কামাল হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি : ময়মনসিংহ ত্রিশাল ভৌগলিক অবস্থানে জেলার গুরুত্বপূর্ণ সম্ভাব্য অর্থনৈতিক অঞ্চল হওয়া সত্ত্বেও কেবলমাত্র সরকার দলীয় এমপি না থাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ চলা দূর্নীতির ক্ষতচিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছে। ১৯৯৬ সালে যখন আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করে সেই সময় আওয়ামীলীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য হাফেজ মাওলানা রুহুল আমিন মাদানীর উন্নয়নের তিলক রেখায় প্রায় দেড় যুগ ধরে হাঁটছে ত্রিশালের মানুষ।
২০০১ সালে বি.এন.পি-জামায়াত সরকার গঠন করে ত্রিশাল থেকে নির্বাচিত হন আওয়ামীলীগের প্রার্থী আব্দুল মতিন সরকার। ইচ্ছা থাকলেও এমপি হিসাবে উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা সম্ভব হয়নি আব্দুল মতিন সরকারের। ২০০৬-২০০৮ রাজনৈতিক চরম অস্থিরতা সৃষ্টি হলে এই দু’বছর ফকর উদ্দিন (তত্ত্ববধায়ক) সরকার দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ সালে আবার আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করে।
ত্রিশালে দলীয় কোন্দল চরম সংকটাপন্ন অবস্থা দেখা দিলে আওয়ামীলীগ থেকে নির্বাচিত হন বহিরাগত (কুমিল্লার) ব্যবসায়ী রেজা আলী। বহিরাগত হওয়ায় অপরিচিত এলাকায় সেন্ট্রিগ্রেডের হাত ধরে চলতে হতো এমপি রেজা আলীকে। রেজা আলীর ৫ বছরে সেন্ট্রিগ্রেডের সদস্যরা বনে যায় বনেদি পরিবারে আর দলীয় নেতাকর্মী সহ সাধারণ মানুষের উন্নয়নের ভাগ্য চলে যায় তাদের ঘরে। রাতারাতি সেন্ট্রিগ্রেড সদস্যরা আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ।ত্রিশালের রাজনীতিতে গ্রুপিং আরো শক্তিশালী হলে শক্তিশালী আওয়ামীলীগ খন্ডে-খন্ডে বিভক্ত। গ্রুপ শাক্তিশালী করতে গ্রুপ গুলোতে চলছে অনুপ্রবেশ (জামায়াত-বি.এন.পি) যা দিন-দিন দলকে হুমকীর মুখে ধাবিত করছে।
২০১৪ সালে দৃশ্যপট পাল্টে এ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এম.এ হান্নান নির্বাচিত হন। বছর খানেক পর এম.এ হান্নান ৭১ এর মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে কারা বরণ করেন। এরপর থেকে আজ অবদি লুটপাটের বর্ণনা ভাষাতীত। টি.আর, কাবিখা, কাবিটা, ৪০ দিনের কর্মসূচী সহ সরকারের উন্নয়নমুখী কর্মকান্ডে মানুষ বা সমাজের কোন কাজে না আসলেও উপজেলা প্রসাশনের কর্তা ব্যক্তিদের জীবন যাত্রার মান বদলে দিয়েছে। এ সমস্ত লুটপাটে জামায়াত-শিবির ও বি.এন.পির এক সময়ের সশ্বস্ত্র ক্যাডাররা সাংবাদিকতার মুখোশে নিজেকে আবৃত করে প্রশাসনের সাথে আঁতাত করে সরকারের সকল উন্নয়ন প্রকল্পে লুটপাটের অংশীদারিত্ব করে। আওয়ামীলীগের শাসন আমলে সাংবাদিকতার অন্তরালে এসব জামায়াত-শিবির ও বি.এন.পির নামধারী সাংবাদিকরা বীর দাপুটে আজো রাষ্ট্র ও সরকার বিরোধী সকল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে বলে মনে করেন- প্রবীন রাজনীতিবিদরা।
এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগের ঝড় উঠলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় হতাশ আওয়ামী অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী সহ সাধারণ মানুষ। শুধু তাই নয় এই এলাকার অসহায় মানুষগুলোকে ভিজিএফ, ভিজিডি কার্ড ক্রয়ের জন্য টাকা দিয়ে চাল উত্তোলন করতে হয়েছে। ত্রিশাল সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ ফজলুল হক বলেন- ত্রিশালে ১৭ বছরের ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে আওয়ামীলীগের এ দূর্গে স্থানীয় আওয়ামীলীগের বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পরিক্ষিত জনবান্ধন কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে দলীয় মনোনয়নের মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে নির্বাচিত এমপি হিসেবে দেখতে চায় ত্রিশালবাসী। অন্যথায় এই এলাকার আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ-সংগঠন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে বলে শংকা প্রবীন রাজনীতিবিদদের। ত্রিশালের আওয়ামীলীগকে বাঁচাতে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চায় ত্রিশালবাসী।