ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার রামপুর ইউনিয়নে নৌকার বিজয় ঠেকাতে মরিয়া হয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও অভিযোগ করে বেড়াচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। এনিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। ক্লীন ইমেজধারী একজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যাচার জনগণের মাঝে নিন্দারও ঝড় বইছে। ভোটের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থীর এমন ঘৃণ্য কৌশলে ভোটাররা অভাক হয়েছে।
ভোটের প্রচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে চতুর্থ ধাপের ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার রামপুর ইউনিয়ন। শীতকে হার মানিয়ে পদে ভোটযুদ্ধে নামা প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে।ভোটারদের মন গলাতে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।তবে সচেতন ভোটাররা প্রার্থীদের অতীত ও বর্তমান কার্যক্রম নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণে মেতেছেন।
চেয়ারম্যান পদে এ নির্বাচনে দলের প্রার্থী বুলে ডাঃ কে চ্যালেঞ্জ করে এখানে প্রার্থী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এমরান হোসেন আকন্দ। তিনি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। রামপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ-স্বতন্ত্র একাধিক প্রার্থী মাঠে ভোটযুদ্ধে থাকলেও প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে মনোনীত হয়ে নির্বাচন করছেন ইউনিয়ন আওয়ামিলীগের সভাপতি আজিজুর রহমান (বুলে ডাঃ)। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মানুষের বিপদে-আপদে পাশে থাকায় ইউনিয়নের ভোটাররা তার ব্যক্তিগত ইমেজকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী না থাকায় এখানে আসল লড়াই হবে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে।
নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী না থাকলেও বিএনপির নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী কে সমর্থন করে নৌকার বিপক্ষে মাঠে থাকায় বিএনপির মদদে স্বতন্ত্র প্রার্থী বীরদর্পে আওয়ামী লীগের নৌকা ঠেকাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে রামপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজিজুর রহমান (বুলে ডাঃ)কে ঠেকাতে স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব মোঃ এমরান হোসেন আকন্দের পক্ষে আদাজল খেয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরাও। প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে তারা স্বতন্ত্র প্রার্থীকে জেতাতেই মরিয়া হয়ে কাজ করছেন। নৌকা ঠেকাতে নৌকার পোষ্টার-প্যানা ছিড়াসহ কর্মীদেরকেও হুমকি দিচ্ছেন, প্রার্থীর বিপক্ষে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র আর অভিযোগের জাল বুনছেন ।ইউনিয়নের রামপুর বাজার,শিমুলতলী,বাট্রাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই ধরা পড়ে। ইউনিয়নের বিভিন্ন মোড়ে-মোড়ে চায়ের স্টল, বিপণী বিতান, সবজি বাজারসহ সবখানে ভোটের আলোচনায় সরগরম হয়ে উঠেছে। নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগ কে অনেকেই নৌকা ঠেকানোর ষড়যন্ত্র ও কৌশল হিসেবেই মনে করছেন।
স্থানীয় ভোটাররা জানান, ব্যক্তিগত যোগ্যতার মাপকাঠিতে বিবেচনা করেই তারা ২৬ ডিসেম্বর চেয়ারম্যান পদে লড়াইয়ে নামা প্রার্থীদের ভোট দেবেন। তবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজিজুর রহমান বুলে ডাঃ) এর দিকেই তাদের সমর্থনের পাল্লা ভারী বলেও জানান ভোটাররা। রামপুর ও শিমুলতলী বাজারে গিয়ে সেখানে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে ভোটের আলাপ করছিলেন কয়েকজন ভোটার। নৌকার প্রার্থীকে ঠেকাতে ভেতরে ভেতরে বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে বিএনপির একটি পক্ষের নেতা-কর্মীদের গাঁটছড়া বাঁধার কথাও বলছিলেন তারা। পরে অবশ্য সাংবাদিক উপস্থিতি টের পেয়ে থেমে যান তারা।
এদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আজিজুর রহমান (বুলে ডাঃ) বলেন, তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে নৌকার বিজয় ঠেকানোর কৌশল হিসাবে তার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বীদের একজন আনারস প্রতীকের প্রার্থী মোঃ এমরান হোসেন আকন্দ মিথ্যাচার করছেন।
তিনি বলেন, প্রতিদিনই আনারস প্রতীকের প্রার্থীর লোকজন অনেক মটরসাইকেল নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় মহড়া দেয়, যা নির্বাচনী আচরণ বর্হিভুত। শুধু নির্বাচনেই নয়, স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন আমার নৌকা প্রতীকের ব্যানার,পোষ্টার ছিড়ে যে অপরাধ করেছেন তার সেই অপরাধ ঢাকতই আমার বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র করে চলেছেন,আর নির্বাচনের মাঠেও আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছেন। তিনি বলেন- আমি গত ২০০২ সাল থেকে আমি এই ইউনিয়ন আওয়ামিলীগের সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করছি। আমাদের তারাকান্দা উপজেলা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের গৃহায়ণ ও গণপূর্তপ্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এর নির্বাচনী এলাকা। উনার সহযোগিতায় ও দিকনির্দেশনায় আমি সভাপতি হিসাবে রামপুর ইউনিয়নে অনেক উন্নয়ন কর্মকান্ড সম্পন্ন করাসহ অনেক গরীব হত-দরিদ্র অসহায়দের সুযোগ সুবিধা দিতে পেরেছি। তবে দলের সভাপতি হিসাবে আমি কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করিনি। অপরদিকে আমার প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ এমরান হোসেন আকন্দ একসময় জাতীয় পার্টি করতেন,পরে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে বিএনপি করতো,এর পর ক্ষমতায় ক্ষমতায় আসলে তিনি আওয়ামীলীগে আসেন।তিনি একজন সুবিধা বাধী লোক,যখন যে দল ক্ষমতায় আসে তিনি সে দলের হয়ে কাজ করেন। তিনি ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট করবেন এটাই স্বাভাবিক।
তবে স্বতন্ত্র নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে বিভিন্ন অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করলেও স্বতন্ত্রপ্রার্থীর অভিযোগ গুলো নাকচ করে এটাকে নৌকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও নৌকা ঠেকাতে কৌশল হিসাবে এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন বলে দাবী করেছেন আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। নৌকা ঠেকাতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নাটকীয় কৌশলে স্থানীয় ভোটাররাও অবাক হয়েছেন।