মুক্তাগাছায় গড়ে উঠেছে লাইসেন্সবিহীন অবৈধ সার ও কীটনাশকের দোকান-০১

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় লাইসেন্সবিহীন অবৈধ ভাবে গড়ে উঠেছে সার ও কীটনাশক বিক্রয়ের দোকান। এদিকে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের তেমন ভুমিকা না থাকায় এবং ডিলারদের অতিরিক্ত মুনাফার লোভে মুলত এভাবে বিক্রি করছে সার ও কীটনাশক। ফলে বৈধ  লাইসেন্সধারী ব্যবসায়ীদের মাঝে দেখা দিয়েছে নানা ক্ষোভ।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন আনাচে কানাচে লাইনেন্সবিহীন অবৈধ সারের দোকানে বিক্রি হচ্ছে এসব সার ও ঔষধ। যেখানে বৈধ লাইসেন্সধারী ব্যবসায়ীগন সার না পেলেও অবৈধ সার বিক্রেতাগন ঠিকই সার পাচ্ছেন। সরেজমিনে গিয়ে বৈধ লাইসেন্সধারী সার বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া যায়। উপজেলার দাওগাঁও ইউনিয়নে বৈধ লাইসেন্সধারী সার বিক্রেতার সংখ্যা যেখানে ৯ জন সেখানে অবৈধ সার বিক্রেতার সংখ্যা ৩২ জন। এমন পরিসংখ্যান উপজেলা জুড়েই। দাওগাঁও ইউনিয়নের ডিলার রাখাল বাবু অতিরিক্ত মুনাফার লোভে এসব অবৈধ সার ব্যবসায়ীদের কাছে সার বিক্রি করেন বলে জানান বৈধ সার বিক্রেতারা। আর অবৈধ সার বিক্রেতাগনও স্বীকার করেছেন যে,তারা রাখাল বাবু ও তার ভাই নৃপেন সরকারের কাছ থেকেই সার ক্রয় করে এনে বিক্রয় করছেন তারা। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন রাখাল বাবু। তিনি এই বিষয়ে কোন বক্তব্য দিতে পারবেননা জানিয়ে বলেন,আমি নিরীহ লোক কোন ঝামেলায় পড়তে চাইনা। এদিকে দাওগাঁও ইউনিয়নে গড়ে উঠা ৩২ টি অবৈধ সার দোকানের মালিকদের সাথে কথা বললে তার জানান, সার রাখাল বাবু এবং তার ভাই নৃপেন সরকারের গোডাউন থেকে তারা কিনে এনে বিক্রি করছেন। দাওগাঁও ইউনিয়নে অবৈধ সার বিক্রেতারা হলেন, তালতলী মহেষপুর এলাকার সুরুজ মিয়া ও মিজানুর রহমান।খাজুলিয়া কাচারী বাজার এলাকার চান মিয়া ও রুস্তম আলী।মহেশপুর সমাহার বাজারের রফিকুল ইসলাম, খাজুলিয়া সিমান্ত বাজারের আশিক মিয়া, মহেশপুর সুলতানের বাজারে জামাল ও রফিকুল। চন্দনীআটা এলাকার আঃ কাদের ও শাজাহান, রাজাবাড়ী বাজার এলাকায় আসলাম,তোফাজ্জল, আলাল, নজরুল, পাবইজান এলাকার জালাল হযরত, গোদাপাড়া আমতলা এলাকার শাহীন ও হারেছ, কাঠবাওলা বাজারে শরিফুল৷  , শুশুতি বাজারে মুসা ও শরিফুল,দাওগাঁও সুইচ গেট এলাকার জালাল, দাওগাঁও পূর্ব পাড়া হাছেন আলী,বটতলা বাজার এলাকায়, বাবুল,মোস্তাক,রুকু,জাহিদ,মোতালেব,নাজিম উদ্দিন ও হাফিজ উদ্দিন, রাঙ্গামাটিয়ার সুলাইমান ও পুড়াবাড়ির রাজ্জাক মুন্সির দোকানে এসব সার ও ঔষধ বিক্রি করা হচ্ছে।

 উপজেলার দাওগাঁও ইউনিয়নের খুচরা সার বিক্রেতা এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ( কেএসবিএবি)’র সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ বৈধ সার বিক্রেতাগন জানান, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ৩০ হাজার টাকা জমার মাধ্যমে বৈধ লাইসেন্স দিয়ে ব্যবসা করে আসছেন তারা। প্রত্যেক বৈধ সার বিক্রেতাদের লক্ষ লক্ষ টাকা কৃষকের কাছে বকেয়াও রয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় লাইনেন্স না নিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে অনেকেই । এতে করে ঐ সকল কৃষকগন তাদের টাকা পরিশোধ না করেই অন্য (অবৈধ) দোকান থেকে সার ক্রয় করায় একদিকে যেমন সার বিক্রি করতে পারছেন না অপরদিকে তাদের বকেয়া টাকা গুলো উঠিয়ে আনতে পারছেন না তারা। সুনির্দিষ্ট আইন থাকার পরও কেন বা কোন অদৃশ্য শক্তির ছত্রছায়ায় তা প্রয়োগ হচ্ছে না বা কোন ব্যবস্হা গ্রহণ করা হচ্ছে না তা বোধগম্য নয় বলে জানান বৈধ ব্যবসায়ীরা। এমতাবস্থায় অতি দ্রুত লাইসেন্সবিহীন অবৈধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার জন্য উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বৈধ ব্যবসায়ীরা।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ এমদাদুল হক জানান, অবৈধভাবে স্যার বিক্রয়, বিতরণ বিপণন ও সংরক্ষণ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যদি এমন হয়ে থাকে এবং অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।