আবার যৌবন ফিরে পাবে ব্রহ্মপুত্র নদ, খননের দরপত্র আগামী সপ্তাহে

ব্রহ্মপুত্র নদ ময়মনসিংহ

ত্রিশাল প্রতিদিন ডেস্ক:: ব্রহ্মপুত্র নদ এশিয়া মহাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। সংস্কৃত ভাষায় ব্রহ্মপুত্রের অর্থ হচ্ছে “ব্রহ্মার পুত্র।ব্রহ্মপুত্রের উৎপত্তি হিমালয় পর্বতমালার কৈলাস শৃঙ্গের নিকট জিমা ইয়ংজং হিমবাহে, যা তিব্বতের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। সাং পো নামে তিব্বতে পুর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে এটি অরুণাচল প্রদেশে ভারতে প্রবেশ করে যখন এর নাম হয়ে যায় সিয়ং। তারপর আসামের উপর দিয়ে দিহং নামে বয়ে যাবার সময় এতে দিবং এবং লোহিত নামে আরো দুটি বড় নদী যোগ দেয় এবং তখন সমতলে এসে চওড়া হয়ে এর নাম হয় ব্রহ্মপুত্র। তারপর এটি ময়মনসিংহ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মেশে। উৎপত্তিস্থল থেকে এর দৈর্ঘ্য  ২৯০০  কিলোমিটার। ব্রহ্মপুত্রের প্রধান শাখা হচ্ছে যমুনা। এক কালের প্রশস্থ ব্রহ্মপুত্র নদ বর্তমানে (২০১১) শীর্ণকায়।

কালের ক্রমবর্ধমান বয়ে চলায় উজানের পলি ও বালু জমে  চর পরে এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। বর্তমান সরকারের সুনজর পরায় আশার আলো দেখছে ময়মনসিংহ বাসি। খননের মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্রের নাব্যতা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ফলে এই নদের বুকে আবার চলাচল করবে মালবাহী ভারী নৌযান কার্গো ও ভেসেল জাহাজ।আর ময়মনসিংহ ফিরে পাবে যৌবন পূর্ণ নদ ও তার সৌদর্য।

প্রকল্পটি সফল হলে নাব্যতা সংকটের মুখে থাকা এই নদের হারানো যৌবন ফিরিয়ে এনে আবারও জাহাজ ও কার্গো চলাচল করতে পারবে। চাহিদার ওপর ভিত্তি করে লোকালয় বা বাজারে গড়ে ওঠবে ১৪টি ঘাট। পাশাপাশি দুটি জাহাজ চলাচলের জন্য নদটি ৩০০-৩৫০ ফুট প্রশস্ত ও ১০ ফুট গভীর করা হবে। নদটির ৮ কোটি ঘনমিটার অংশ ক্যাপিটাল ড্রেজিং করা হবে। খননের পর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও পালন করবে বিআইডব্লিউটিএ।

জানা গেছে, ‘পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের নাব্যতা উন্নয়ন ও পুনরুদ্ধার’ প্রকল্পটির বাস্তবায়নে দরপত্র আগামী সপ্তাহে আহ্বান করা হবে। সব কিছু ঠিক থাকলে এর কার্যক্রম শুরু হবে চলতি বছরের মার্চে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের কয়েকটি জেলার আর্থ-সামাজিক উন্নতির অন্যতম সোপান এই ব্রহ্মপুত্র নদটি খননে উদ্যোগী হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুরনো ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তুলাই ও পুনর্ভবার নাব্যতা উন্নয়ন ও পুনরুদ্ধারে চার হাজার ৩৭১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় গত বছরের ২ অক্টোবর অনুমোদন করা হয়। এর মধ্যে তিন হাজার কোটির ওপরে টাকা ব্যয় হবে ব্রহ্মপুত্র খননে।