দেশের উন্নয়নের ইতিহাসের বড় অংশ পুলিশ বাহিনী- ময়মনসিংহের রেঞ্জ ডিআইজি 

আরিফ রববানী,ময়মনসিংহ:: ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের আয়োজনে শহীদ পুলিশ মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত বীর পুলিশ  মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা ও সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। শুক্রবার সকালে পুলিশ লাইন্স ড্রিলসেডে এই সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আহমার উজ্জামানের সভাপিতত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি ব্যারিস্টার মোঃ হারুন অর রশিদ।  অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফাল্গুনী নন্দীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত রেঞ্জ ডিআইজি শাহ আবিদ হোসেন।

এছাড়া বক্তব্য রাখেন রেঞ্জ অফিসের পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন, ইন সার্বিস ট্রেনিং সেন্টারের এসপি ফাহিমা হোসেন, শহীদ পুলিশ পরিবারের সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের মাঝে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ, ইদ্রিছ আলী খান, হেলাল উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম, শরীফ উদ্দিন আহমেদ বক্তব্য প্রদান করেন।

স্বাগত বক্তব্যে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আহমার উজ্জামান বলেন,  সকল পিছুটান ফেলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে উদ্বুদ্ধ হয়ে জীবন বাজি রেখে মুক্তিযোদ্ধাগণ যুদ্ধ করেছিল। তাই পুলিশ বাহিনী আজ অহংকার বোধ করছে। সেই অহংকারের জায়গায় থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে পুলিশের প্রতিটি সদস্য কাজ করছে।

তিনি আরো বলেন, যারা জঙ্গি, সন্ত্রাস ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে, পুলিশ তাদেরকে দমন কাজ করছে বলেই আজ পুলিশের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করা হচ্ছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রেঞ্জ ডিআইজি ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ বলেন, স্বাধীনতা আন্দোলন হঠাৎ শুরু হয়নি। ১৯৪৭ সাল থেকেই শুরু হয়েছে। ১৯৪৭ সালের পর পাকিস্তান প্রথম আমাদের উপর ভাষা নিযে আঘাত শুরু করে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে। তবে জাতির জনকের আজীবনের স্বপ্ন স্বাধীন সোনার বাংলা তিনি সাড়ে তিন বছরে গড়ে তুলে যেতে পারেননি। পরাজিত শক্তি স্বাধীনতা বিরোধী, কুলাঙ্গারদের হাতে লাল সবুজের পতাকা তুলে দিয়েছে। সকল ষড়যন্ত্র ভেদ করে আগুন সন্ত্রাস ও হেফাজতি তান্ডব মোকাবেলায় ১৯৭১ সালের ন্যায় পুলিশ বাহিনী বুকের রক্ত দিয়ে প্রমান করেছে পুলিশ সাহসী দল। করোনাকালেও প্রমাণ হয়েছে পুলিশের সাহসিকতা।

তিনি আরো বলেন, দেশে শান্তি শৃংখলা বিরাজ করছে বলেই দেশ আজ উন্নয়নশীল দেশে পৌছেছে। যা বিশ্বের অনেকে দেশকে ছাড়িয়ে গেছে। উন্নয়নের এই ইতিহাসের বড় অংশ পুলিশ বাহিনী। যা গর্ব করার মত।

পুলিশে নিয়োগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে বাংলাদেশ পুলিশ কাজ করছে। এ লক্ষ্যে উন্নত আধুনিক মানসম্মত পুলিশ বাহিনী গড়তে স্বচ্ছতার সাথে নিয়োগ কার্যক্রম হচ্ছে।

অতিরিক্ত রেঞ্জ ডিআইজি শাহ আবিদ হোসেন বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা জীবন্ত কিংবদন্তি। মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর অসংখ্য সদস্য শহীদ হয়েছেন। তবে কোন জেলায় কতজন শহীদ হয়েছেন তার কোন তালিকা এবং সঠিক তথ্য নেই। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা বই আকারে প্রণয়নে কাজ চলছে।

শাহ আবিদ হোসেন আরো বলেন, তিনি পিরোজপুর, কুমিল্লা এবং ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার থাকাকালে শহীদ পুলিশ সদস্যদের তালিকা করেছেন। কুমিল্লায় বই আকারে প্রকাশ পেয়েছে। সভায় শহীদ পুলিশ মুক্তিযোদ্ধা ২০ পরিবার এবং ৭৪ অবসরপ্রাপ্ত বীর পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে সম্মাননা ও সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে রেঞ্জ ও জেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, শহীদ পুলিশ মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত বীর পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাগণের  পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।