ত্রিশাল প্রতিনিধি::ত্রিশাল সরকারি নজরুল একাডেমির ষষ্ঠ থেকে সপ্তম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ ছাত্রীকে প্রধান শিক্ষক মেজবাহ উদ্দিন দিয়েছিলেন অনৈতিক প্রস্তাব। রাজি না হওয়ায় তাকে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি করানো যায়নি। বড় বোন ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজের মাস্টার্সের ছাত্রী দেখা করেছিলেন প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে। চেয়েছিলেন ছোট বোনের টিসি। কিন্তু প্রধান শিক্ষক টিসির জন্য দাবি করেন টাকা এবং এর আগে বখাটেদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ধর্ষণ মামলা প্রত্যাহারের চাপ দেন। নানাভাবে অপমান করেন তাকে। নিজের চোখের সামনে বড় বোনের অপমানসইতে না পেরে বাড়ি ফিরে বিষপানকরে ওই ছাত্রী। সে এখন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
এদিকে এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মেজবাহ উদ্দিনকে গত রবিবার গভীর রাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান গতকাল দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। মেজবাহউদ্দিন ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। তবে মেজবাহ উদ্দিন জানিয়েছেন, একটি কুচক্রী মহলের ইন্ধনে তাকে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় জড়ানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা।উল্লেখ্য, ওই ছাত্রীকে গত ১৪ সেপ্টেম্বর তুলে নিয়ে ধর্ষণ করেছিল বখাটেরা। সেই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা জেলহাজতে রয়েছে।
আসামিরা প্রধান শিক্ষকের কাছের লোক বলে অভিযোগ ছাত্রীর বড় বোনের।ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজিজুর রহমান জানান, গত শনিবার সকালে সরকারি নজরুল একাডেমির ষষ্ঠ থেকে সপ্তম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ ওই ছাত্রী ভর্তির জন্য প্রধান শিক্ষক মেজবাহ উদ্দিনের সঙ্গে দেখা করে। এ সময় তাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন প্রধান শিক্ষক। রাজি না হওয়ায় প্রধান শিক্ষক তাকে আর ভর্তি করেননি। গত রবিবার দুপুর ২টায় ওই ছাত্রীর বড় বোন দেখা করেন প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে। তিনি ছোট বোনকে ভর্তি না করলে টিসি প্রদানের অনুরোধ করেন। প্রধান শিক্ষক টিসির জন্য ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। এ ছাড়া নানা কথায় তাকে অপমান করেন এবং বখাটেদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ধর্ষণ মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেন। নিজের চোখের সামনে বড় বোনের এই অপমান সইতে না পেরে বাড়ি ফিরে বিকালে ওই ছাত্রী বিষ পান করে। সে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। এ ঘটনায় রাতেই ত্রিশাল থানায় মামলা দায়ের করেন কলেজছাত্রী।ত্রিশাল উপজেলার দরিরামপুর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওই কলেজছাত্রী বিউটি পার্লারে কসমেটিকস ও বিভিন্ন স্থানে ফুল বিক্রি করে পাঁচ বোন, এক ভাইসহ সাত জনের সংসার চালান। এর পাশাপাশি সরকারি আনন্দ মোহন কলেজে লেখাপড়া করেন।