অসময়ে থামিয়ে দেয়ার কষ্ট মেনে নিতে পারছেনা মাসুমের পরিবার

জোবায়ের হোসেনঃঃ  ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার পৌর শহরের নামাপাড়া গ্রামের মাসুমদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। মাসুমকে হারিয়ে পুরো পরিবারের কান্না যেন কিছুতেই থামছে না। শনিবার রাতে মাসুমের নিথর দেহ বাড়িতে এসে পৌঁছালে তার আত্মীয় স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠে পুরো গ্রাম।

টাঙ্গাইলে শহরের সরকারি মাওলানা মোহাম্মদ আলী কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের উদ্ভিদ বিভাগের শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম মাসুম ত্রিশালে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃত্ত থাকায় সহকর্মীদের কাছে প্রিয় মানুষ হিসেবে পরিচিতি ছিল তার। রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিজ বাড়ি পৌর শহরের প্রেসিডেন্ট বাড়িতে জানাজা পর পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয় মাসুমকে।

জানাজার আগে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও মাসুমের চাচা আনোয়ার হোসেন অভিযোগ করেন মাসুমকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। অপরদিকে রোববার দুপুরে ত্রিশাল প্রেস ক্লাবে নিহত মাসুমের হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন নিহতের পরিবার।

এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহতের বড় ভাই ও মামলার বাদী আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি অভিযোগ করেন, রাত ১১টার দিকে টাঙ্গাইল থানা থেকে ফোন করে জানানো হয় ছোট ভাই মাসুম আত্মহত্যা করেছে। আমরা দ্রুত সেখানে গিয়ে দেখি মরদেহ মর্গে রয়েছে। তার দু’হাতে ও গলায় স্কচটেপ পেঁচানো, ঘরের ভেতরে তার চলমান পরীক্ষার প্রবেশপত্র এবং তার ব্যবহৃত এন্ড্রয়েড ফোনটি পাওয়া যায়নি।

আত্মহত্যা নয় মাসুমকে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে মামলার বাদী আরো বলেন, চলতি মাসের ১৭ তারিখ  রাত সাড়ে ৯টার দিকে ০১৬১৬-৯২৪৪৩০ নম্বর হতে মাসুমের ০১৮৩০-৩৫১৪৪৬ নম্বরে মাহফুজ নামের একজন ফোন দিয়ে মাসুমকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ভয়ভীতি ও হুমকী প্রদর্শন করে। গালিগালাজ ও হুমকি ও নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি নিয়ে ওই দিনই টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি জিডি করে মাসুম। এ জিডিই প্রমাণ করে মাসুমকে হত্যা হয়েছে।

জিডি করার ১০দিন পর টাঙ্গাইল শহরের থানাপাড়া শান্তিকুঞ্জ এলাকার একটি বহুতল ভবন থেকে মাসুমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত মাসুম ত্রিশাল পৌর শহরের ৪নং ওয়ার্ডের মো. তাজুল ইসলামের দ্বিতীয় সন্তান। মো.তাজুল ইসলামের অভিযোগ মাসুম আত্মহত্যা করার ছেলে নয়, তাকে হত্যা করা হয়েছে, তাকে মোবাইল ফোনে হুমকিও দেয়া হয়েছে। যার কারণে সে থানায় জিডি করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন, নিহতের দাদা পৌর সভার সাবেক প্যানেল মেয়র অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা সরকার, ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রেজাউল করীম সেলিম ও স্থানীয় সংবাদকর্মীরা।