ত্রিশাল প্রতিদিন ডেস্কঃ ঘর থেকে বাইরে যাবার সময় মা বলেন বাইরের কোন কিছু না খেতে। বাইরের খাবার যেমন খারাপ তেমনি ভয়ংকর কড়ে নিতে পারে জীবন।এমনি আশংকায় মা বাবারা সব সময় বলতেন বাইরের খাবার না খেতে।এমনি এক ঘটনার শিকার ময়মনসিংহের গৌরীপুরের ডৌহাখলা ইউনিয়নের সুস্মিতা হোম চৌধুরী (মন্টি)। হকারের কাছ থেকে কেনা জুস পান করে মারা গেছেন। ময়মনসিংহের ব্রিজের মোড় থেকে কেনা জুস খেয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে বুধবার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।
জানা গেছে, মুমিনুন্নেছা কলেজ থেকে গণিতে অনার্স ও সদ্য মাস্টার্স পাস করেছেন তিনি। দুটোতেই প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়ে গত সপ্তাহে ঢাকায় আসেন।ঢাকায় আসার পথে ময়মনসিংহ ব্রিজের মোড় থেকে পানি কেনেন।
সে সময় দুই শিশু তার কাছে জুস বিক্রি করার জন্য খুব অনুনয় বিনয় করে। বাচ্চাদের এরকম অনুনয় বিনয়ে তার মায়া হয়। একটা জুসের বোতল কিনে নেন তিনি। বোতলটি ব্যাগে রেখে দেন পরে খাবেন কিংবা তার ছোট ভাগ্নেকে দেবেন বলে।
কিন্তু জুসের কথা তিনি ভুলে যান। ভাগ্নে কিংবা তার নিজের আর খাওয়া হয় না। ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে ব্যাগের কাপড় সরাতে গিয়ে জুসের বোতল চোখে পড়ে। এরপর তিনি মাকে বলেন, আজ রাতে ভাত খাব না, শুধু একটু দুধ আর এই জুস খেয়ে নেব।
তার মা আর জোর না করলে জুস খেয়ে ঘুমাতে যান তিনি। পরদিন সকালে আর তার ঘুম ভাঙে না। যে মেয়ে প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে ওঠে, সকাল ১০ টায়ও তার জেগে ওঠার খবর নেই!
জোর করে যখন তার ঘুম ভাঙানোর চেষ্টা চলছে তাকে, বিছানায় বসানো হলেও তিনি আর মাথা তুলতে পারেননি। ডাক্তার নিয়ে আসা হলে প্রাথমিক চিকিৎসা চলে। তবে অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনদিন চিকিৎসা চলে সেখানে। অবস্থার তেমন পরিবর্তন না হওয়ায় ডাক্তাররা ঢাকা পাঠানোর পরামর্শ দেন।
কিন্তু ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পথে শারীরিক অবস্থার অবণতি হতে থাকে তার। ত্রিশালের কাছ থেকে পুনরায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফিরে আসে। তখন ডাক্তার জানালেন, সুস্মিতা আর বেঁচে নেই।
এত কিছুর পর আমরা কতটা সাবধানতা অবলম্বন করব এটাই দেখার বিষয়।