স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত ত্রিশাল বাসি পরিত্যক্ত ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র

জোবায়ের হুসেন ::গ্রামের প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা পৌ‍ঁছে দেয়ার লক্ষ্যে ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ময়মনসিংহের ত্রিশালের সদর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের দ্বিতল ভবনটি জনবল সংকটের ফলে চালু করতে না পারায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন যাবৎ। নষ্ট হচ্ছে ৫ লক্ষাধিক টাকার আসবাবপত্র ও বিভিন্ন সরঞ্জামাদি যেন দেখার কেও নেই। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কোনো উদ্যোগ না থাকার ফলে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কয়েক হাজার মানুষ।
২০০৬ সালে স্থানীয় আবদুল আজিজ সরকার ও আফাজ উদ্দিন সরকারের দান করা সাড়ে ৩২ শতাংশ জমির উপর নির্মিত হয় উপজেলার ত্রিশাল সদর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের দ্বিতল ভবনটি। পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ওই সেবা কেন্দ্রে জনবল নিয়োগের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ বেশ কয়েকবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন করেছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় জনবল নিয়োগে কোনো উদ্যোগ না নেয়ায়  সুচিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কয়েক  হাজার  মানুষ।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, এ সকল কেন্দ্রে বিনামূল্যে মা ও শিশু স্বাস্থ্য সেবা, গর্ভবতী সেবা, গর্ভোত্তর সেবা, এম, আর সেবা, সাধারণ রোগীর সেবা, ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের সেবা, প্রজননতন্ত্রের/যৌনবাহিত রোগের সেবা, ই,পি,আই সেবা, ভিটামিন এ ক্যাপসুল বিতরণ, পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক পরামর্শ প্রদান, খাবার বড়ি, জন্মনিরোধক, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক শিক্ষামূলক সেবা, পরিবার কল্যাণ সহকারী কর্তৃক বাড়ি বাড়ি পরির্দশনের মাধ্যমে প্রদত্ত বিনামূল্যে সেবা প্রদানের জন্য উপজেলার ১২ ইউনিয়নের মধ্যে ১১ টি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র রয়েছে। তারমধ্যে ত্রিশাল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি জনবল না থাকায় চালু করা যাচ্ছে না।
দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও ওই সেবা কেন্দ্রে কোনো জনবল নিয়োগ না দেয়ায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কয়েক হাজার  মানুষ। সদর হাসপাতাল থেকে ৭ কিলোমিটার দুরে  অবস্থিত ওই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন গর্ভবতী মায়েরা। জনবল সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে ওই ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার আসবাবপত্র ও বিভিন্ন সরঞ্জামাদি নষ্ট হচ্ছে।
স্থানীয় নাজমুল হক  জানান, আমার গর্ভবতী স্ত্রীর প্রসব ব্যথা শুরু হলে উপজেলা সদর হাসপাতালে নেয়ার সময় পথিমধ্যে সন্তান প্রসব হয়ে যায়। শুধু আমার স্ত্রীর বেলায় নয় এমন অনেক ঘটনা-ই এই এলাকাতে ঘটেছে। তাই দ্রুত এই কেন্দ্রে জনবল নিয়েগের  জন্য জোর দাবি জানাই।
 ত্রিশাল থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্ষের মা ও শিশু স্বাস্থ্য বিষয়ক মেডিকেল অফিসার ডা. লুৎফুর কবীর জানান, এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে জনবলের অভাবে গ্রামের মাও শিশুদের স্বাস্থ্য সেবা দেয়া যাচ্ছেনা। বিকল্প হিসেবে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা মাধ্যমে কিছু সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নাজমুর রওশান সুমেল জানান, ২০০৬ সালে নির্মিত ওই সেবা কেন্দ্রে জনবল নিয়োগের জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে বেশ কয়েকবার লিখিত আবেদন করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান ব্যয়বহুল পরিত্যক্ত ভবনটিসহ আসবাবপত্র ও বিভিন্ন সরঞ্জামাদি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া খুবই জরুরী।