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল ওয়াদুদ বলেন, উপজেলায় বাঘবেড়, যোগানিয়া, নয়াবিল, কলসপাড়, পোড়াগাঁও ইউনিয়নে প্রায় ১০ হাজার টন আমনের ফসল এবং ৭০ হেক্টর শাকসবজির খেত পানিতে ডুবে গেছে। পানি নেমে গেলে প্রকৃতপক্ষে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ রানা বলেন, ‘উপজেলার ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর বাঁধ ভেঙে ও পাড় উপচে ১২টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। সব সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সেনাবাহিনী, বিজিবি ও স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে উদ্ধারকাজ ও শুকনো খাবার বিতরণ চলছে। বিভিন্ন স্থান থেকে খাদ্যসহায়তা পাচ্ছি। তবে আমাদের আরও শুকনা খাবার প্রয়োজন।’ সূত্র-আজকের পত্রিকা