স্মরণকালে’র সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় শেরপুরে ৬ জনে মৃত্যু

শেরপুরে বন্যা

স্মরণকালে’র সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত শেরপুরে। ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সীমান্তবর্তী জেলাটি’র চারটি পাহাড়ি নদীর উজানে পানি কমতে শুরু করলেও ভাটি এলাকায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ নিয়ে জেলা’র পাঁচ উপজেলা’র ৩০টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি অবস্থায় দুর্ভোগে পড়েছে প্রায় দুই লাখ মানুষ। নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতীতে বন্যা’র পানিতে ডুবে দুই ভাইসহ ছয়জনে’র মৃত্যু হয়েছে।নালিতাবাড়ী থানা’র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছানোয়া’র হোসেন এসব মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আকস্মিক বন্যায় শেরপুরে’র নালিতাবাড়ী’র খলিশাকুড়ির খলিলুর রহমান (৬৫), আন্ধারুপাড়া’র ইদ্রিস আলী (৬৬), নিশ্চিন্তপুর কুতুবাকুড়া গ্রামে’র দুই ভাই আলম (১৭) ও হাতেম (৩০), বাঘবেড় বালুরচরে’র ওমেজা বেওয়া পানিতে ডুবে মারা গেছেন। এছাড়া ঝিনাইগাতী’র সন্ধাকুড়া থেকে একজন উদ্ধার হয়েছেন। তবে তার পরিচয় পাওয়া যায়নি। সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে বন্যায় আটকে পড়াদে’র উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে। তবে পানি’র প্রবল স্রোত আর পর্যাপ্ত নৌযানে’র অভাবে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে।

নালিতাবাড়ী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। পানিতে এলাকার গুরুত্বপূর্ণ অনেক সড়ক এবং বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলে’র জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া ঝিনাইগাতি ও শ্রীবরদী উপজেলার বিরাট এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে’র কারণে অনেক জায়গা বসত বাড়ি ঘর ধসে গেছে এবং শস্য ও গবাদিপশুর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পোড়াগাঁ ও নয়াবিল ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি’র তথ্য পাওয়া গেছে। ভোগাই ও চেল্লাখালী নদী’র বাঁধ ভেঙে বহু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে গত কয়েকদিনে। এসব এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় আলাদা করে নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা।

শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলার ভোগাই নদীর নাকুগাঁও পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার, নালিতাবাড়ী পয়েন্টে ৪৮ সেন্টিমিটার এবং চেল্লাখালীর ২৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অপর দু’টি পাহাড়ি নদী মহারশি ও সোমেশ্বরীর পানি এখনও বিপদসীমা’র সমান রয়েছে। এছাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে ব্রহ্মপুত্র, মৃগী ও দশানী নদীর পানি। শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাকিবুজ্জামান খান বলেন, আগামীকাল সোমবারে’র ভেতর কমবে সব নদীর পানি, উন্নতি হবে বন্যা পরিস্থিতি’র।