আল আমিন, স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহ জেলার একমাত্র বিনোদনকেন্দ্র আলাদিনস্ পার্ক ফুলবাড়ীয়া উপজেলায় অবস্থিত যা ময়মনসিংহ জেলা থেকে প্রায় ৪৫ কিঃ মিঃ এবং ফুলবাড়ীয়া সদর থেকে প্রায় ২৫ কিঃ মিঃ দূরে এনায়েতপুর ইউনিয়নে অবস্থিত। এর আয়তন ২৫ একর। কিন্তু কালের বিবর্তন আর নোংরা মানসিকতা সাথে মিলে এক কালো ধোয়ায় আচ্ছন্ন বিনোদনকেন্দ্রটির আকাশ। আলাদিন’স পার্কের ভেতরে পতিতা রেখে নারী ব্যবসা ও মাদক এবং যৌন উত্তেজন ট্যাবলেট সেবনের অভিযোগ উঠেছে। পার্কের ভেতর ৩তলা বিশিষ্ট একটি বিল্ডিংয়ে পার্ক কর্তৃপক্ষ (১৫-২০) জন পতিতা রেখে নির্বিঘ্রে ব্যবসা পরিচালনা করছে । ইতিপূর্বে ২০১৮ সালে এবং ২০২০ সালে এ বেআইনি কর্মকান্ড পরিচালনার অভিযোগে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে খদ্দেরসহ বেশকিছু পতিতাকে আটক করে । তৎপরবর্তীতে নিয়মিত অভিযান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আবারও পরিচালিত হচ্ছে এব্যবসা ।
এসব অনৈতিক কাজে ক্রমশ জড়িয়ে পড়ছে শিশু-কিশোর, যুবকরাও। নারী ব্যবসা ও মাদকে জড়িত হয়ে ছাত্র ও যুব সমাজ ধ্বংসের পথে । এলাকাবাসীর অভিযোগ, পার্ক ব্যবসার আড়ালে পতিতা ব্যবসার পাশাপাশি মাদক ও যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট বিক্রি ও সেবনেরমত ঘটনা প্রতিয়িত হচ্ছে এখানে । ৩তলায় প্রতিটি রুমের ভাড়া ঘন্টায় দুই হাজার টাকা । পতিতা ভাড়া আরো দুই হাজার টাকা । খদ্দেররা নিজেরা জোগাড় করে বহিরাগত পতিতা নিয়ে এলে রুম ভাড়া দুই হাজার টাকা । আলাদিনস্ পার্ক কর্তৃপক্ষের কাছে পনের থেকে বিশ জন পতিতা রয়েছে । এদের দিয়ে নিয়মিত ব্যবসা পরিচালনা করা হয় ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক স্থানীয়রা জানান, পার্কটির মালিক একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। প্রভাবশালী হওয়ায় এসব অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করতে কেউ সাহস পায় না।পার্ক দেখতে আসা পর্যটকদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে ভেতরের বিল্ডিংটিতে নিয়ে যাওয়া হয় । পার্ক মালিকের প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ মিলেছে। তবে বেশিরভাগক্ষেত্রেই পার্কের ম্যানেজার, দালাল মিলেই কৌশলে পরিচালনা করছে পতিতা ব্যবসা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানায়, পনের থেকে ত্রিশ বছর বয়সের মেয়েরা অশ্লীল ও অসামাজিক এই অবৈধ কর্মকান্ডে লিপ্ত। থানা পুলিশ-প্রশাসনের কিছু অসৎ কর্মকর্তা, কিছু অসাধু রাজনৈতিক ব্যক্তি ও স্থানীয় মাস্তানসহ প্রভাবশালী ও পেশিশক্তির অধিকারী লোকের ছত্রছায়ায় নির্বিঘ্রে এ ব্যবসা পরিচালিত হয়ে আসছে বলেও অনুসন্ধানে জানা গেছে। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় বর্তমানে এ ব্যবসার প্রসারও ঘটেছে অনেকটা অস্বাভাবিক হারে। এই অবৈধ কর্মকান্ডের ফলে যৌন সংক্রান্ত রোগ-ব্যাধি ছড়াচ্ছে ।
ফুলবাড়ীয়া থানার ওসি জাকের হোসেন মোল্লা জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই । এ কর্মকান্ড চলতে থাকলে অভিযান পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।