ত্রিশাল প্রতিদিন ডেস্ক::কাল শুরু হচ্ছে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বাইবা পরীক্ষা। মনোনয়ন লাভে ইচ্ছুকদের পরীক্ষা নেবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড। মনোনয়ন বোর্ডের নেতৃত্ব দেবেন দেশনেত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, ৫ টি বিষয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের। মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতির কাছে থাকবে মাঠ জরিপের ফলাফল।
মাঠ জরিপ কিংবা তৃণমূলের মতামতই একমাত্র বিবেচ্য বিষয় নয়। মনোনয়ন লাভের ৫ টি ভিত্তিমূল নির্ধারণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি। এই ভিত্তিগুলো হলো:
১. এলাকা সম্পর্কে তাঁর জ্ঞান। এলাকার ভোটার, এলাকা, সমস্যা, সম্ভাবনা ইত্যাদি সম্পর্কে প্রার্থী কতটা জানেন। নির্বাচনে জয়ী হলে এলাকা নিয়ে কর্ম পরিকল্পনা।
২. এলাকার জন্য তাঁর অবদান। যদি এমপি হয়ে থাকেন, তাহলে বিগত দিনে তাঁর উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ড। আর যদি এমপি না হন তাহলে, এলাকার জন্য তাঁর বিশেষ অবদান।
৩. নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগে তাঁর অবস্থান, অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং গ্রুপিং এ জড়িত কিনা। আওয়ামী লীগের জন্য তাঁর অবদান। বিশেষ করে সংকটকালে (যেমন: ওয়ান ইলেভেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, ২০১৪, ১৫ আগুন সন্ত্রাস) তাঁর দৃঢ়তা ও ভূমিকা। কতদিন ধরে আওয়ামী লীগ করছেন। অন্য কোনো দল থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন কিনা। বিশেষ করে কখনো বিএনপি বা জামাতের সঙ্গে জড়িত ছিলেন কিনা।
৪. প্রার্থীর আর্থিক সক্ষমতা। নির্বাচনের অর্থ কোথায় থেকে পাবেন। আয়ের উৎস। বিগত ১০ বছরে কী ধরনের কাজ করেছেন। নির্বাচনে কীভাবে ব্যয় করবেন।
৫. প্রার্থীর ইমেজ। ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, নিয়োগ বদলী বাণিজ্য, চাঁদাবাজির অভিযোগ আছে কিনা। ওই মনোনয়ন প্রত্যাশীর বিরুদ্ধে মাদক এবং সন্ত্রাসের কোনো অভিযোগ রয়েছে কিনা।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, প্রচলিত ভাষায় যাঁদের ‘হাইব্রিড’ বলা হয়, অর্থাৎ যারা অন্য দল থেকে বিশেষ করে বিএনপি-জামাত থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে, তাঁদের কোনোভাবেই মনোনয়নের জন্য বিবেচনা করা হবে না। এমনকি তাঁরা যদি জনপ্রিয় হন, তারপরও তাঁদের মনোনয়ন দেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের একজন সদস্য বলেছেন, ‘আমরা ক্লিন ইমেজের প্রার্থী বাছাই করবো। যিনি এলাকায় একটি পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি গড়ে তুলেছেন। যিনি এলাকার জন্য নিবেদিত প্রাণ। যাঁর বিরুদ্ধে এলাকায় সন্ত্রাস, মাদক এবং দুর্নীতির অভিযোগ নেই। যিনি এমপি হলে এলাকার জন্য কাজ করবেন- এরকম প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে।’ অন্য একজন সদস্য বলেন, ‘এমপি হওয়ার পর তিনি যদি এটাকে টাকা বানানোর সুযোগ মনে করেন, সেক্ষেত্রে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। তিনি বলেছেন, ‘আমরা দলের ত্যাগী, পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির কর্মীদের অগ্রাধিকার দেবো।
জানা গেছে, যেহেতু ৪ হাজারের বেশি মনোনয়ন প্রত্যাশী। তাই প্রার্থীদের আলাদা করে ডাকার সুযোগ নেই। প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার জন্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের একসঙ্গে ডাকা হবে।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী প্রথমেই যাকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে, তাঁর পক্ষে অন্যরা কাজ করবে, এরকম একটি অঙ্গীকার আদায় করবেন। মনোনয়ন না পেয়ে দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করলে, তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার ঘোষণাও দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
একটি সূত্র বলছে, একটি নির্বাচনী এলাকায় যতজন মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকবেন তাঁদের ঐক্যমতে পৌঁছানোর সুযোগ দেওয়া হবে মনোনয়ন বোর্ডের সভায়।