ফকরুদ্দীনআহমেদ: মানুষ মানুষের জন্য কথাটি চির সত্য প্রমান করলেন ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার নির্বাহী অফিসার জুয়েল আহমেদ।
উল্লেখ্য-গত মঙ্গলবার উপজেলা বৈলর ইউনিয়ন পৃর্ব চরপাড়া ফরিদা বেগম নামের এক গৃহিনীর জট লাগানো দুটি যমজ কন্যা সন্তান হয়েছে। সংবাদ পেয়ে উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফকরুদ্দীন আহমেদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সাথে সাথে ছুটে যান ঐ এলাকায়।
অনেক খোঁজা খোঁজির পর এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা তাদের স্কুলের ছাত্র দিয়ে ঐ জন্ম নেওয়া জট লাগানো যমজ শিশুর বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। এর পর তথ্য নেওয়া হয় গৃহিনীর নাম ফরিদা খাতুন, তার স্বামীর নাম আলামিন মিয়া বৈলর চরপাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা ওরা।
জট লাগানো যমজ শিশুর মাতা-পিতার সাথে কথা হলে তিনি জানান, তাদের এই সন্তান দুটো ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘ প্রচেষ্ঠার পর অপারেশন এর মাধ্যমে সুস্থ ভাবে ভূমিষ্ট হয়েছে। এই ভূমিষ্ট হওয়া শিশু দুটি জট হওয়া ডাক্তার তাদের পরামর্শ দিয়েছিল ঢাকা কোন একটা বড় হাসপাতালে নিয়ে যেতে। অর্থের অভাবে ঢাকা না নিয়ে বাড়িতে চলে আসেন। বাড়িতে এসে সন্তান দুটোর নাম রাখেন একজন জান্নাত ফেরদৌস আরেকজন ফাতেমা আক্তার। সন্তান দুটো আলাদা মুখ, আলাদা চোখ, আলাদা হাত পা ও শরীরের অন্যান্য সব অঙ্গ। আলাদা ভাবে এদের খাবার দিতে হয়, আলাদা ঘুমায় শুধুই জট হওয়ার কারণে এক বিছানায় শুয়াতে হয়।
এভাবে নিরাশ হয়ে বিপাকে পড়ে নিরব কান্নায় ভেঙ্গে পরেন শিশু দুটির মা ও বাবা। হঠাৎ সাংবাদিকের উপস্থিতি পেয়ে আবেগ আপ্লোত কন্ঠে বলতে লাগলো সন্তানের জন্য অর্থের প্রয়োজন। সরকার আর বিত্তবান ব্যক্তিরা যাতে সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসেন আর সকলের সহয়তায় যেন উন্নত চিকিৎসা করে সন্তান দুটোকে আলাদা করা যায়। এই স্বাক্ষাতকার ভিডিও করে সাংবাদিকরা তাদের নিজস্ব ফেইজবুক আইডিতে পোস্ট করে বিভিন্ন পত্রিকায় নিউজ করলে , মর্হুত্যেই ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশ।
পরে সংবাদ পেয়ে ত্রিশালের উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুয়েল আহমেদ সরাসরি ছুটে যান জট লাগানো বাচ্চা দুটোকে দেখতে। এই জট লাগানো শিশু দুটিকে দেখে বৃহস্পতিবার তাঁর নিজ উদ্যোগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
এই মানবিক কাজের জন্য ত্রিশালের মানুষ ইউএনও জুয়েল আহমেদকে দীর্ঘদিন মনে রাখবে।