জেলা পরিষদ  নির্বাচনে মনোনয়ন চাইলেন ত্রিশালের ফজলে রাব্বি

আরিফ রববানী ময়মনসিংহ: না পাওয়ার চেয়ে অতীতে কখনও না চাওয়ার বেদনাবোধ থেকে আসন্ন ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অংশগ্রহণের জন্য দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আশায় আবেদন করেছেন ত্রিশালের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ফজলে রাব্বি।

তিনি সারাটাজীবন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থেকে দলকে দিয়েছেন,তবে দলের থেকে কখনো কিছু চান নি। এবারই প্রথম দল থেকে পাওয়ার আশায় হাত বাড়িয়েছেন। জমা দিয়েছেন মনোনয়ন পত্র। তিনি ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে গত ৭সেপ্টেম্বর  বুধবার আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন।

টিকিট নিশ্চিত করতে দলটির শীর্ষ মহলে জোর তৎপরতার পাশাপাশি তিনি চষে বেড়াচ্ছেন নির্বাচনী মাঠ। নিজের দীর্ঘদিনের  রাজনৈতিক এবং সামাজিক কর্মকান্ড একই সাথে  বর্তমান সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে চেষ্টা করছেন ভোটারদের মন জয় করার। তার দৃঢ় বিশ্বাস কখনো দলের কাছে চাননি  এবারই প্রথমবার চেয়েছেন তাই বিশ্বাস করেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা কখনো কাউকে খালি হাতে ফেরায়নি,তাকেও ফিরাবেনা, তিনি দলীয় মনোনয়ন পাবেন ও বিজয়ী হবেন।

রাজনীতিতে শুরু থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে পথচলা ফজলে রাব্বি অদ্যবধি সুনামের সঙ্গে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। অনেককেই তিনি এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান নেতা বানিয়েছেন  ফজলে রাব্বি,কিন্তু তিনি কখনো নিজের জন্য ভাবেন নি। জীবনের শেষ সময়ে এসে তিনি জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়ে মনোনয়ন পত্রটি জমা দিয়েছেন। তার মনোনয়ন পত্র জমা নিয়ে অনেকেই অনেক আলোচনা করছেন।

তার  একজন ভক্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন তা হুবহু তুলে ধরা হলো-বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদদের চাওয়ার আগেই অনেক কিছু পাওয়া উচিৎ ছিল। কিন্তু তিনি বারবার উপেক্ষিত থেকেছেন। নির্মম হলেও এটা সত্য যে তার রাজনৈতিক বন্ধুরাই তার মূল্যায়ণের পথে ছিল বাঁধা। তবে এটা অনস্বীকার্য যে রাব্বী ভাই একজন জাদরেল রাজনীতিবিদ। এখনোও অনেকে অনেক সমস্যা নিয়ে তার কাছে যান। তিনি তার সাধ্যমতো সমাধান করার চেষ্টা করেন।রাব্বী ভাইয়ের ‘জেলা পরিষদ’ এর চেয়ারম্যান হওয়া বা না হওয়া নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন নই,আমি চাইবো এই প্রবীণ আওয়ামীলীগাররা যেন নিজ জেলায় যথাযথ মূল্যায়িত হোন। তাতে নতুন প্রজন্ম উৎসাহ পাবে।

শুভ কামনা রাব্বী ভাইয়ের জন্য!বেদনাবোধ ছাড়াই যেন সন্মানের সাথে বাকী জীবনটাও আওয়ামী লীগের জন্য উৎসর্গ করতে পারেন —এইটাই তার জন্য কামনা।

আরেকজন লিখেছেন-আমার জানামতে ফজলে রাব্বী দাদা একজন পরোপকারী প্রবীণ নেতা দাদার মত লোক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হলে রাজনীতি তেও এর সুফল আসবে ইনশাআল্লাহ নেত্রী সহ উপরিমহলের কাছে আবেদন এমন ত্যাগি নেতাদের সুযোগ দিয়ে বাধিত করবেন।

ছেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড.ফরিদুল আলম তার বাবাকে নিয়ে  লিখেছেন-ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলাপচারিতা  যদ্দুর সম্ভব এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করি। আসলে আমাদের যান্ত্রিক জীবনে এর খুব একটা আবেদন রয়েছে বলে মনেও করিনা। কয়েকটি কথা আজ বলতে ইচ্ছে হচ্ছে।

