প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ব্যবহার করে সামাজিক মাধ্যমে অনেকে একটি ‘তথ্য’ প্রচার করছেন।
তাতে বলা হচ্ছে, “শিশু ধর্ষণের অপরাধে সরাসরি মৃত্যুদন্ডের বিধানে সই করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা।”
bdfactcheck এর পক্ষ থেকে খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। অর্থাৎ, প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের কোনো কথিত বিধানে সই করেননি। (লক্ষ্যণীয়, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে দেশের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমে তা ‘ব্রেকিং নিউজ’ হিসেবেই আপনারা দেখতে পেতেন।)
বলাই বাহুল্য, কোনো অপরাধে মৃত্যুদণ্ড বা এ ধরনের কোনো শাস্তির বিধান প্রণীত হওয়ার প্রক্রিয়া হচ্ছে, আইন প্রণয়ন বা বিদ্যমান আইন সংশোধন। এক্ষেত্রে মন্ত্রিসভা, সংসদ এবং রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের মাধ্যমে দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় কাজটি সম্পন্ন করতে হয়। কোনো শাস্তির বিধানকে আইন হিসেবে প্রণয়নে প্রধানমন্ত্রীর একক এখতিয়ার নেই।
এ সম্পর্কে আরও জানতে দেখুন বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চম ভাগের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদের “আইন প্রনয়ন ও অর্থসংক্রান্ত পদ্ধতি” সংক্রান্ত অধ্যায়।
লিংক: http://bdlaws.minlaw.gov.bd/bangla_sections_detail.php…
প্রিয় পাঠক, সাধারণ সতর্কতা হিসেবে একটা বিষয়ে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। যখন অতি গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য সামাজিক মাধ্যমে বা কোনো অখ্যাত অনলাইন পোর্টালে দেখবেন তখন প্রথম যে কাজটি করবেন তাহলো, মূলধারার কোনো সংবাদমাধ্যমে খবরটি এসেছে কিনা চেক করে নেবেন।
কারণ, অতি গুরুত্বপূর্ণ কোনো সংবাদ (যেমন মৃত্যুদণ্ডের বিধানে প্রধানমন্ত্রীর সই করার আলোচ্য সংবাদটি) মূলধারার টিভি/পত্রিকাগুলো কখনো মিস করতে চায় না। যদি দেখেন, সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো তথ্যটি আপনার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঠেকছে, অথচ মূলধারার সংবাদমাধ্যমে এ সংক্রান্ত কোনো খবর নেই- তাহলে ধরে নিতে পারেন ছড়ানো তথ্যটিতে গরমিল আছে। ফলে সেটি বিশ্বাস করতে বা শেয়ার করে অন্যকে জানানোর ক্ষেত্রে সচেতন থাকবেন।
তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখার বিষয় হল, খুবই সেন্সিটিভ রাজনৈতিক তথ্য হলে (বিশেষ করে ক্ষমতাসীনদের বিপক্ষে যায় এমন তথ্য), অনেক সময় তা সঠিক হওয়া সত্ত্বেও মূলধারার সংবাদমাধ্যম নীরব থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে বিকল্প কোনো মাধ্যম থেকে দলিল-প্রমাণ-রেফারেন্সসহ তথ্যটি পেলে তা ওপর নির্ভর করা যেতে পারে।
কিন্তু খুবই সেন্সিটিভ রাজনৈতিক তথ্য নয়, কিন্তু ঘটনা বা খবর হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ- এমন তথ্য আপনি খুবই সহজেই মূলধারার গণমাধ্যমে পেয়ে যাবেন। ফলে এ ধরনের তথ্যের জন্য শুধু সামাজিক মাধ্যমে কারো পোস্টের ওপর নির্ভর করা অসেচতনতার লক্ষণ।