আইনশৃংখলা উন্নয়নে  জনসাধারণকেও এগিয়ে আসতে হবে- ওসি শাহ্ কামাল

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি শাহ কামাল আকন্দ বলেন, শুধু অভিযান চালিয়ে, মামলা দিয়ে ও গ্রেপ্তার করে এলাকা থেকে  মাদক, জঙ্গি ও সন্ত্রাসীসহ বড়-বড় অপরাধগুলো নির্মূল করা সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন সর্বস্তরের জনসাধারণের সম্মিলিত উদ্যোগ। আইন শৃংখলার উন্নয়নে পুলিশের পাশাপাশি  এলাকার জনসাধারণকে এগিয়ে আসারো আহবান তিনি।

শনিবার (২৩জুলাই)রাত ১০.০০ টায় চরপাড়া নয়াপাড়া এলাকায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এলাকার সাবেক এবং বর্তমান কাউন্সিলর এবং বিশিষ্ট ব‍্যক্তিবর্গের সাথে এক মত বিনিময় সভায় ওসি কামাল এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, জনতার সহযোগিতা ছাড়া উন্নয়নের পথের এ তিনটি বাধা দূর করা সম্ভব নয়। ওসি শাহ কামাল আকন্দ বলেন, ‘উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পৃথিবীর এক অবাক বিস্ময়। এ উন্নয়নের ম্যাজিশিয়ান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, কিছু কিছু অমানুষ এ উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা আমাদের মাদক দিয়ে, সন্ত্রাস দিয়ে, জঙ্গি দিয়ে ফাঁসিয়ে দিতে চাইছে। তারা চায় না এ দেশের উন্নয়ন হোক। তিনি  বলেন, ‘জনগণের সহায়তায় পুলিশ ইতিমধ্যে জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে, বর্তমানে আমাদের টার্গেট মাদক নির্মূল করা। মাদকের কারণে খুন,রাহাজানী বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই আমরা মাদক,খুন,হত্যাসহ সকল প্রকার অপরাধের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছি। এ যুদ্ধে আমরা জয়ী হতে চাই। এ জন্য সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সাহায্য চাই। কেননা জনগণের সম্পৃক্ততা ছাড়া পৃথিবীতে কোনো দেশের পুলিশ সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা যে সব তথ্য পাই তার ৯৯ ভাগ তথ্য দেয় জনগণ। এ জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা কাজ করতে চাই। ওসি বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন টেকসই শান্তি। আর টেকসই শান্তি আসে টেকসই নিরাপত্তা থেকে। পুলিশ জনগণকে টেকসই নিরাপত্তা দিতে কাজ করে যাচ্ছে। ‘জনগণের সম্পৃক্ততা ছাড়া সমাজ থেকে মাদক, খুন,জঙ্গি সন্ত্রাস নির্মূল করা সম্ভব নয়। পাশের ঘরে আগুন লাগলে আমাদেরও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। আমরা যদি একজন ব্যক্তিকে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থেকে সরিয়ে আনতে পারি, তবে সেটা হবে সত্যিকারের দেশপ্রেমের কাজ। এসময় তিনি জানান- কোতুয়ালী মডেল থানা এলাকার প্রতিটি পুলিশ ফাঁড়ি, বিট পুলিশিং কার্যালয় হবে মানুষের সেবার কেন্দ্র । একজন মানুষ নিরুপায় হয়েই থানায় যায়।  এসব সেবা কার্যালয়ে এসে হাসিমুখে মানুষ যেন কাঙ্ক্ষিত সেবা পায় তিনি সেই প্রতিশ্রুতিও ব্যক্ত করেন। এসময় চড়পাড়া এলাকার সাবেক ও বর্তমান কাউন্সিলরসহ আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, পুলিশ নিয়ে অনেকের বিরূপ ধারণা থাকলেও ময়মনসিংহের কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ,একজন ব্যতিক্রমধর্মী পুলিশ অফিসার। প্রতিনিয়ত তিনি সহকর্মী ও সাধারণ জনগণের আদর্শগত ভিন্নতা মেনে নিয়ে পরস্পরের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। পুলিশ জনগণের বন্ধু । তিনি এই বাক্যটির উৎকৃষ্ট নিদর্শন। তিনি অন্যতম একজন আদর্শ পুলিশ অফিসার যিনি কোতোয়ালি মডেল থানায় যোগদানের পর  থেকে আধুনিকতা, প্রযুক্তি ও সততা দিয়ে অপরাধ দমন করার চেষ্টা করেন। পুলিশ জনতার, জনতা পুলিশের এই শ্লোগানকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন। কোতোয়ালীবাসীর সকল শ্রেণির মানুষের চোখে একজন সৎ, আদর্শবান, ন্যায়নিষ্ঠ ও গরিবের বন্ধুসুলভ পুলিশ অফিসার। অধিকাংশ মানুষই তাকে গরিবের বন্ধু হিসাবে জানেন। তিনি তাঁর সততা, ন্যায়নিষ্ঠা ও তার বিচক্ষণ বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তার দায়িত্বরত এলাকা মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখল বাজদের হাত থেকে মুক্ত করেছেন। তার চোখে ধনী-গরিব, রিক্সাচালক হতে সব শ্রেণিপেশার মানুষ সমান। তিনি শুধু একজন পুলিশ কর্মকর্তাই নন পাশাপাশি অনেক সামাজিক কর্মকান্ডে তিনি অবদান রেখেছেন। পুলিশে যোগদানের পর থেকেই তিনি একে একে অপরাধ দমনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন । তার সুনিপুণ দক্ষতার মাধ্যমে সুষ্ঠ তদন্তের ফলে দোষীরা খুব দ্রুতই আইনের আওতায় চলে এসেছে এবং তাদের শাস্তিও হয়েছে।  এলাকার মানুষ জন বলেন- তিনি একজন সৎ ও অন্যায়ের কাছে আপোষহীন পুলিশ অফিসার হিসাবে পরিচিত। চড়পাড়া এলাকাবাসী বলেন, তিনি আমাদের বন্ধু তার অক্লান্ত পরিশ্রমে আজ আমাদের এলাকা মাদক, চাদাঁবাজ, দখলবাজ, ইভটিজার, জঙ্গি, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী মুক্ত। আ,লীগের এক নেতা  বলেন, তাঁর মতো একজন সৎ, ন্যায়নিষ্ঠা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে বজ্রকন্ঠী আওয়াজ তোলা পুলিশ অফিসার পেয়ে আমরা সত্যিই ধন্য।

ওসি কামাল এসময় সকলকে আশ্বস্ত করে বলেন- সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আবির হত্যাকারীদের দ্রুতই বিচারের আওতায় আনা হবে। যাতে করে এ ধরনের ঘটনার পূনরাবৃত্তি ময়মনসিংহে আর না ঘটে।

তিনি বলেন-ময়মনসিংহ একটি অসাম্প্রদায়িক ও শান্তিপ্রিয় জেলা। এই জেলায় কেউ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট ও বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা  করলে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে। তিনি বলেন-কেউ যদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ অন্যান্য মাধ্যমে ধর্ম  অবমাননা, কটুক্তি, মন্তব্য করে ও সমাজের শান্তি বিনষ্ট হয় এমন কোন কাজ করে তাহলে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না। আবেগের বশবতী হয়ে অথবা উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে  ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানলে ও শান্তি বিনষ্ট করলে তার জন্য দেশে প্রচলিত আইন আছে। আইন অবমাননাকারীকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিবেন।  আইন নিজের হাতে তুলে না নিতে তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান।