আরিফ রববানী ময়মনসিংহ:ময়মনসিংহে ঈদুল আজহায় সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ।
জেলা পুলিশের এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি শাহ কামাল আকন্দের দিকনির্দেশনা মোতাবেক থানার আওতাধীন তিনটি পুলিশ ফাঁড়ি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন শাখার সমন্বিত প্রচেষ্টায় নগরবাসীর জন্য নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ওসি শাহ কামাল আকন্দ জানান- দেশের চতুর্থ বৃহত্তম মহানগরী ময়মনসিংহ নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থা সচল রাখতে এবং নগরীতে বাড়তি নজরদারির জন্য বিদ্যমান ট্রাফিক সদস্যের বাইরেও ৬’শ ৭৩ জন পুলিশ সদস্য ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এরই অংশ হিসেবে সিটি কর্পোরেশনের অনির্ধারিত স্থানে সড়ক মহাসড়কের উপর পশুর হাট বসতে দেয়া হচ্ছে না। কোরবানীর পশু বহনকারী যানবাহনে চাঁদাবাজি কঠোর হস্তে মোকাবেলা করা হচ্ছে।
নগরীর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বিদ্যমান ১’শ ৪০টি সিসি ক্যামেরা ছাড়াও কোরবানী ঈদ উপলক্ষে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ও কোরবানীর পশুর হাট এলাকায় প্রয়োজনে আরো সিসি ক্যামেরা স্থাপনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানা গেছে। স্বাভাবিক অবস্থায় নগরীতে আইনশৃঙ্খলা নজরদারিতে জেলা পুলিশের দিনের বেলায় ৫ টি মোবাইল টিম এবং রাতে ১০ টি মোবাইল টিম টহল পরিচালনা করা হচ্ছে। কোতোয়ালি মডেল থানা ও থানার অধীনস্থ তিনটি ফাঁড়ির মোট ৪ টি মোবাইল টিম দিনের বেলায় এবং ৫টি মোবাইল টিম রাতে নিয়মিত টহল পরিচালনা করে আসছে। ঈদ উপলক্ষে নগরীর বাস স্ট্যান্ড ও জনাকীর্ণ রাস্তার মোড়ে সাদা পোশাকে পুলিশ বাহিনী তৎপর রয়েছে। এই নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা চলবে আগামী কাল ৬ জুলাই থেকে ১৪ জুলাই (২০২২) পর্যন্ত আরো কঠোরভাবে কাজ করবে। পশুর হাটে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও জেলা পুলিশের যৌথ উদ্যোগে জাল নোট সনাক্তকরণ যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে।
ঈদ আনন্দকে নিরবিচ্ছিন্ন উৎসবমুখর করতে জেলা পুলিশের পাশাপাশি ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন এবং ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন নিজ নিজ উদ্যোগে জনকল্যাণকর কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বলেও জানা গেছে। ব্যাংক কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে জানা গেছে- কোন গ্রাহক যাতে ব্যাংক টাকা উত্তোলন ও লেনদেন করতে ভয় না পায় সেজন্য প্রতিটি ব্যাংকের সামনের পুলিশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।কোরবানির পশু কেনাকাটায় ক্রেতা-বিক্রেতারাদের নির্ভয়ে লেনদেন ও পশু বিক্রি করে টাকা নিয়ে বাড়ী ফিরতে সমস্যা না সেজন্যও নেওয়া হয়েছে নিরাপত্তার ব্যবস্থা।এমনকি কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ নিজে শারিরিক ভাবে অসুস্থ থাকলেও কোতোয়ালীবাসীর নিরাপত্বার জন্য স্ব-শরীরে নিজেও বিভিন্ন কোরবানি পশুর হাট পরিদর্শন করছেন।শুনছেন মানুষের সমস্যার কথা সমাধানও করছেন।
সেই ধারাবাহিকতায় কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ্ কামাল আকন্দ (পিপিএম-বার) বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই ২০২২) তারিখ বিকেলে সার্কিট হাউজ মাঠ, দাপুনিয়া বাজার, চর খরিচা, বোররচর, কাঠগোলা বাজারসহ বিভিন্ন কোরবানি পশুর বাজার পরিদর্শন করেন। এ সময় সংশ্লিষ্ট বাজারগুলোর ইজারাদার,ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
ওসি শাহ্ কামাল আকন্দ বিক্রেতা ও ইজারাদারদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেন। পশুরহাটে করোনা সংক্রমনের ঝুঁকি এড়াতে এবার পুলিশ ইজারাদার স্থানীয় প্রশাসন সবাই মিলে কাজ করে যাচ্ছে। মাস্ক, গ্লাবস পড়া এবং নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখার জন্য বাজারে অনবরত মাইকিং করা হচ্ছে। পাশাপাশি হাটে ডুকতে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যারা গরু কিনতে আসবে তাদের যেন করোনা সংক্রমন না হয়। পশু হাটে বৃদ্ধ, অসুস্থ এবং শিশুরা যাতে না আসে সেজন্য বিভিন্ন মাধ্যমে অনুৎসাহিত করা হচ্ছে।
নিরাপত্তার ব্যাপারে ওসি কামাল বলেন, দূর দুরান্ত থেকে পাইকারদের টাকা ছিনতাই চুরি ডাকাতি ও মলম পার্টির খপ্পর রোধে সার্বক্ষণিক পুলিশ কাজ করছে। ব্যাংকে যেন টাকা জমা রাখতে পারে ব্যাংকে লেনদেনের সময় বাড়ানো হয়েছে। সময়ের পরেও বিক্রির টাকা ইজারাদারদের মাধ্যমে পুলিশ পাহারায় টাকা রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিরাপত্তাকে স্বাস্থ্য ঝুঁকির সমভাবে গুরুত্ব দিচ্ছি।
ওসি বলেন, আমাদের দেশের খামারীরা কষ্ট করে সারা বছর পশু পালন করে। তাদের বিবেচনা করে স্বাস্থ্য ঝুঁকিটাকে মাথায় রেখে গরুর হাটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে যাতে প্রান্তিক কৃষকরা তাদের জীবিকার জন্য রাস্তায় না বসে। অনুমোদনকৃত জায়গায় বসে পশু বিক্রি করে তারা সংসারের অভাব অনটন মিটাতে পারে। এসময় তিনি চুরি,ছিনতাইসহ যেকোন দুর্ঘটনা এড়াতে গরু মালিক, ইজারাদার ও বিক্রেতাদের সতর্ক থাকার আহবান জানান।