মোঃ রাসেল হোসেন::ময়মনসিংহের তারাকান্দায় মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের চেষ্টা কালে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে চালক মেহেদী হাসান গোলাপ হত্যাকান্ডের মুলহোতা ডিবির অভিযানে গ্রেফতার হয়েছে। তার নাম ইমরান মিয়া। নেত্রকোণার পুর্বধলার কালডোয়ার দক্ষিণপাড়া গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে। গ্রেফতারকৃত ইমরান বুধবার পুলিশ ও আদালতের কাছে হত্যাকান্ডের স্বিকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গত ২৩ জানুয়ারী রাতে তারাকান্দার চিকবিল হাওর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি শাহ মোঃ কামাল আকন্দ জানান, নেত্রকোণার পুর্বধলার কালডোয়ার গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালামের একমাত্র ছেলে মেহেদী হাসান গোলাপ পারিবারিক চাহিদা মেটাতে একটি নতুন মোটর সাইকেল কিনেন এবং ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতে থাকে। গত ২৩ জানুয়ারী সন্ধ্যায় নেত্রকোণার পূর্বধলার হুগলা বাজার থেকে ২ যাত্রী ময়মনসিংহের তারাকান্দা যাওয়ার কথা বলে তার মোটর সাইকেল ভাড়া নেয়। পরে ঐ দুই ভাড়াটিয়া গোলাপকে নিয়ে তারাকান্দার চিকবিল নামক হাওর এলাকায় যাওয়ামাত্র জোর পূর্বক মোটর সাইকেল থামিয়ে মোটরসাইকেলটি ছিনতাইয়ের চেষ্ঠা করে। এ সময় মেহেদী হাসান গোলাপ বাধা দিলে তারা গোলাপের পেটে ছুরিকাঘাত করে মারাত্বক আহত করে। এ সময় তার আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়। স্থানীরা গুরতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার তরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঐ রাতেই সে মারা যায়।
ওসি শাহ কামাল আকন্দ আরো জানান, এ ঘটনায় তারাকান্দা থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা নং-১৭, তাং ২৫/০১/২০১৯ ইং হয়েছে। মর্মান্তিক এ ঘটনাকে আলোচিত ঘটনাকে অধিক গুরুত্ব সহকারে প্রাধান্য দিয়ে পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেনের নির্দেশে ডিবি পুলিশকে তদন্তের দায়ভার দেওয়া হয়। ডিবি পুলিশের দায়িত্বশীল পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) শাহ কামাল ডিবির এলআইসি বিভাগের এসআই পরিমল চন্দ্র সরকারকে এ হত্যাকান্ডের তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করেন। একইসাথে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার সাথে জড়িতদের সনাক্ত এবং তাদের অবস্থান নিশ্চিত করতে তাদেরকে গ্রেফতারের উদ্যোগ নেন দায়িত্বশীল ওসি শাহ কামাল। এক পর্যায়ে হত্যাকান্ডের সাতদিনের মধ্যে মঙ্গলবার রাতে ডিবি পুলিশের ওসির নেতৃত্বে এসআই পরিমল চন্দ্র সরকার হত্যাকান্ডের মূলহোতো ইমরান আলীকে তার নিজ এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারকৃত ইমরান আলীর বরাত দিয়ে ওসি শাহ কামাল আরো বলেন, পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে সে মর্মান্তিক এ হত্যাকান্ডের বিস্তারিত তথ্য এবং দায় স্বীকার করে। তাকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি এবং ভিকটিম গোলাপের কাছ থেকে ছিনতাইকৃত মোবাইলসেট উদ্ধার করা হয়। ভিকটিমের ক্রয়কৃত নতুন মোটরসাইকেলটি ছিনতাইয়ের জন্যই সে এবং তার সহযোগী আগে থেকেই পরিকল্পনা করেছিল বলেও পুলিশের এ কর্মকর্তা গ্রেফতারকৃত ইমরানের দেওয়া তথ্য মতে জানান। ওসি আরো বলেন, এ হত্যাকান্ডের অপর সহযোগীকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে। অল্প সময়ের মধ্যে তাকেও গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলে তিনি দাবী করেন। বুধবার তাকে আদালতে পাঠানো হলে, ইমরান হত্যাকান্ডের বিশদ বর্ণনা দিয়ে এবং তার নিজের জড়িত থাকার কথা বলে স্বিকারোক্তি প্রদান করেছেন।