“পদ্মা গেইটলক এবং স্টুডেন্ট ভাড়া”

ময়মনসিংহ থেকে ত্রিশাল কিংবা ত্রিশাল হতে ময়মনসিংহ এর যাতায়াত ব্যাবস্থার সবার প্রথমেই আসে পদ্মা গেইটলক এর কথা, অন্যান্য ব্যাবস্থা থাকলেও ত্রিশালের মানুষের কাছে পদ্মা গেইটলক ই জনপ্রিয়তার তুজ্ঞে আছে। সকাল হতে রাত অবধি সময় সিডিউলে বাস ছাড়া আর যাত্রিদের দেয়া সার্ভিস হয়ত প্রসংশার দাবী রাখে পদ্মাগেইটলকের ড্রাইভার হেলপার এবং কন্টাকদারদের, বাহ্যিকভাবে অনিয়ম যাত্রী ভুগান্তি আর তাদের লোকাল যাত্রা হয়ত চোখে পড়েনা কারো কিন্তু কিছু মাত্রা অতিক্রম অনিয়ম যেনো স্পর্শ করে সচেতন যাত্রী মহল কে, প্রথমেই আসি স্টুডেন্ট ভাড়া প্রসজ্ঞে, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধেক ভাড়া আদায়ের নিয়ম প্রচলিত থাকলেও নানা অজুহাতে তা মানে না তারা, বাসেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ‘হাফ ভাড়া’ বা অর্ধেক ভাড়া নিয়ে হেল্পারদের নিয়মিত তর্ক-বিতর্ক হয়।

বাসের হেল্পার-কন্ডাক্টররা প্রথম চাওয়াতে অর্ধেক ভাড়া নিতে চায়না তখন স্টুডেন্ট আইডি কার্ড দেখানোর পরেও অর্ধেক ভাড়া নিতে আপত্তি তুলে তারা, ময়মনসিংহের ত্রিশাল বাসস্টেশনের কাউন্টারে টিকেট এর ব্যাবস্থা থাকলেও ত্রিশালের দরিরামপুর কাউন্টারে কোন টিকিট সিস্টেম নেই তাই ভাড়া নিয়ে গাড়িতেই এই তর্ক বিতর্কের সৃষ্টি হয়, এবং অনেক সময় ময়মনসিংহ হতে টিকেট ছাড়া যাত্রী তুলার ফলে নিয়মের বাইরে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়, মালিক সমিতির নিয়মে দুই ধরনের টিকেট থাকলেও স্টুডেন্টদের জন্য রাখা টিকেটে ১৫টাকা ভাড়া লিখা থাকলেও তারা ২০ টাকা ২৫ টাকা দাবি করে বসে।

সম্প্রতি নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমেছিল। তখন তারা নয় দফা দাবি তোলে। এর মধ্যে একটি দাবি ছিলও ‘প্রতিটি বাসে স্টুডেন্টদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।’ আন্দোলন স্থগিত হলেও এখনও গণপরিবহনগুলোতে হাফ ভাড়া নেয়া হয় না। সেই আন্দোলনের মধ্যে গত ৬ আগস্ট সরকার মন্ত্রিসভায় নতুন সড়ক পরিবহন আইনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়।

এরপর গত ৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সচিবালয়ে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বুদ্ধিজীবী ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, বর্তমান সরকারের শেষ সংসদ অধিবেশনে ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ পাস হবে, এই তথ্য মোতাবেক পদ্মা গেইটলকের এই স্টুডেন্ট ভাড়ার গোলমাল কতটা আইনি সাপোর্ট রাখে তা প্রশ্ন রাখতে চাই সচেতন মহলে, এবার আসি অন্যান্য প্রসজ্ঞে, নাম পদ্মা গেইটলক কিন্তু কাজে কতটা গেইটলক এর ভূমিকা রাখে তা যারা যাত্রী সাধারণ তারা খুব ভালোভাবেই বোধগম্য, স্টপেজ ছাড়া যথাপথা যাত্রী উঠানো নামানো হলো প্রতিদিনের ঘটনা, এছাড়াও সিট মোতাবেক যাত্রি তুলার পরেও দাঁড়িয়ে যাত্রী নিয়ে বাসের ভেতরে সৃষ্টি করা হয় এক গুমোট পরিবেশের, যা কিনা যাত্রীদের জন্য হুমকি। এখন আবার নতুন করে পদ্মা গেইটলকের সাথে যুক্ত হয়েছে শালবন সিটিং সার্ভিস, যা কিনা ময়মনসিংহ হতে জৈনা বাজার পর্যন্ত যাতায়াত করে, পদ্মা গেইটের টাইমশিফট এই চলে এই সার্ভিস কিন্তু সিটিং সার্ভিস এর নামের উপযুক্ত ব্যাবহারের পরেও সিটিং সার্ভিস এর কোন নিয়ম তাদের মানতে দেখা যায়না, এবং এই সার্ভিসে শিক্ষার্থীদের ভাড়ার কোন ছাড়া দেয়া হয়না।

যারা আমার অভিযোগের সাথে একাত্বতা পোষন করতে পারতেছেন না তাদের বলব একদিনের ভ্রমন আপনাকে এনে দিতে এই পরিবহন ব্যাবস্থার বিরুদ্ধে এক গাদা অভিযোগ। সুশিল সমাজ, সচেতন নাগরিক, রাজনৈতিক নেতা, ছাত্র রাজনীতির প্রতিনিধি, ত্রিশালের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের কাছে ত্রিশালের সকল শিক্ষার্থীর পক্ষ হতে প্রশ্ন ছুড়তে চাই, আধোও কি শিক্ষার্থীদের সাথে এই অনিয়ম বন্ধ হবে? আধোও কি নিয়মের বাধনে গেইটলক এবং সিটিং সার্ভিস এর নামের যথাযথ ব্যাবহার হবে? সর্ব মহলের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।

শামিম ইশতিয়াক
শিক্ষার্থী, আনন্দ মোহন কলেজ ময়মনসিংহ।