আমার আব্বা জনাব ফজলে রাব্বী, ময়মনসিংহে অনেকর কাছে বর্তমানে সর্বজন শ্রদ্ধেয়, বর্ষিয়ান নেতা, প্রবীণ নেতা, জাদরেল নেতা, পরোপকারী, দলের প্রয়োজনে সবচেয়ে সম্মুখ সারির মানুষ, ত্যাগী ইত্যাদি তকমা পেয়ে আসছেন, যা আমাদের আপ্লুত করে। এর বাইরে ইতিবাচক সমালোচনার চেয়ে তুলনামূলক বেশী নেতিবাচক সমালোচনা ( অবশ্য এসব যারা করেন, তারা তার কাছ থেকে বেশী সুবিধাভোগী) আমাদের ব্যথিত করে৷ তার গোটা রাজনৈতিক জীবনকে আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি। অনেকবার অনেকভাবেই রাজনৈতিক সুবিধা এবং ফায়দা নেবার সুযোগ থাকার পরও তিনি দলের স্বার্থ এবং ঐক্যের প্রয়োজন বিবেচনায় নিজেকে পাদপ্রদীপের নিচে রেখে আলো ছড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেছেন। সেই আলোয় আলোকিত হয়েছেন অনেকেই, কিন্তু আলোর মিছিলের আড়ালের মানুষটি আড়ালেই রয়ে গেছেন। তার ভেতরের কষ্টগুলোকে অনুভব করেছি আমি, তিনি কখনো কোনভাবেই তার কথা এবং কাজের মধ্যে এর প্রকাশ ঘটাননি। আমি সবসময়ই বলে আসছি, বাংলাদেশের ইতিহাস এবং রাজনীতি নিয়ে তার জ্ঞানের কাছে আমি নিতান্তই শিশু।

আমি নিজের পিতার জন্য এমন আরও অনেক কিছুই বলতে পারি, বলিছিনা। এইটুকু বললাম এই কারণে যে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত  অঞ্চলে এধরণের  অনেক মানুষ তাদের তিলতিল প্রচেষ্টা, ব্যক্তিগত সুখ বিসর্জন এবং বুকভরা ভালবাসায় আওয়ামী লীগ এবং জাতির পিতার আদর্শে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটা স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কাছে প্রশ্ন, বিগত প্রায় ১৪ বছরে দলের কাছে কখনো কোন কিছুই না চাওয়া এইসকল ব্যক্তিদের আপনারা কতটুকু মূল্যায়ন করেছেন? একদিন তারা থাকবেন না, তাদের বুকভরা কষ্ট নিয়ে নিরবে, নিভৃতে চলে যাওয়ার শোক প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে বয়ে চলব আমরা।

সারা জীবন কিছুই না চাওয়া, দলের একজন কর্মী হিসেবে কাজ করা মানুষটি তার কিছু শুভাকাঙ্ক্ষীর ক্রমাগত অনুরোধ উপেক্ষা করতে না পেরে এবার দলের কাছে প্রথমবারের মত চাইলেন। আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ময়মনসিংহ জেলার জন্য দলের পক্ষে  প্রার্থীতা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং দলের মনোনয়ন বোর্ড যা ভাল বিবেচনা করবেন সেটাই সবার জন্য শিরোধার্য। সকলের প্রার্থনা এবং শুভকামনা প্রত্যাশী। সবার জন্য শুভকামনা।

এব্যাপারে আওয়ামীলীগ নেতা ফজলে রাব্বি বলেন, ছাত্র জীবন থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছি। আমার শ্রমে বিএনপির ঘাঁটিতে আওয়ামী লীগ শক্তিশালী করেছি। আন্দোলন-সংগ্রামে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের হামলা-মামলার শিকার হয়েছি।  এরপরও কখনও আওয়ামী লীগ ছাড়িনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমা দিয়েছি। প্রত্যাশা করছি, আমার সাংগঠনিক কর্মদক্ষতা আর জনমত জরিপের ভিত্তিতে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিবেন